'আমরা ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছি'

কন্টিনেন্টাল কুরিয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল ইমরান চিশতি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির যুগে কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবসা সংকুচিত হয়ে গেছে। তা ছাড়া ঢাকায় যানজট ঠেলে একটি পার্সেল পাঠিয়ে পাওয়া যায় মাত্র ১৫ টাকা। তার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর বা মূসক) দিলে আর কিছু থাকে না। তাই আমরা ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছি।’ 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আজ বৃহস্পতিবার আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রাক্‌-বাজেট আলোচনায় এসব কথা বলেন মোহাম্মদ নুরুল ইমরান চিশতি। কন্টিনেন্টাল কুরিয়ারের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুরিয়ার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের পক্ষে আগামী বাজেটে কুরিয়ার সার্ভিসকে মূসকের আওতার বাইরে রাখার দাবি জানান।

প্রাক্‌-বাজেট আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন এনবিআর সদস্য (শুল্ক নীতি) ফরিদ উদ্দিন, সদস্য (ভ্যাট নীতি) জাহাঙ্গির হোসেন প্রমুখ। আজকের সভায় কুরিয়ার সার্ভিস ছাড়াও রেস্তোরাঁ, হোটেল, পর্যটন, ট্রাভেল এজেন্সি, সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে আগামী বাজেট বাস্তবায়নের জন্য নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরেন। দাবিদাওয়ার অধিকাংশই ছিল মূসক অব্যাহতি কিংবা হ্রাস করাসংক্রান্ত।

সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বলেন, ‘আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হবে।’ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা কেউ একে অপরের প্রতিপক্ষ নই। আমরা একত্রিত হয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করব।’

নতুন ভ্যাট আইনে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা উপকৃতই হবেন বলে মনে করেন এনবিআর সদস্য জাহাঙ্গির হোসেন। তিনি বলেন, বছরে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেনের জন্য কোনো ধরনের কর দিতে হবে না। আর ৩০ লাখ ১ টাকা থেকে শুরু করে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক লেনদেনের জন্য মাত্র ৩ শতাংশ টার্নওভার কর দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, নতুন আইন হলে পণ্যের সঙ্গে আলাদা করে মূসক থাকবে না। এটি পণ্যের মূল্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। আর ব্যবসায়ী যতটুকু মূল্য সংযোজন করবে, তার ওপর ১৫ শতাংশ মূসক দিতে হবে। বাকিটা তারা রেয়াত পাবেন। প্রকৃতপক্ষে আড়াই থেকে তিন শতাংশ মূসক দিতে হবে।

নতুন আইন কার্যকর হলে ব্যবসায়ীরা ঘরে বসে ইন্টারনেটে মূসক পরিশোধের সব কাজ শেষ করতে পারবেন বলেও জানান জাহাঙ্গির হোসেন।