কনটেইনার পরিবহনের বৈশ্বিক তালিকায় নয় ধাপ পিছিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর
করোনার কারণে গত বছর বন্দর দিয়ে কনটেইনার পরিবহনে ধাক্কা লেগেছিল। সেই ধাক্কায় বৈশ্বিক ক্রমতালিকায়ও পিছিয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। এক বছরের ব্যবধানে কনটেইনার পরিবহনে এক লাফে নয় ধাপ পিছিয়েছে এই দেশের প্রধান এ সমুদ্রবন্দরটি।
লন্ডনভিত্তিক শিপিংবিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো সংবাদমাধ্যম লয়েডস লিস্টে ব্যস্ত বন্দরগুলোর তালিকা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আজ সোমবার রাতে তালিকাটি প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। ২০২০ সালে সারা বিশ্বের বন্দরগুলোর ব্যস্ততা, অর্থাৎ কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা হিসাব করে শীর্ষ ১০০টি বন্দরের তালিকা তৈরি করেছে লয়েডস লিস্ট।
লয়েডস লিস্টের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বিশ্বে ৬৩ কোটি ২০ লাখ একক কনটেইনার পরিবহন হয়েছে। এই সংখ্যা ২০১৯–এর তুলনায় শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ কম। আর একই সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার পরিবহন কমেছে ৮ শতাংশ।
লয়েডস লিস্টের তালিকায় অবশ্য বন্দরের সেবার মান বিবেচনা করা হয় না। এরপরও তালিকায় পিছিয়ে যাওয়ার অর্থ, বন্দরটি দিয়ে কনটেইনারে বৈদেশিক বাণিজ্য কমেছে। সমুদ্রপথে দেশের কনটেইনার পরিবহনের ৯৮ শতাংশ এই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়। এতে একক বন্দর হিসেবে চট্টগ্রামের অবস্থান পিছিয়ে যাওয়ার অর্থ বৈদেশিক বাণিজ্যও কমে যাওয়া।
একটানা সাত বছর বৈশ্বিক ক্রমতালিকায় এগিয়ে যাওয়ার পর এবারই ছন্দপতন ঘটল। লয়েডস লিস্ট ২০১৩ সাল থেকে বৈশ্বিক ক্রমতালিকা প্রকাশ করে আসছে। ২০১৩ সালে কনটেইনার পরিবহনে বিশ্বে চট্টগ্রামের অবস্থান ছিল ৮৬তম। এরপর টানা সাত বছর এগিয়ে গেছে এই বন্দর। এবারই হোঁচট খেল।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর করোনার ধাক্কায় ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা ছিল। তাতে কনটেইনারে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কমেছে। এটিই বৈশ্বিক তালিকায় অবস্থান নেমে যাওয়ার প্রধান কারণ হতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে যত পণ্য পরিবহন হয়, তার ২৭ শতাংশ কনটেইনারে আনা-নেওয়া হয়। বাকি ৭৩ শতাংশই আনা-নেওয়া হয় কনটেইনারবিহীন সাধারণ জাহাজে। সাধারণ জাহাজের (বাল্ক, ব্রেক বাল্ক ও ট্যাংকার) খোলে আমদানি হয় মূলত সিমেন্ট, ইস্পাত ও সিরামিক কারখানার কাঁচামাল এবং পাথর, কয়লা, ভোগ্যপণ্য ও জ্বালানি তেল।
পরিমাণে এক-চতুর্থাংশ পণ্য পরিবহন হলেও কনটেইনারে বেশির ভাগ শিল্পের কাঁচামাল, বাণিজ্যিক পণ্য ও ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়। আবার সমুদ্রপথে রপ্তানির পুরোটাই যায় কনটেইনারে।
লয়েডস লিস্টের তালিকায় বরাবরের মতো শীর্ষে রয়েছে চীনের সাংহাই। এর পরের অবস্থানে আছে সিঙ্গাপুর বন্দর। এ তালিকায় বিশ্বের শীর্ষ ১০ বন্দরের মধ্যে ৭টিই চীনের।