এসি কেনার আগে জানতে হবে ঘরের মাপ

যত বড় শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি), তত ঠান্ডা হবে ঘর—হিসাবটা এত সোজা নয়। যদি মনে করে থাকেন, ছোট ঘরে হিমশীতল পরিবেশ পেতে বড় এসি কিনতে হবে, তবে ভুল ভাবছেন। ঘরের মাপ অনুযায়ী কিনতে হবে এসি। বড়ও না, আবার ছোটও না, এমন আদর্শ এসিই দিতে পারে পরিমিত ঠান্ডা-শীতল অনুভূতি।

কোন ঘরে কত টনের এসি প্রয়োজন, তার প্রচলিত কিছু ধারণা আছে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বড় এসি কিনলে ঘর ঠান্ডা হবে ঠিক, তবে বিদ্যুৎ খরচ হবে বেশি। আবার ঘরের আয়তনের তুলনায় এসির ধারণক্ষমতা কম হলে এসির ওপর পড়বে চাপ। যন্ত্রটি দ্রুত উপযোগিতা হারাবে। আবার ঘর ঠান্ডা করার ক্ষেত্রে সব ব্র্যান্ডের এসির সক্ষমতা আবার এক নয়। সুতরাং দোকানে এসি কিনতে গেলে আপনি ঘরের মাপ জানানোর পর, অনেক সময় বিক্রেতারা একই মাপের ঘরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সক্ষমতার এসি কেনার পরামর্শ দেন।

সাধারণত ১০০ থেকে ১২০ বর্গফুটের একটি ঘরের জন্য এক টনের এসি প্রয়োজন। ১২০ থেকে ১৬৫ বর্গফুটের জন্য দেড় টন। আবার ১৬৫ থেকে ২২০ বর্গফুটের একটি ঘরে দুই টনের এসি দরকার। তাতে পাওয়া যাবে পরিমিত পরিমাণের বাতাস। অবশ্য বহুতল ভবনের ওপরের তলার কক্ষের জন্য এই হিসাব কাজে আসবে না। একেবারে ওপরের তলার জন্য হিসাবটা কেমন হবে, সেটা নির্ভর করে ওই ভবন কত তলা। আবার ভবন যদি বেশি উঁচু হয় তাহলে ওপরের দিকের তলাগুলোতেও এসি লাগাতে অভিজ্ঞ প্রকৌশলীর সাহায্য নিতে হবে।

এসি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানালেন, বাংলাদেশে একেক ঘরের মাপ একেক রকম। এখানে কক্ষের ক্ষেত্রে আদর্শ কোনো মাপ গড়ে ওঠেনি। আকৃতিতেও থাকে ভিন্নতা। এসব মাথায় রেখে তবেই এসি কেনা উচিত। অন্যদিকে বড় পরিসরে অফিস কিংবা কারখানায় শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র স্থাপনে কষতে হয় জটিল হিসাব। কাজের ধরন ও পরিবেশের ওপর নির্ভর করে এসির ধারণক্ষমতা বা তার ডিজাইন কেমন হবে।

এ বিষয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মুহসিন আজিজ খান বলেন, ‘কর্মপরিবেশে এসি লাগানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই অভিজ্ঞ প্রকৌশলী নিয়োগ করতে হবে। সার্বিক পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে এসির ডিজাইন করা প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘অভিজ্ঞতা নেই, এমন কাউকে এ কাজে নিয়োগ করলে সমন্বয়হীনতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে। কক্ষের আয়তনের তুলনায় এসির ধারণক্ষমতা বেশি হলে বিদ্যুৎ বিল বেড়ে যাবে। যথেষ্ট ধারণক্ষমতার এসি ব্যবহার না করার ফলে সংকট দেখা দেবে বায়ুপ্রবাহে।’