রাজধানীতে ডিম ও মুরগির সুলভ মূল্যের বাজার চালু

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) রাজধানীর শনির আখড়ার গোবিন্দপুরে ডিম ও মুরগির সুলভ মূল্যের বাজার চালু করেছে। গতকাল বাজারটির উদ্বোধন করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান (বাঁ থেকে দ্বিতীয়)ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শনির আখড়ার গোবিন্দপুরে ডিম ও মুরগির সুলভ মূল্যের বাজার চালু হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এই বাজার চালু করেছে। সরাসরি খামার থেকে ডিম ও মুরগি এনে বাজারটিতে পাইকারি আড়তের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। এতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে এবং প্রচলিত বাজার থেকে দাম কম পড়বে বলে উদ্যোক্তারা মনে করেন। ভোক্তা অধিদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

ভোক্তা অধিদপ্তর সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বুধবার ডিম ও মুরগির এই বাজার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ত্রুটিপূর্ণ বিপণনব্যবস্থার কারণে মুরগি ও ডিমের দাম অনেক সময় হঠাৎ করে বেড়ে যায়। হাতবদলের কারণে এটা বেশি ঘটে। বিভিন্ন ফড়িয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীরা বাজারে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। তারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়। ডিম ও মুরগির নতুন এই কার্যক্রমের ফলে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমে আসবে এবং ভোক্তারাও ন্যায্যমূল্যে এখান থেকে সরাসরি মুরগি ও ডিম কিনতে পারবেন।

খিলগাঁওয়ের মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমানের উদাহরণ দিয়ে এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, এক খলিল সাহেবের সাহসী উদ্যোগের ফলে গরুর মাংস ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে এসেছে। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের এই উদ্যোগের ফলে ডিম–মুরগির বাজারেও স্বস্তি ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ডিম ও মুরগির বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে এই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। বড় বড় করপোরেট ব্যবসায়ী পোলট্রি ফিড উৎপাদন করে খামারিদের কাছে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করেন। ফলে প্রান্তিক খামারিরা অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েন। এই বাজারে নিজস্বভাবে তৈরি পোলট্রি ফিড অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে সরবরাহ করা হবে।
সুমন হাওলাদার, সভাপতি, বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার অনুষ্ঠানে বলেন, ডিম ও মুরগির বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে এই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। বড় বড় করপোরেট ব্যবসায়ী পোলট্রি ফিড উৎপাদন করে খামারিদের কাছে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করেন। ফলে প্রান্তিক খামারিরা অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েন। এই বাজারে নিজস্বভাবে তৈরি পোলট্রি ফিড অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে সরবরাহ করা হবে। খামারিদের উৎপাদিত প্রতিটি ডিম খুচরায় ১০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ কেজি দরে বিক্রি করা হবে। পর্যায়ক্রমে ঢাকা মহানগরীর বড় ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বাজারেও এই কার্যক্রম সম্প্রসারণে সরকারের সহযোগিতা চান তিনি।

এদিকে সুমন হাওলাদার বুধবার রাতে প্রথম আলোকে জানান, ‘প্রথম দিনে ১ হাজার ২০০ কেজি ব্রয়লার মুরগি ও ৭ হাজার ডিম বিক্রি হয়েছে। আশা করছি, ভবিষ্যতে বিক্রি আরও বাড়বে।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল জব্বার মণ্ডল। এ সময় বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, শনির আখড়া বাজার কমিটির সভাপতিসহ অন্য ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।