খাতুনগঞ্জে হঠাৎ বেড়ে কমল তেল চিনি গমের দাম

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর দিন তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববাজারে এক দিনেই টনপ্রতি ১০০ ডলার দাম বাড়ার রেকর্ড হয়েছিল সয়াবিন তেলের। ইতিহাসের সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠে বেশিক্ষণ টেকেনি ওই দাম। শুক্রবার হঠাৎ পতন হয়েছে সয়াবিন তেলের দাম। এক দিনেই বিশ্ববাজারে টনপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ১৪০ ডলার।

যুদ্ধ শুরুর আগে মঙ্গলবার প্রতি টন সয়াবিন তেল চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত আনতে খরচ হতো ১ হাজার ৬৬৫ ডলার। পরদিন দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭০০ ডলারে। যুদ্ধ শুরুর দিন এই দাম ওঠে ১ হাজার ৮০০ ডলারে। সাপ্তাহিক লেনদেনের শেষ দিন শুক্রবার দাম নেমে আসে ১ হাজার ৬৭০ ডলারে। একইভাবে পাম তেল ১ হাজার ৭৭০ ডলার থেকে নেমে আসে ১ হাজার ৭১০ ডলারে। এ ছাড়া গম ও চিনির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজারে পড়তির দিকে ছিল।

বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় তাৎক্ষণিক প্রভাবে খাতুনগঞ্জের বাজারও ছিল ঊর্ধ্বমুখী। শনিবার বৃহত্তম এই পাইকারি বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম কমেছে মণপ্রতি ১৫০ টাকা। গমের দাম কমেছে কেজিপ্রতি এক টাকা।

খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী শাহেদ উল আলম প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববাজারের দামের প্রভাব খাতুনগঞ্জে পড়তে এখন সময় লাগে না। আন্তর্জাতিক বাজারে যেভাবে দাম বেড়েছিল সেভাবে খাতুনগঞ্জেও দাম বাড়ে। আবার বিশ্ববাজারে পড়তে থাকায় এখানেও দাম পড়ে গেছে। যেসব পণ্য বিদেশ থেকে পুরোপুরি আমদানি করে চাহিদা মেটানো হয়, সেসব পণ্যে দাম বাড়া-কমার প্রভাব তাৎক্ষণিক হয়।

বিশ্ববাজার কিংবা দেশের পাইকারি বাজারে কিছু নিত্যপণ্যের এমন উত্থান-পতনের ঘটনা ঘটেছে দুই-তিন দিনের ব্যবধানে। বিশ্ববাজার পড়তির দিকে থাকলে বা স্থিতিশীল হলে খুচরা বাজারে খুব বেশি প্রভাব পড়ার কথা নয়। দেশে সয়াবিন ও পাম তেল খুচরা পর্যায়ে ক্রেতারা বোতলজাত হিসেবে ক্রয় করেন। পাইকারি বাজারে দামের কিছুটা কমবেশি হলেও খুচরা বাজারে সরকার নির্ধারিত দরেই শনিবার সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ।

হুজুগে বেড়ে এখন কমছে

চিনির সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কোনো প্রভাব নেই। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার দিন বৃহস্পতিবার বিশ্ববাজারে চিনির দাম ১ দশমিক ১৩ শতাংশ কমে যায়। তা সত্ত্বেও ওই দিন যুদ্ধের খবরে হুজুগে চিনির দাম বেড়েছিল খাতুনগঞ্জে। কেজিপ্রতি দুই টাকা দাম বেড়ে উঠেছিল ৭৪ টাকা ৪৯ পয়সায়।

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) লেনদেনের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর আগের দিন বুধবার বিশ্ববাজারে প্রতি টন চিনি ৪০৮ দশমিক ৫১ মার্কিন ডলারে লেনদেন হয়েছিল। যুদ্ধের দিন ও শুক্রবার দুই দিনে সেই দাম টনপ্রতি ১১ দশমিক ৯০ ডলার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৯৬ দশমিক ৬১ ডলারে। বিশ্বজুড়ে চিনির উৎপাদন বাড়ায় দাম কমেছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

এদিকে খাতুনগঞ্জে শনিবার অন্যান্য পণ্যের মতোই চিনির দাম কমেছে। প্রতি মণ চিনির দাম ৩০ টাকা কমেছে এ পাইকারি বাজারে। তাতে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয় ৭৩ টাকা ৬৮ পয়সায়।