৯৫ শতাংশ রডই বিএসআরএমের

দেশীয় অর্থায়নে, দেশীয় উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি পদ্মা সেতু এ দেশের বিভিন্ন খাতের শিল্পোদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ সেতু প্রকল্পে দেশীয় পণ্য সরবরাহের পাশাপাশি উৎপাদন সক্ষমতাও বেড়েছে রড, সিমেন্টসহ আরও অনেক খাতের। পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজের সঙ্গে জড়িত সিমেন্ট, রড, নির্মাণ খাতের শিল্পোদ্যোক্তারা তাঁদের অভিজ্ঞতা, অনুভূতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রথম আলোকে। কথা বলেছেন মাসুদ মিলাদ।

আমেরআলী হোসাইন

বড় প্রকল্পে উপকরণ সরবরাহে তিনটি বিষয় প্রাধান্য দেওয়া হয়। প্রকল্পের নির্ধারিত গুণগত মান, সর্বোত্তম সেবা ও সময়মতো সরবরাহ। এই তিনটিতেই বিএসআরএম মান উত্তীর্ণ হয়েছে। এ কারণেই পদ্মা সেতু নির্মাণে মূল কাঠামোতে ৯৫ শতাংশ রডই ব্যবহৃত হয়েছে আমাদের প্রতিষ্ঠান বিএসআরএমের।

পদ্মা সেতুতে সরবরাহের জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথমবারের মতো আমরা ৫০ মিলিমিটারের রড তৈরি করেছি। এ জন্য কারখানায় নতুন বিনিয়োগ করতে হয়েছে। বিনিয়োগ ফেরত আসবে কি না, তা নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা ছিল না।

কারণ, আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল, রড যেন অন্তত বাইরে থেকে আমদানি করতে না হয়। এই প্রকল্প আমাদের জন্য গৌরবের। দেশীয় উপকরণ ব্যবহার হওয়া মানেই আরও বেশি গৌরবের। আমাদের জন্য খুব আনন্দের, সেতুর ২৯৪টি পাইলে বিএসআরএমের ৪০ মিলিমিটার রড ব্যবহৃত হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে গভীর পাইলও নির্মিত হয়েছে বিএসআরএমের রডে। আমাদের অব্যাহত প্রচেষ্টার কারণেই এই প্রকল্পের জন্য বাইরে থেকে রড আমদানি করতে হয়নি।

বড় এ প্রকল্পে রড সরবরাহের মাধ্যমে বিএসআরএম আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী রড তৈরি করছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের মান অনুযায়ী
রড নির্মাণে সক্ষমতা অর্জন করেছি আমরা। এটা সম্ভব হয়েছে কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে পণ্য উৎপাদনের প্রতিটি ধাপে গুণগত মান বজায় রাখার কারণেই।

পদ্মা সেতুতে রড সরবরাহের আগে কারখানা পরিদর্শন থেকে শুরু করে উৎপাদনের প্রতিটি ধাপ যাচাই করেছেন বিশেষজ্ঞরা। মান উত্তীর্ণ হওয়ার পরই তারা রড সরবরাহ নিয়েছে।

বিএসআরএম শুরু থেকেই মানের ব্যাপারে ছিল আপসহীন। বাংলাদেশে সব বড় প্রকল্পে আমরা রড সরবরাহ করছি। পদ্মা সেতুতে রড সরবরাহের মাধ্যমে বিশ্বমানের রড উৎপাদনে বিএসআরএমের সক্ষমতা প্রমাণ হয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবলে নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। এই সেতু দেশের গর্ব। পদ্মা সেতু নির্মাণের একটি বড় অংশীদার হতে পেরে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত।

আমেরআলী হোসাইন ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিএসআরএম