প্রকৃতির পাশে আধুনিক আবাস

ভোরে পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙল। শরীরের আড়মোড়া ভেঙে বিছানা ছেড়ে ছোট্ট ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ালেন। হাতে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা কিংবা কফি। সামনে তাকাতেই সবুজ গাছগাছালিতে ঘেরা লেকের পানি আপনাকে স্বাগত জানাবে। লেকের কারণে খুব কাছাকাছি দালানকোঠা নেই। সেই সুযোগে বারান্দার সামনের বিশাল জায়গাজুড়ে নীল আকাশে মেঘেদের ওড়াউড়িও দেখতে পাবেন।

এভাবেই প্রকৃতির মাঝে স্নিগ্ধ একটা সকাল দিয়ে আপনার দিনটা শুরু করার বন্দোবস্ত করেছে ক্রিডেন্স হাউজিং। নবীন এই প্রতিষ্ঠান রাজধানীর ধানমন্ডি লেকের পাশে ৪/এ সড়কের শেষ মাথায় গড়ে তুলেছে আধুনিক সব সুযোগ–সুবিধাসংবলিত একটি ১০ তলা আবাসন প্রকল্প। এটির নাম রাখা হয়েছে ‘লেক প্যানরোমা’। আধুনিক এই আবাসন প্রকল্পের কাজ শিগগিরই শেষ করবে ক্রিডেন্স হাউজিং।

গত সোমবার আমরা যখন লেক প্যানরোমায় যাই, তখন শেষ বিকেল। মূল ফটকের কাজ করছিলেন নির্মাণশ্রমিকেরা। সিঁড়ি বেয়ে ওপরের তলায় একটি ফ্ল্যাটে উঠে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। ভাদ্রের রোদ পড়ে এসেছে। এক সারি সবুজের পর লেক, এরপর আবার সবুজ। ওপরে নীল আকাশে মেঘের ওড়াউড়ি। তখনই আসলে সকালটা কেমন হবে সেটা ভাবছিলাম। হঠাৎ ক্রিডেন্সের কর্মকর্তা মেহেদি হাসান বললেন, ভবনেও কিন্তু সবুজের কমতি নেই।

লেক প্যানরোমার প্রতিটি তলায় একটি করে ফ্ল্যাট। আয়তন ২ হাজার ৩১৫ বর্গফুট। ভবনের সামনের অংশে একটি ব্যালকনির সঙ্গে বাগানের জায়গা করা হয়েছে। সেই বাগান থেকে কার্টেইন কিপারের মতো গাছ নেমে আসবে। ফ্ল্যাটের প্রতিটি কক্ষেই পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রয়েছে। দুটি শয়নকক্ষ, ড্রয়িংরুম ও খাবারের কক্ষের সঙ্গে থাকছে ব্যালকনি।

মেহেদি জানালেন, ছাদেও বাগান হবে। থাকবে বসার ব্যবস্থা। বাসিন্দারা রাতে যেন বারবিকিউ করতে পারেন, সে জন্যও রাখা হয়েছে আলাদা জায়গা। এ ছাড়া ভবনের বাসিন্দাদের বৈঠক করার জন্য আলাদা একটি কক্ষ থাকছে। এর পাশেই রয়েছে প্রক্ষালন কক্ষ। ভবনের ছাদের লেকের দিকে একটি বড় গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই গাছের নিচে বসার ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে বসে পূর্ণিমা রাতে আড্ডা জমাতে পারবেন বাসিন্দারা।

৩২ নম্বরে ‘ভিলা দ্য খালেদ’

লেক প্যানরোমার মতোই ধানমন্ডি লেকের পাশে আরও কয়েকটি আবাসন প্রকল্প করছে ক্রিডেন্স। এর মধ্যে একটি হলো ‘ভিলা দ্য খালেদ’। ঐতিহাসিক ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ওপর গড়ে ওঠা এই প্রকল্পের নিচতলার কাজ চলছে এখন। ভূগর্ভস্থ একতলা ছাড়া ৯ তলাবিশিষ্ট এই ভবনে ফ্ল্যাটের সংখ্যা আটটি। তার মানে প্রতিটি তলায় থাকছে একটি করে ফ্ল্যাট। একেকটি ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৮১০ বর্গফুট। ভবনে ১৮টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।

ভিলা দ্য খালেদের উল্টো পাশেই ধানমন্ডি লেক। ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের ব্যালকনি থেকেই সবুজে ঘেরা লেকের সৌন্দর্য চোখে পড়বে। মন চাইলেই লেকের পাড়ে গাছের নিচে বসে মনটা জুড়িয়ে নেওয়া যাবে। সকাল-বিকেল কিংবা রাতে হাঁটার জন্যও জায়গাটা বেশ। সড়কে গাড়িঘোড়া কম থাকায় ফ্ল্যাটে বসবাসে শব্দগত যন্ত্রণা নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই।

প্রকৃতির কাছে বসবাস, তাই বলে ভবনে সবুজ থাকবে না সেটি কি হয়। এই ভবনেও সবুজের অভাব নেই। প্রতিটি তলায় সড়কের দিকে দুই বেলকনির সঙ্গেই থাকবে ছোট্ট বাগান। এ ছাড়া দুটি কক্ষের পাশেই ছোট্ট সবুজ টেরাস। ভবনের নকশা এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে চারটি শয়নকক্ষ, দুটি লিভিং রুম ও খাবার কক্ষে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস পাওয়া যাবে। ছাদের ওপর থাকবে বাগান। তার পাশেই বাসিন্দাদের জন্য রাখা হয়েছে বসার জায়গা।

রুবানা থেকে সংসদ দেখা

লেক প্যানরোমা ও ভিলা দ্য খালেদের মতো ধানমন্ডির পার্শ্ববর্তী এলাকা লালমাটিয়া এ ব্লকের ৬-৭ নম্বর প্লটে ‘রুবানা’ নামে আরও একটি আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলছে ক্রিডেন্স হাউজিং। আধুনিক নকশার এই নয়তলা ভবনের নিচতলায় পার্কিং। বাকি আটতলায় দুটি করে ফ্ল্যাট থাকছে। দুই টাইপের ফ্ল্যাটের আকার ১ হাজার ৫১৬ বর্গফুট করে। ধানমন্ডির মতো লেক না থাকলেও এই প্রকল্পের উল্টো পাশে আছে বিশাল খেলার মাঠ। ভবনের ওপরের তলাগুলোর ফ্ল্যাট থেকে দেখা যাবে জাতীয় সংসদ ভবন।

রুবানার নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। ক্রিডেন্সের কর্মকর্তারা জানান, এই ভবনেও সবুজের কমতি থাকবে না। প্রতিটি বেলকনিতে থেকে কার্টেইন কিপারের মতো সবুজ গাছ নেমে আসবে। ছাদের ওপর থাকবে ছোট বাগান। পাশাপাশি কয়েকটি বড় আকারের গাছ লাগানো হবে। থাকবে বসার জায়গা। এ ছাড়া ভবনের বাসিন্দাদের বৈঠক করার জন্যও রাখা হয়েছে একটি কক্ষ।

২৫ প্রকল্প চলমান

ক্রিডেন্স হাউজিং ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করে। এরই মধ্যে ১০টি আবাসন প্রকল্প শেষ করে হস্তান্তর করেছে। বর্তমানে ২৫টি আবাসন প্রকল্প নির্মাণের কাজ করছে ক্রিডেন্স। তাদের অধিকাংশ প্রকল্প রাজধানীর ধানমন্ডি, লালমাটিয়া, মোহাম্মদপুর, কলাবাগান, উত্তরা, গ্রিন রোড ও মিরপুর এলাকায়। এ ছাড়া শিগগিরই আরও কয়েকটি নতুন প্রকল্প যুক্ত হচ্ছে ক্রিডেন্সের তালিকায়।