আইনি বিশেষ ছাড়ে প্রথম ডিজিটাল ব্যাংকের চূড়ান্ত লাইসেন্স পেল নগদ

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক (বিআরপিডি) মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী নগদ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ তানভীর এ মিশুকের হাতে ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’–এর লাইসেন্স তুলে দেন। আজ সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকেছবি: সংগৃহীত

দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে চূড়ান্ত লাইসেন্স পেয়েছে নগদ। আইনে বিশেষ ছাড় দিয়ে ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’কে তফসিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে দেশে ব্যাংকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬২।

ব্যাংক কোম্পানি আইনে একক ব্যক্তি, পরিবার বা কোম্পানির কোনো ব্যাংকের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণে যে বিধিনিষেধ রয়েছে, সেটিতেই ছাড় দেওয়া হয়েছে নগদকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক (বিআরপিডি) শাহরিয়ার সিদ্দিকী আজ সোমবার নগদ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ তানভীর এ মিশুকের হাতে ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’-এর লাইসেন্স তুলে দেন।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক আজ এ বিষয়ে দুটি আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসিকে ৩ জুন তফসিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনাটি সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়েছে।’

ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৪ক(১) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি, কোম্পানি বা একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ব্যাংকের শেয়ার কেন্দ্রীভূত করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি, কোম্পানি বা পরিবারের সদস্যরা একক, যৌথ বা উভয় নামে কোনো ব্যাংকের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার কিনতে পারবেন না। তবে নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের শেয়ারের ক্ষেত্রে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ওই ধারা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ নগদ ডিজিটাল ব্যাংকে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ারধারী রয়েছে।

অপর এক প্রজ্ঞাপনে আইনের ১৪ক(১) ধারার উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১২১ ধারার ক্ষমতাবলে ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস এলএলসি, আরসিসি ক্যাপিটাল পার্টনারস এলএলসি ও ফিনক্লুশন ভেঞ্চারস পিটিই লিমিটেড কর্তৃক ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’র শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে ১৪ক(১) ধারা প্রযোজ্য হবে না। অবশ্য কোন প্রতিষ্ঠান কত শতাংশ শেয়ার নিয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়নি প্রজ্ঞাপনে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ২৮ মে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় নগদকে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে গত বছরের ৮ আগস্ট নগদ ও কড়িকে ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার নীতিগত অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় মোট ৫২টি আবেদন পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই-বাছাই শেষে দেশের অন্যতম মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশ, নগদসহ ৯টি প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদে। তবে পরিচালনা পর্ষদ কেবল ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’ এবং ‘কড়ি ডিজিটাল পিএলসি’কে সম্মতিপত্র ইস্যুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিষ্ঠান দুটিকে ছয় মাসের মধ্যে মূলধন জোগাড়সহ সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করে চূড়ান্ত লাইসেন্সের জন্য যেতে বলা হয়। সে অনুযায়ী নগদকে চূড়ান্ত লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কড়ি আরও ছয় মাস সময় চেয়ে নিয়েছে।