'ইন্টারনেটের আলো ছড়িয়ে দিতে চাই'

.
.

আই-জেন ২০১৫-এর জাতীয় পর্বের সংগীত রাউন্ড তখন শেষ। সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের পাঁচ শিক্ষার্থী ধরেই নিয়েছিল, এই পর্বেই তাঁদের বিদায় নিশ্চিত! অর্হিত বিশ্বাস, ওয়াসিফ জালাল, শামস্ উদ্দীন, মো. ইশরাক আহসান ও দলনেতা সাদমান আমিন—প্রত্যেকেই বাসায় ফোন করে মা-বাবাকে বলেছিল, ‘সকালে ক্যাম্পে এসে আমাদের নিয়ে যেয়ো।’ ব্যাগ গুছিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিল তারা। পাঁচ ‘জিনিয়াস’ তখন কল্পনাও করেনি, চ্যাম্পিয়নের ট্রফি হাতে না নিয়ে তাঁদের ফেরা হবে না!
২২ মার্চ প্রথম আলো কার্যালয়ে আই-জেন ২০১৫-এর চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্যদের সঙ্গে আড্ডার সময় তাদের মুখে স্বস্তির হাসি। একের পর এক চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে অবশেষে ওরা পেয়েছে বিজয়! দলনেতা রুম্মান কথাও বলে ‘অভিজ্ঞ কাপ্তানের’ মতো! বলছিল, ‘লক্ষ্য ছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। দলের সদস্যদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া ছিল। হেরে গেলে বাদ পড়তে হবে—শুরু থেকেই এ কথাটা আমাদের সবার মাথায় ছিল। সম্ভবত এটাই লক্ষ্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে কাজে দিয়েছে।’
যারা গ্র্যান্ড ফিনালেতে পৌঁছেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি, তাদের ব্যাপারে মো. ইশরাক আহসানের বক্তব্য, ‘সবারই সমান যোগ্যতা ছিল। আমাদের ভাগ্য ভালো বলেই আমরা জয় পেয়েছি।’
‘জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে একটু ভয় পেয়েছিলাম। এর আগে এত বড় মঞ্চে কখনো আসিনি। প্রতিদিনই একটা একটা করে স্কুল বাদ পড়ছিল। ভাবছিলাম, না জানি কবে আমাদের সময় এসে যায়।’ আর রোমাঞ্চকর কোনো স্মৃতি? সবার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে দলনেতা রুম্মান বলে, ‘অ্যামাজিং রাউন্ড ও মুভি মেকিং।’ গুগল ম্যাপের সাহায্যে সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটার মধ্যে ঢাকা শহরের ৪০টি জায়গার মধ্যে কারা বেশিসংখ্যক জায়গায় পৌঁছাতে পারে, সেটা ছিল অ্যামাজিং রাউন্ডে। আর ‘মুভি মেকিং’ ধাপে জীবনের প্রথমবারের নিজেদের লেখা চিত্রনাট্য, অভিনয়ে নির্মাণ করেছিল দুই মিনিটের শর্ট ফিল্ম ‘অবয়ব’।
জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে ইন্টারনেটকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, এটিই আই-জেনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। চ্যাম্পিয়নের মুকুট মাথায় পরে সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের পাঁচ জিনিয়াসের দায়িত্ববোধও বেড়ে গেছে। স্কুলের বন্ধু, শিক্ষক—সবাই খুশি তাদের অর্জনে। সব শেষে বলছিল, ‘সারা দেশে ইন্টারনেটের আলো ছড়িয়ে দিতে চাই।