৪৬ হাজার বোতল মদ নিয়ে বিপাকে শুল্ক বিভাগ

মদের বোতলের ওপর রোলার চালিয়ে ধ্বংসের আয়োজন করেছিল চট্টগ্রাম শুল্ক বিভাগ। তবে দীর্ঘদিন ধরে মদের বোতল ধ্বংসের প্রচলিত এই পদ্ধতি পরিবেশসম্মত নয় বলে আপত্তি জানায় পরিবেশ অধিদপ্তর।
বরং বোতল খুলে তরল মদ বর্জ্য পরিশোধনের যন্ত্রের (ইটিপি) মাধ্যমে পরিশোধন করার জন্য মতামত দিয়েছে অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে এমন মতামত পেয়ে বিপাকে পড়েছে শুল্ক বিভাগ। সেখানে ভবনের নিচতলায় অবস্থিত কাস্টোডিয়ান শাখায় ধ্বংসযোগ্য প্রায় ৪৬ হাজার ৭৫৩ বোতল মদ ও বিয়ার পড়ে আছে। বোতল ফেটে মদের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে কক্ষের আশপাশে। মদ দাহ্য হওয়ায় অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কায় আছেন এ কক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং তারা বিভিন্ন সময়ে এসব মদ জব্দ করে। নিয়মানুযায়ী, পর্যটন করপোরেশনের কাছে জব্দ মদ বিক্রি করা হয়। শুল্ক কর্তৃপক্ষ জব্দ হওয়া বিদেশি মদের প্রতিটি বোতল নির্ধারিত ২০০ টাকায় বিক্রি করে এই সংস্থার কাছে।
কিন্তু পর্যটন করপোরেশন ব্ল্যাক লেবেল, রেড লেবেলসহ বিদেশি ব্র্যান্ডের মদের বোতল সংগ্রহে আগ্রহ থাকলেও মিয়ানমারের নিম্নমানের বোতল ও কৌটাজাত মদ ও বিয়ার ক্রয় করার আগ্রহ দেখায় না। এ কারণে অবিক্রীত এসব মদের বোতল ধ্বংসযোগ্য পণ্যের তালিকায় রাখা হয়।
কর্মকর্তারা জানান, ধ্বংসযোগ্য মদের বোতলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এগুলো ধ্বংস করতে গত ২৮ জানুয়ারি কর্মসূচি হাতে নেয় শুল্ক বিভাগ। এ জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়।
নিয়মানুযায়ী কাস্টম হাউস, বন্দর, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ধ্বংস করতে হয়। বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরকে অবহিত করলে তারা দীর্ঘদিনের প্রচলিত পদ্ধতির পরিবর্তে পরিবেশসম্মত উপায়ে ধ্বংস করার নির্দেশনা দেয়।
তবে শুল্ক বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাছে ইটিপি নেই। আবার লোকবলের অভাবে প্রতিটি বোতল খুলে ধ্বংস করা খুবই দুরূহ। এ কারণে গর্ত করে মাটিতে পুঁতে ফেলে মদ ধ্বংস করার জন্য মতামত চেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শহীদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, পরিবেশসম্মত বিকল্প উপায়ে মদ ধ্বংসকরণের জন্য আলোচনার মাধ্যমে মতামত দেওয়া হবে।