'নির্বাচনে জনগণকে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না'

রাজধানীর হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও ঢাকা-১২ আসনে কোদাল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জোনায়েদ সাকি। ২৬ ডিসেম্বর, বুধবার। ছবি: প্রথম আলো
রাজধানীর হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও ঢাকা-১২ আসনে কোদাল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জোনায়েদ সাকি। ২৬ ডিসেম্বর, বুধবার। ছবি: প্রথম আলো

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও ঢাকা-১২ আসনে কোদাল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘নির্বাচনে দলগুলোর অংশগ্রহণ হয়েছে, কিন্তু জনগণকে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না।’ আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণসংহতির ছাত্রসংগঠন ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ও সংসদ নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণের দুটো মাত্রা। একটি দলগুলোর অংশগ্রহণ, অন্যটি জনগণের অংশগ্রহণ। দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে যদি জনগণকে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়া হয়, তাহলে বাস্তবে দলগুলোর অংশগ্রহণ একটি লোকদেখানো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া কিছু নয়।’

জোনায়েদ সাকি অভিযোগ করে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণা করতে গিয়ে বিরোধীরা মারধর ও বাধার শিকার হচ্ছেন। যারা মারধর করছে, পুলিশ তাদের ন্যূনতম ঠেকাচ্ছে না এবং মার-খাওয়াদের বাঁচানোর যে দায়িত্বটা, সেটা পর্যন্তও করছে না। নির্বাচন থেকে বিরোধীদের দূরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, একতরফা ও দখলদারিত্বমূলক একটি নির্বাচনের দিকে দেশ যাচ্ছে। কিন্তু যতই দূরে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হোক, আমরা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক সংগ্রাম চালিয়ে যাব।’

নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার পুলিশের রয়েছে। কিন্তু তারা সেটা করছেন না। না করার কারণে আমরা তাদের অভিযুক্ত করছি, তারা পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন।’

প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের এই নেতা বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মনে রাখা দরকার—তারা কেবল কিছু ব্যক্তি নন, তারা একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করেন। ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হলে তার সঙ্গে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে। এতে সে রাষ্ট্র ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখার ক্ষমতা হারাবে। এটি উপলব্ধি করা উচিত। কিন্তু প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেই উপলব্ধিবোধ দেখা যাচ্ছে না।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণসংহতি আন্দোলনের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার বিষয়ে জোনায়েদ সাকি জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ঘটনাটির জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তবে হামলার ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশকেও এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ৷