এক সপ্তাহে কেজিতে ১০০ টাকা বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম

কাঁচা মরিচছবি: প্রথম আলো

মানিকগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে আবারও কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত বছরের এই সময়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল বলে চাষি ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদার চেয়ে বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম। কৃষকদের কাছ থেকেই বেশি দামে কাঁচা মরিচ কিনতে হচ্ছে। এতে প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। আর মরিচচাষিরা বলছেন, এবার খরায় গাছের পাতা কুঁকড়ে যাওয়ায় কাঁচা মরিচের ফলন আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। বেশি দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি করলেও ফলন কম হওয়ায় লোকসানে পড়েছেন তাঁরা।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল প্রথম আলোকে বলেন, সরবরাহ কমলে পণ্যের দাম বাড়ে। তবে তা অস্বাভাবিক কি না, সেটা দেখার বিষয়। কাঁচা মরিচের দাম বাড়ার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে অতিরিক্ত বেশি দরে বিক্রি হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গতকাল রোববার সকালে সদর উপজেলার ভাটবাউর কাঁচামাল আড়তের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে মরিচের সরবরাহ কম। এ কারণে খুচরা বাজারেও কাঁচা মরিচ কম। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি করা হয়। আর খুচরা বাজারে তা ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমে মরিচের এমন দামে অস্বস্তির মধ্যে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি মরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় কিনেছেন তাঁরা।

সদর উপজেলার দীঘি গ্রামের কৃষক খোকন মিয়া গতকাল সকালে জেলা সদরের জয়রা এলাকায় খুচরা বাজার থেকে ৫০ টাকায় ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ কেনেন। তিনি বলেন, মানিকগঞ্জে ব্যাপক কাঁচা মরিচের আবাদ হয়। গত বছর এই সময়ে দাম ছিল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এখন ২৫০ গ্রাম মরিচ কিনতেই লাগছে ৫০ টাকা।

দেশের মরিচ উৎপাদনের জেলাগুলোর মধ্যে মানিকগঞ্জ অন্যতম। জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে হরিরামপুর, শিবালয় ও ঘিওরে ব্যাপকভাবে মরিচের আবাদ হয়। তবে এবার খরায় মরিচের আবাদ কমেছে। ফলে দাম বেশি হলেও ফলন কম হওয়ায় চাষিরা লাভবান হতে পারছেন না।

হরিরামপুর ‍উপজেলার দক্ষিণ গোড়াইল গ্রামের চাষি ইব্রাহিম মিয়া বলেন, এ বছর তিনি ৮০ শতক জমিতে মরিচের চাষ করেছেন। অতিরিক্ত খরায় অনেক মরিচগাছের পাতা কুঁকড়ে গেছে। এতে গাছের ফুল ঝরে যাচ্ছে। ফলে মরিচও কম ধরছে। এবার দাম কিছু বেশি হলে ফলন কম হওয়ায় লাভ খুব একটা হচ্ছে না।