সুইডেন পাঁচ বছরে ১৮৩০ কোটি টাকা দেবে

.
.

বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে ১৬০ কোটি সুইডিশ ক্রোনার বা ২৩ কোটি মার্কিন ডলার দেবে সুইডেন। ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দারিদ্র্য বিমোচন, গণতন্ত্র সুসংহত করা, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা ও নারীর উন্নয়নের মতো কর্মসূচিগুলোতে এ অর্থ দেওয়া হবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় এক হাজার ৮৪০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সফররত সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতাবিষয়ক মন্ত্রী ইসাবেলা লুভিন গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে সুইডেনের কৌশল ঘোষণা দেন। এ কৌশলের আওতায় বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচিতে সুইডেন আগামী পাঁচ বছরে এ অর্থ দেবে। কৌশলপত্রটি ঘোষণা উপলক্ষে রাজধানীর গুলশানে আমারি হোটেলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সুইডেন একই ধরনের কৌশলের আওতায় সমপরিমাণ অর্থ দিয়েছে।
এবারের কৌশলে অর্থ দেওয়ার জন্য বৃহত্তর চারটি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। খাতগুলো হচ্ছে—গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুসংহতকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, পরিবেশগত বিপর্যয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন। তবে কোন খাতে কত অর্থ দেওয়া হবে, সেটা অনুষ্ঠানে জানানো হয়নি।
অনুষ্ঠানে সুইডেনের মন্ত্রী ইসাবেলা লুভিন বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ হতে চায়। এ জন্য টেকসই উন্নয়ন প্রয়োজন। ১৯৭১ সাল থেকে সুইডেন বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে আসছে। বাংলাদেশ হলো সুইডেনের অন্যতম পুরোনো বন্ধুরাষ্ট্র। তিনি মনে করেন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বাংলাদেশ যথেষ্ট উন্নতি করেছে। ফলে সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনে অনেকটা এগিয়েছে বাংলাদেশ।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন বলেন, মধ্য আয়ের দেশ হতে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। এর জন্য মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩৫ শতাংশ বিনিয়োগ হতে হবে। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ আরও বেশি আকৃষ্ট করতে হবে।
ঢাকায় সুইডেনের রাষ্ট্রদূত জোহান ফ্রাইসেল বলেন, বাংলাদেশে ৩০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। তবে বাংলাদেশে খুব কম লোকই আছে, যারা সন্তোষজনক জীবনযাপন করে। তিনি মনে করেন, নিজের গৃহ হলো নারীর জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর স্থান। সেখানেই বেশি সহিংসতার শিকার হন তাঁরা। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘এ অবস্থার উত্তরণে একমাত্র পন্থা হলো নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং শ্রমবাজারে অংশীদারি বৃদ্ধি।’
এদিকে গতকাল ইসাবেলা লুভিন ঢাকার মিরপুরে কয়েকটি বস্তি পরিদর্শন করেছেন। বস্তি পরিদর্শনকালে বস্তিবাসীর সঙ্গে তিনি কথাবার্তা বলেন।
উল্লেখ্য, সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা সিডার অর্থসাহায্যে সেখানে একটি প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে।