'জ্যোতিসংহিতা'য় মুগ্ধ সুনামগঞ্জের দর্শক

ভাটি অঞ্চল তথা সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার মুক্তিযুদ্ধ ও এক তরুণ যোদ্ধার বীরত্বগাথা নিয়ে নির্মিত নাটক জ্যোতিসংহিতা মঞ্চস্থ হয়েছে সুনামগঞ্জে। গত শনিবার রাতে জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাসন রাজা মিলনায়তনে হলভর্তি দর্শক নাটকটি দেখে মুগ্ধ হন।
থিয়েটার সুনামগঞ্জের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নাটকটি মঞ্চায়ন হয়। শনিবার জ্যোতিসংহিতা নাটকটি হবিগঞ্জ জেলার জীবন সংকেত নাট্যগোষ্ঠীর ৩৫তম মঞ্চায়ন ছিল।
মুক্তিযুদ্ধে সুনামগঞ্জ অঞ্চলে যুদ্ধে অংশ নেওয়া গেরিলা যোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাসের জীবনসংগ্রাম নিয়ে নির্মিত হয়েছে নাটকটি। নাটকে উঠে এসেছে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ-বঞ্চনা আর বৈষম্যের কাহিনি। শহীদ জগৎজ্যোতি দাসের জন্ম হবিগঞ্জ জেলায় হলেও তিনি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধে সুনামগঞ্জ অঞ্চলে যুদ্ধে অংশ নেন। অসমসাহসী এই যোদ্ধা রণাঙ্গনে তরুণ যোদ্ধাদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন দাসপার্টি। হাওর এলাকায় যুদ্ধ করতে করতেই তিনি দেশমাতৃকার জন্য জীবন উৎসর্গ করেন। নাটকের শেষাংশে তরুণ প্রজন্মের প্রতি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার আহ্বান যেমন ছিল, তেমনি ঝরে পড়ে বীরযোদ্ধা জগৎজ্যোতির বীরত্বের খেতাব না পাওয়ায় আক্ষেপ।
নাটক মঞ্চায়নের আগে থিয়েটার সুনামগঞ্জের বর্ষপূর্তির আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী। মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমদ, হাসন রাজা ট্রাস্টের সভাপতি দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মো. শামছুল আবেদীন, জীবন সংকেত নাট্যগোষ্ঠীর সভাপতি অনিরুদ্ধ কুমার ধর, জ্যোতিসংহিতা নাটকের রচয়িতা রুমা মোদক। অনুষ্ঠানে সংগীতশিল্পী আশিককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। জীবন সংকেত নাট্যগোষ্ঠীকে সম্মাননা দেওয়া হয় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাঠাগারের পক্ষ থেকে। নাটক মঞ্চায়নের আগে থিয়েটার সুনামগঞ্জের সদস্যরা কোরিওগ্রাফি এবং শিল্পী আশিক সংগীত পরিবেশন করেন।