তিন সপ্তাহ পর আবার কিছুটা কমল জ্বালানির দাম

জ্বালানি তেল
ছবি: সংগৃহীত

আজ সোমবার সকালে বিশ্ববাজারে জ্বালানির তেলের দাম কিছুটা কমেছে। এই প্রতিবেদন লেখার সময় জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্রেন্ট ক্রুডের দর ছিল ব্যারেলপ্রতি ৮৬ দশমিক ২৩ ডলার। তাতে আজ সকালে দাম কমেছে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। খবর অয়েল প্রাইস ডটকম।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈঠক আছে। সেই বৈঠকের কারণে এ সপ্তাহে তারা তেলের উৎপাদন অপরিবর্তিত রাখবে। এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সামনে নীতি সুদহার আবার কিছুটা বাড়াতে পারে এমন আশঙ্কার কারণেও দাম কিছুটা কমেছে।

গত বুধবার তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক ও রাশিয়া বৈঠক শুরু করবে। তেল উৎপাদন নীতিতে তারা পরিবর্তন আনবে না, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও রাশিয়ার বাল্টিক অঞ্চল থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তেল সরবরাহ বাড়বে এমন ইঙ্গিত থাকায় তেলের দাম গত তিন সপ্তাহের মধ্যে আজ প্রথম কমেছে।

এদিকে আগামীকাল মঙ্গলবার ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠক শুরু হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এবারও তারা নীতি সুদহার বৃদ্ধি করবে, তবে বৃদ্ধির হার কিছুটা কমবে। ডিসেম্বরে তারা ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট হারে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে। তবে এবারের বৈঠকে হয়তো ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট হারে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করা হবে। এতে অর্থনীতির শ্লথগতি নিয়ে যে আশঙ্কা ছিল, তা কিছুটা কমবে। কিন্তু নীতি সুদহার বৃদ্ধি করা মানে ঋণের সুদহার বৃদ্ধি।

এতে সমাজে ঋণের প্রবাহ বাড়বে, চাহিদা আরও কিছুটা কমবে এবং সেই ধারণা থেকে বাজারে তেলের দাম কিছুটা কমেছে এমনটাই বলছে রয়টার্স।

তবে তিন সপ্তাহ ধরে বিশ্ববাজারে জ্বালানির তেলের দাম বাড়ছিল। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে ড্রোন হামলা এবং চীনের শূন্য কোভিড নীতি থেকে সরে আসার ঘোষণায় দাম বাড়তে শুরু করে। এই সময়ের মধ্যে দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার থেকে ৮৭ ডলারে উঠে যায়। তারপর আজ সকালে হঠাৎ দাম কিছুটা কমল।

২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বজুড়ে কোভিডজনিত বিধিনিষেধ উঠে গেলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। এরপর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করলে জ্বালানি তেলের দর ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। এমনকি একপর্যায়ে তা ১৩০ ডলার ছাড়িয়ে যায়।

দেশের বাজারে দাম

বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির জেরে দেশে গত ১৫ মাসে দুবার তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে খাদ্যসহ সবকিছুর দামই বেড়েছে, চাপে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। সর্বশেষ আগস্টে জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে সর্বোচ্চ ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়, যদিও তারপর আবার জ্বালানি তেলের দাম লিটারে পাঁচ টাকা কমানো হয়েছে।

বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমতে শুরু করলে বাংলাদেশেও দাম সমন্বয় করা হবে বলে জানিয়েছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তাঁর বক্তব্য, ‘আমরা তেলের দাম বাড়াইনি, কেবল সমন্বয় করেছি।’ অর্থমন্ত্রীও একাধিকবার বলেছেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম কমলে দেশেও কমবে।

গত নভেম্বরে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দর যুদ্ধের আগের পর্যায়ে ফেরত গেলেও দেশের বাজারে এখন পর্যন্ত দাম কমানোর উদ্যোগ দেখা যায়নি। এরপর গত তিন সপ্তাহে জ্বালানি তেলের দর আবার অল্প অল্প করে বাড়ার পর আজ কিছুটা কমল, যদিও এখন পর্যন্ত তা ৯০ ডলারের নিচেই আছে।