পাহাড়িদের নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র চলছে। এমনকি আদিবাসী শব্দটি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাঙামাটিতে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসের সমাবেশে বক্তারা এসব অভিযোগ করেন। তাঁরা পাহাড়িদের আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান।
গতকাল বুধবার রাঙামাটি, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়েছে। প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।
সকাল সাড়ে নয়টায় রাঙামাটি শহরের কাঁঠালতলী এলাকার পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলআদিবাসী ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা।
সমাবেশে উদ্বোধক ছিলেন মানবাধিকার কমিশনের সদস্য বাঞ্ছিতা চাকমা। বক্তব্য দেন রাঙামাটি নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান, এম এন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ইন্টুমনি চাকমা প্রমুখ।
রাঙামাটি নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, আদিবাসী শব্দটি বিলুপ্তির জন্য দেওয়া হচ্ছে নানা বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য। পাহাড়িদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য কিছু দিন পর পর উপজাতি ও ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠী বলে যাচ্ছে।
গতকাল সকালে চট্টগ্রাম নগরের মুসলিম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম চট্টগ্রাম অঞ্চল। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক সুনীতি ভূষণ কানুনগো। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কবি ও প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন।
বান্দরবানেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হয়। কর্মসূচিতে বক্তারা সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি জানান। জেলা শহরের পাশাপাশি উপজেলায়ও নানা কর্মসূচি ছিল। এর মধ্যে ছিল শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা শহরের পুরোনো রাজবাড়ী মাঠ থেকে ১১টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে শোভাযাত্রা বের করা হয়। এরপর একই স্থানে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ ছাড়া রোয়াংছড়ি, লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, রুমা ও থানচিতে দিবসটি পালিত হয়েছে।
খাগড়াছড়িতে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল ও বাংলাদেশ ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম যৌথ উদ্যোগে দিবসটি পালন করে। এতে প্রধান অতিথি ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা। খাগড়াছড়ির রাজ্যমনিপাড়া থেকে শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের শাপলা চত্বর ঘুরে য়ংড বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে এসে সংক্ষিপ্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কক্সবাজারে দিবসটি উপলক্ষে শহীদ মিনারে মানববন্ধন, সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। পরে সেখান থেকে শোভাযাত্রা বের করে বৌদ্ধমন্দিরে গিয়ে শেষ হয়।
চট্টগ্রামের পটিয়ায় পাহাড়িদের মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়।