প্রথম চালানে গেল এক টন সবজি

  • এ বছর ডুমুরিয়া থেকে ১২০ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

  • ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ১৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সবজি রপ্তানি হয়।

‘সফল’ প্রকল্পের কৃষকদের উৎপাদিত নিরাপদ সবজি রপ্তানি শুরু হয়েছে। প্রশিক্ষিত সবজি বাছাইকারীরা ভালো সবজি বাছাই করছেন
গতকালের ছবি। সাদ্দাম হোসেন

বাণিজ্যিকভাবে খুলনা থেকে ইতালি ও ইংল্যান্ডে সবজি রপ্তানি শুরু হলো। গতকাল শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভিলেজ সুপার মার্কেট থেকে এসব সবজি পাঠানো হয়েছে। সবজির মধ্যে আছে পেঁপে, পটোল, কচুর লতি ও কাঁচকলা।

প্রথম চালানে এক মেট্রিক টন সবজি রপ্তানি করা হয়েছে। এনএইচবি করপোরেশন ও আরআর এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি প্রতিষ্ঠান এসব সবজি রপ্তানি করছে। এর মধ্যে এনএইচবি করপোরেশন ইতালিতে এবং আরআর এন্টারপ্রাইজ ইংল্যান্ডে সবজি রপ্তানি করছে। সকালে সবজিগুলো প্রক্রিয়াজাত করে পিকআপ ভ্যানে করে ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখান থেকেই আকাশপথে তা ইউরোপে পাঠানো হবে।

খুলনার চিংড়ি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। এবার যুক্ত হয়েছে সবজি। সরকারি সহযোগিতা মিললে সবজি রপ্তানিতে বিপ্লব ঘটতে পারে

গতকাল সকাল থেকেই ভিলেজ সুপার মার্কেটে ছিল উৎসবের আমেজ। কেউ পটোল বাছাই করছেন, কেউ ধুয়ে পরিষ্কার করছেন কচুর লতি, কেউবা কাঁচকলা প্যাকেটজাত করছেন। যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের গায়ে সবুজ গাউন, হাতে গ্লাভস। খুব যত্ন নিয়ে ও সতর্কতার সঙ্গে কাজগুলো করছিলেন তাঁরা।

রপ্তানির জন্য বাজারে তিন মণ পটোল নিয়ে এসেছিলেন ডুমুরিয়ার আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া গ্রামের তাপস সরকার। তিনি বলেন, পটোল চাষের জন্য তেমন কোনো কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়নি। সম্পূর্ণ বিষমুক্ত ও নিরাপদ উপায়ে এসব সবজি উৎপাদন করা হয়েছে।

সবজি রপ্তানিতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ‘সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া’ নামের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। সংস্থাটির ফুডস অ্যান্ড ভেজিটেবলস বিভাগের কমোডিটি ম্যানেজার নাজমুন নাহার বলেন, ২০১৩ সাল থেকেই খুলনা ও আশপাশের বিভিন্ন জেলার কৃষকদের নিরাপদ সবজি উৎপাদন নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এত দিন এসব সবজি ঢাকাসহ বড় বড় সুপারশপে পাঠানো হতো। এবার ইউরোপে পাঠানো হচ্ছে। এ বছর ডুমুরিয়া থেকে ১২০ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই চালানে ইতালি ও লন্ডনে এক টন সবজি পাঠানো হচ্ছে।

জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ১৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সবজি রপ্তানি হয়। তবে চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে সবজি রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। মূলত কোভিড পরিস্থিতির কারণেই রপ্তানি কমেছে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান

সবজি রপ্তানি কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ডুমুরিয়ার ভিলেজ সুপার মার্কেটে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাদ্দেক হোসেন ও খুলনা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এস এম মাহবুব আলম। সভাপতিত্ব করেন ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ।

এ সময় বক্তারা বলেন, খুলনার চিংড়ি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে। এবার যুক্ত হয়েছে সবজি। সরকারি সহযোগিতা মিললে খুলনা থেকে সবজি রপ্তানিতে বিপ্লব ঘটতে পারে।