দোকানপাট খোলা থাকলেও ক্রেতা কম
ঢাকার নিউমার্কেট রাজধানীর সবচেয়ে ব্যস্ত বিক্রয়কেন্দ্রগুলোর অন্যতম। সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সবচেয়ে বেশি ক্রেতাদের আনাগোনা থাকে। তবে আজ বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এ এলাকায় ক্রেতাদের কোনো ভিড় নেই। অলস সময় পার করতে দেখা যায় এখানকার বিক্রেতাদের।
নিউমার্কেটের প্রিয়াঙ্গন শপিং মলের সামনের ফুটপাতে পোশাক বিক্রি করেন নুরুল ইসলাম। সকাল ১০টায় দোকান খুলে দুপুর দেড়টা নাগাদ কোনো পণ্য বিক্রি করতে পারেননি তিনি। প্রথম আলোকে এ বিক্রেতা বলেন, ‘গতকাল এ সময়ে তিন হাজার টাকার মাল বিক্রি করেছি। আর আজ এখন পর্যন্ত বিক্রিবাট্টা নেই। আমরা রাজনীতি করি না, কিন্তু ক্ষতিটা আমাদেরই হয়।’ অস্থিরতা দেখা দিলে তাঁদের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানান তিনি।
একইভাবে পাশের দোকানের মো. রুবেল মিয়া ভয়ে ভয়ে সকাল ১১টায় দোকান খুলেছেন। তবে দুপুর দুইটা নাগাদ এক টাকাও বিক্রি করতে পারেননি। তবে গতকাল এই সময়ে তিনি এক হাজার টাকার জামাকাপড় বিক্রি করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘অন্যরা দোকান খুলেছে, তাই ভয় থাকলেও অন্যের দেখাদেখি দোকান খুলেছি।’ বিকেলে ক্রেতা বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি। তবে অন্য বিক্রেতারা বলছেন, রাতে গাড়িতে আগুন দিলে আতঙ্ক আরও বাড়তে পারে। ফলে মানুষ বের না হলে বিক্রি করা যাবে না।
নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চাঁদনী চক, নুরজাহান এবং গাউসুল আজম সুপার মার্কেটের সব দোকান খোলা রয়েছে। তবে মানুষের উপস্থিতি কম থাকায় বেচাবিক্রি তেমন নেই। রাস্তায় গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ির উপস্থিতও কম। তবে রিকশা চলছে সব সড়কে।
এ ছাড়া ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও ফার্মগেট এলাকায়ও দোকানপাট খোলা ছিল। ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ারে গিয়ে দেখা যায় দোকানগুলো খোলা রয়েছে। সামনে নিরাপত্তাকর্মীরাও তৎপর। তবে ভেতরে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতা নেই বললেই চলে। একই অবস্থা অরচার্ড পয়েন্ট এবং সিটি কলেজের পাশের হ্যাপি অর্কিড শপিং মলের। এদিকে ধানমন্ডির প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় বন্ধ রয়েছে আশপাশের ছোট খাবারের দোকানগুলো।
এদিকে মোহাম্মদপুর এলাকায় বৃহস্পতিবার মার্কেটগুলোতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। তবে টাউন হল মার্কেটের খাতার দোকানগুলো খোলা থাকলেও ভেতরের দোকানপাট ছিল বন্ধ। পাশের শহীদ পার্ক মার্কেটের রংপুর সাইন নামের একটি দোকানের বিক্রেতা বলেন, সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় অধিকাংশ দোকান বন্ধ।
এর আগে আজকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব দোকান ও বিপণিবিতান খোলা থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল দোকান মালিকেরা। বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি ও ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির স্থায়ী কমিটির যৌথ সভা শেষে এমন সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল। বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি মো. নাজমুল হাসান মাহমুদ এবং ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি মো. আরিফুর রহমান টিপুর স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছিল।