‘স্টার্টআপে সুখবর, ল্যাপটপ আমদানিতে ভ্যাট বসানো সাংঘর্ষিক’

বাজেটে আইসিটি খাতের অবস্থা যেন ‘হরিষে বিষাদ’। একদিকে স্টার্টআপে বিশেষ প্রণোদনার প্রস্তাব। অন্যদিকে ল্যাপটপ থেকে শুরু করে কম্পিউটারের নানা সামগ্রীর আমদানিতে রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহার। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দেশীয় কম্পিউটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে। তা থেকে রক্ষাতেই এ ব্যবস্থা। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন ভিন্ন কথা।

প্রস্তাবিত ২০২২–২৩ অর্থবছরের বাজেটে বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের উদ্যোগসমূহকে উৎসাহ দেওয়ার কথা বলেছেন। দেশীয় প্রযুক্তি পণ্য বিকাশের জন্য আমদানি করা পণ্যের ওপর ভ্যাট বসানো হয়েছে। স্টার্টআপে বিশেষ প্রণোদনার প্রস্তাবসহ আইসিটি বিভাগের বরাদ্দ বেড়েছে ২৫০ কোটি টাকার বেশি।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের জন্য বাজেট পেশ করা হয়। এতে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের জন্য ১ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২১–২২ অর্থবছরে এ বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৭২০ কোটি টাকা, যা পরবর্তীকালে সংশোধিত বাজেটে কমিয়ে হয় ১ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এবার ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।

সরকার বিশ্বে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডিং করতে চায়। তাই দেশীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের বিনিয়োগ সুরক্ষার পাশাপাশি সরকার ঘোষিত ডিজিটাল ডিভাইস রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কম্পিউটার, প্রিন্টার ও টোনার কার্টিজ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে।

ল্যাপটপ আমদানিতে সরকার মূসক অব্যাহতি দিয়ে যাচ্ছে। তবে নতুন বাজেটে তা না রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, দেশীয় কম্পিউটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে। তাই ল্যাপটপ ও কম্পিউটার আমদানিতে ১৫ শতাংশ মূসক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের টার্নওভার করের হার শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি আয়কর রিটার্ন দাখিল বাদে বাকি সব রিপোর্টিং থেকে অব্যাহতির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

মুঠোফোন উৎপাদন ও সংযোজন শিল্প প্রসারে এই শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা আরও বিনিয়োগবান্ধব ও যৌক্তিকীকরণ করা হয়েছে এবং ফিচার ফোন আমদানিতে শুল্কহার বৃদ্ধি করা হয়েছে।

মুঠোফোনের ব্যাটারি, চার্জার ও ইন্টারেকটিভ ডিসপ্লের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। টেলিফোন সেটে ব্যবসায়ী পর্যায়ে বিদ্যমান ৫ শতাংশ মূসক অব্যাহতি প্রত্যাহারে প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলছেন, ‘স্টার্টআপের প্রণোদনা যেমন সুখবর, তেমনি ল্যাপটপের আমদানিতে ভ্যাট বসানো সাংঘর্ষিক।’