২০ কিমিতে শতাধিক গর্ত

পিচ ও খোয়া উঠে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার নবদীগঞ্জ এলাকায়।  প্রথম আলো
পিচ ও খোয়া উঠে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার নবদীগঞ্জ এলাকায়। প্রথম আলো

রংপুর–কুড়িগ্রাম মহাসড়কের ২০ কিলোমিটার এলাকায় শতাধিক খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এই সড়কে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহনকে হেলেদুলে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চালক ও যাত্রীরা।

রংপুর–কুড়িগ্রাম মহাসড়কের দূরত্ব ৪২ কিলোমিটার। এর রংপুর নগরের পার্কের মোড় থেকে কাউনিয়া উপজেলা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার। সর্বশেষ ২০০৮ সালে পুরো মহাসড়কে কার্পেটিং করা হয়। আর ২০১৩–১৪ অর্থবছরে কাউনিয়া পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারের খানাখন্দ সংস্কার করা হয়। এই সড়ক নির্মাণের সময় এর নিচে পাথর দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।

যানবাহনের চালক, যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক বছরের বেশি সময় ধরে সড়কটির কার্পেটিং উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে অনেক গর্তের। দিনের বেলায়ই গাড়ি চলাচল কষ্টকর। রাতে তা আরও কঠিন হয়ে ওঠে। গাড়ির গতি খুব কম থাকে। বিভিন্ন সময় পণ্যবাহী ট্রাক উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

কুড়িগ্রামগামী যাত্রীবাহী বাসের চালক ওমর আলী বলেন, ‘কী কষ্ট করে যে এই রাস্তায় আমরা গাড়ি চালাই, তা কেমন করে বোঝাই। দিনের বেলা দেখে দেখে গাড়ি চালানো গেলেও রাতের বেলা খুব কষ্ট হয়। গাড়ির গতি একটু বেশি থাকলে উল্টে যাওয়ারও ভয় থাকে।’

গত শনিবার সকালে মহাসড়কটিতে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। ইট–খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত। কোথাও এক পাশের কার্পেটিং উঠে সড়ক সরু হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় এই সড়ক দিয়ে বাস, ট্রাকসহ অন্য যানবাহন হেলেদুলে চলাচল করছে।

নগরের কলাতলি বাজার এলাকায় মহাসড়কে ছোট-বড় অনেক গর্ত। এই পথ দিয়ে চলাচলকারী পণ্যবাহী ট্রাকের চালক জব্বার মিয়া বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে প্রায় দিন পাথর পরিবহন করে থাকি। রাস্তাটি এতই খারাপ যে হেলেদুলে চলাচল করতে গিয়ে কখন যে ট্রাক উল্টে যায়, সেই ভয়ে থাকতে হয়।’

কাউনিয়ার নবদিগঞ্জ বাজার এলাকায় এবড়োখেবড়ো রাস্তায় বাস–ট্রাকগুলো একবার সড়কের এপাশ হচ্ছে, আবার পরক্ষণেই অন্য পাশে হচ্ছে। এতে যাত্রীরাও দুলছিলেন।

নবদিগঞ্জ বাজার এলাকায় বাসের একজন যাত্রী বলেন, ‘হেলেদুলে চলার কারণে বাসের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা সিটে বসা যাত্রীদের শরীরের ওপর পড়ে যান। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। গাড়ির সিটেও ঠিকমতো বসে থাকা যায় না। এভাবে বাসের ভেতর বসে থাকতেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।’

জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের রংপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম শফিক উজ্জামান বলেন, এই মহাসড়কের নিচে পাথর না থাকায় এভাবে শতাধিক স্থানে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। অনেক স্থান দেবে গিয়ে ভেঙে গেছে। ছোট-বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে পার্কের মোড় থেকে নবদিগঞ্জ পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সড়ক সংস্কারে সাড়ে ১৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে দরপত্র হয়েছে। খুব শিগগির কাজ শুরু করা হবে। বাকি সড়কের সংস্কারের জন্য পর্যায়ক্রমে দরপত্র আহ্বান করা হবে।