'ভাগ্য আর বদলাল না'

নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া কয়েকজন। এএফপির ফাইল ছবি।
নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া কয়েকজন। এএফপির ফাইল ছবি।

‘ভাগ্য বদলের আশায় বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলাম। মাঝখানে দালালকে ধরে বহুত টাকাও খরচ করেছি। বছরের পর বছর পরিবারের কাছ থেকে দূরে থেকেছি। কিন্তু ভাগ্য আর বদলাল না। শেষের লড়াইটা ছিল বেঁচে থাকার। সাগরে ভেসে ছিলাম তিন দিন। জীবন নিয়ে ফিরতে পেরেছি, কিন্তু নিঃস্ব হয়ে ফিরেছি।’

কথাগুলো বলছিলেন আমির হোসেন। ভৈরবের বাসিন্দা আমির দুই বছর আগে স্থানীয় জাফর দালাল নামের এক ব্যক্তিকে সাড়ে চার লাখ টাকা দিয়ে পাড়ি জমান লিবিয়ায়। সেখানে গিয়ে আরেকটু ভাগ্য বদলের আশায় জাফর দালালকে ধরেই যেতে চান ইতালিতে। খরচ করেন আরও ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। সেখান থেকে ছাড়া পেতে খরচ করেন আরও দুই লাখ টাকা। সর্বশেষ ১০ মে লিবিয়া থেকে ইতালিতে যাওয়ার পথে নৌকাডুবির শিকার হন তিনি।

লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে আমির হোসেনসহ ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির শিকার ১৫ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ছয়টায় টার্কিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমানে করে তাঁদের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে আসেন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) প্রতিনিধিরা।

১০ মে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে ৫৭ জন আরোহীসহ একটি নৌকা ডুবে যায়। নৌকা থেকে ১৫ বাংলাদেশিকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় জেলে ও নৌবাহিনী।

আজ সকালে বিমানবন্দরে নামার পরই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশের বিশেষ বাহিনী। সেখানে উপস্থিত বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টের ডেটা অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নাজমুল হক জানান, ফেরত আসা ব্যক্তিরা মানব পাচারের শিকার। এ জন্য তাঁদের পাচারকারী চক্রের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে এসব তথ্য দেন আমির হোসেন।