২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

নতুন বাড়িতে ইউটিলিটি–সুবিধা পাবেন যেভাবে

একটি বাড়ি নির্মাণে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করতে হয়। ইট, সিমেন্ট, রড ও বালির কাজ শেষ হয়ে গেলে শুরু হয় নতুন কাজের ধাপ। সেটা হলো, বাড়িতে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা অর্থাৎ পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা। যাকে আমরা বলে থাকি ইউটিলিটি। এই পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ পাওয়ার জন্য কী কী ধাপে কাজ করতে হয়, সে বিষয়ে মতামত দেন রিহ্যাবের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান

পানিসংযোগ

পানির নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে ওয়াসা ভবনের হিসাব বিভাগ অথবা ওয়াসার জোনাল অফিস থেকে ৫০০ টাকার বিনিময়ে গ্রাহককে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে। এ ছাড়া কেউ যদি চান তাহলে ওয়েবসাইট (dwasa.org.bd) থেকেও আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। আবেদন ফরম পূরণ করে জমির মালিকানাসংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য ও প্রমাণপত্র, ছবি ইত্যাদি সত্যায়িত করে সংশ্লিষ্ট জোনের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে দাখিল করতে হবে।

আবেদন করবেন যেভাবে

  • ভাড়াটে/অস্থায়ী আবেদনকারীর ক্ষেত্রে আবেদনের সঙ্গে মালিকের কাছ থেকে সংযোগ গ্রহণের ক্ষমতা/অনাপত্তিপত্র জমা দিতে হবে।

  • অভ্যন্তরীণ প্লাম্বিং সিস্টেমের নকশাসহ ইমারত নকশা আবেদনের সঙ্গে দাখিল করতে হবে।

  • পানির লাইন নেওয়ার প্রকিয়া একটু সময়সাপেক্ষ। তাই বাড়ি নির্মাণের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার একটু আগে থেকেই পানির লাইন নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করে দিতে হবে।

  • কাগজপত্রের ক্ষেত্রে গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, জমির খতিয়ানের কপি এবং অন্যান্য ফরম আর কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর ওয়াসা সেগুলো তৈরি করতে কিছু সময় নেবে। প্রক্রিয়া শেষে আপনার নামে ডিমান্ড নোট ইস্যু করা হবে। ডিমান্ড নোট অনুসারে নির্ধারিত ফি ব্যাংকে জমা দিতে হবে। পানির সংযোগের জন্য রাস্তায় খননকাজের প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে রাজউক বা সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার কাছ থেকে আপনাকে অনুমতি নিতে হবে।

বিদ্যুৎ–সংযোগ

কিছু নিয়ম মেনে চললে বিদ্যুৎ-সংযোগ পেতেও খুব বেশি ঝামেলা পোহাতে হয় না। প্রথমেই বিদ্যুতের নতুন সংযোগ স্থাপনের জন্য আবেদনকারীকে উপজেলা/জেলা বিদ্যুৎ-অফিসে আবেদন করতে হবে। তারপর ক্যাশ শাখায় সমীক্ষা ফি জমা দিতে হবে। ফি জমা দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট অফিস প্রধান ওয়ারিং পরিদর্শককে কাজ শুরু করার দায়িত্ব প্রদান করবেন।

আবেদন করবেন যেভাবে

  • আবেদন করার সময় ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংযোগস্থলের খারিজের স্ক্যান কপি সংযুক্ত করতে হবে।

  • সার্ভিস ড্রপের দূরত্ব (সংযোগস্থল থেকে সার্ভিস পোলের দূরত্ব) ১৩০ ফুটের মধ্যে হতে হবে।

  • সঠিকভাবে মেপে সার্ভিস ড্রপের দূরত্ব প্রদান করতে হবে। সার্ভিস ড্রপের দূরত্ব সঠিক না হলে তারের দৈর্ঘ্য কম/বেশি হতে পারে। ভুল তথ্য দিলে পরবর্তী সময়ে সংযোগ পেতে বিলম্ব হতে পারে।

  • মোট লোড ৮০ কিলোওয়াটের বেশি হলে এইচটি সংযোগের নিয়মাবলি প্রযোজ্য হবে।

  • অনলাইনে সার্ভে করার পর আবেদন ফি, মেম্বারশিপ ফি ও নিরাপত্তা জামানত অর্থাৎ সকল প্রয়োজনীয় অর্থ জমাদানসহ সব নির্দেশনা মুঠোফোনে মেসেজের মাধ্যমে জানানো হবে।

  • আবেদনপত্রে গ্রাহকের নিজস্ব মুঠোফোন নম্বর প্রদান করতে হবে।

  • আবেদন ফরমের লাল (*) চিহ্নিত ক্ষেত্রগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে।

  • আবেদনের পর প্রাপ্ত ট্র্যাকিং আইডি এবং পিন নম্বর অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।

গ্যাস–সংযোগ

গ্যাস-সংকটের কারণে ২০০৯ সাল থেকে সারা দেশে নতুন আবাসিক গ্যাস-সংযোগ বন্ধের নির্দেশ দেয় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগ। ২০১৭ সাল থেকে নির্দেশটি পালিত হচ্ছে। বাসাবাড়িতে এখন কোনো গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না। নতুন করে আবাসিক গ্যাস–সংযোগ দেওয়ার কোনো পরিকল্পনাও নেই সরকারের। কবে, কখন থেকে দেবে—সেটাও অনিশ্চিত।

তবে, গ্যাস–সংযোগ পাওয়ার যে প্রক্রিয়াটি ছিল বা সংযোগ দেওয়া শুরু হলে যেভাবে গ্যাসের লাইন নিতে হবে সেটির প্রক্রিয়া হলো, বাড়ির কাজ শেষ করে বা বাড়ি বদল করলে নতুন গ্যাস–সংযোগের জন্য স্থানীয় গ্যাস এজেন্সিকে জানাতে হবে।

এজেন্সিতে যাওয়ার সময় আপনার সাবস্ক্রিপশন ভাউচার বা গ্যাস পাসবুক সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হবে। বাড়ির ঠিকানার একটি নতুন প্রমাণ নিতে হবে এবং সংস্থার কাছে সেটা জমা দিতে হবে। যদি এজেন্সি সেই এলাকায় কাজ করে তবে আপনার বাড়ির গ্যাস–সংযোগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থানান্তরিত হবে।