প্রচণ্ড গরমে বাজারে ক্রেতা কম

চাল, ডাল, আটা, ময়দা, সয়াবিনের মতো পণ্যের সঙ্গে মাছ ও মাংসের দামও উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল হয়ে আছে।

কাঁচাবাজারফাইল ছবি

দেশের বেশির ভাগ এলাকায় দাবদাহ চলছে। রাজধানী ঢাকাতেও একই অবস্থা। ফলে খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন না। তীব্র গরমের এই প্রভাব বাজারগুলোতেও দেখা গেছে। ক্রেতারা বাজারে আসছেন কম। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বেচাকেনায় গতি নেই। বাজারেও পণ্যের দামে বড় কোনো পরিবর্তন নেই। চাল, ডাল, আটা, ময়দা, সয়াবিনের মতো পণ্যের সঙ্গে মাছ ও মাংসের দামও উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল হয়ে আছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালী, তেজগাঁও কলমিলতা বাজার, মগবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তাপপ্রবাহের কারণে দিনের বেলা বাজারে ক্রেতারা আসছেন না বললেই চলে। অল্প কিছু ক্রেতা বাজারে এলেও তাঁরা মাছ-মাংসের চেয়ে সবজি কিনতে বেশি আগ্রহী। গরমে গরুর মাংসের মতো পণ্যের চাহিদা বেশ কমেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। 

মহাখালী বাজারের মাংস বিক্রেতা মোহাম্মদ ডালিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোজার মধ্যেও প্রতিদিন দুইটা গরু বিক্রি করেছি। ঈদের পরে বাজারে ক্রেতা নেই বললেই চলে। এখন একটা গরু জবাই দিয়ে দুই দোকানে ভাগাভাগি করে বিক্রি করছি। তা-ও ক্রেতারা অতিরিক্ত গরমের কারণে এক-দুই কেজির বেশি মাংস নিচ্ছেন না।’

ঈদের পর থেকে বাজারে ক্রেতার ভিড় কম ছিল। এখন গরমের কারণে পণ্যের চাহিদাও কমেছে। পরিবেশকেরাও সেভাবে আসছেন না। সব মিলিয়ে বাজার কিছুটা ঢিলেতালে চলছে।
মামুন হোসেন, কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা  

তবে ক্রেতা না থাকলেও গরুর মাংসের দাম কমেনি। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়। খাসির মাংসের দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম অবশ্য অল্প কমেছে। কেজিপ্রতি আড়াই শ টাকা থেকে কমে ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। সোনালি মুরগির দাম কমেনি, বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকায়। বাদামি রঙের ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১২০ টাকা। সাদা ডিম ১০ টাকা কম।

বাজারে মাছের দামে বড় কোনো পরিবর্তন নেই। সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। পটোল, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গার মতো অধিকাংশ সবজি কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধুন্দুল ও ঝিঙের দাম পড়ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। বাজারে অবশ্য আলুর দাম চড়া। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। 

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি কমবেশি ৬০ টাকায়। তবে কিছুটা বাড়তির দিকে আদা ও রসুনের দাম। মানভেদে মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১৪০ টাকার মধ্যে। নতুন দামের সয়াবিন বাজারে এসেছে, যদিও সরবরাহ এখনো কম। এক লিটারের বোতলজাত তেলের দাম ১৬৭ টাকা।

কারওয়ান বাজারের শাহ মিরান স্টোরের বিক্রেতা মামুন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদের পর থেকে বাজারে ক্রেতার ভিড় কম ছিল। এখন গরমের কারণে পণ্যের চাহিদাও কমেছে। পরিবেশকেরাও সেভাবে আসছেন না। সব মিলিয়ে বাজার কিছুটা ঢিলেতালে চলছে।’

ঈদের পরে চালের দামে পরিবর্তন আসেনি। আটা ও ময়দার দামও আগের মতোই আছে। চিনির দাম কিছুটা কমে কেজিপ্রতি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মগবাজারের ক্রেতা নেছার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গরমে বাসার সবাই হালকা খাবার পছন্দ করছে। এ জন্য ছোট মাছ আর
মুরগির সঙ্গে বেশ কয়েক পদের সবজি কিনলাম।’ পণ্যের দাম ঈদের আগের মতোই আছে বলে জানালেন তিনি।