সাদা পোশাকের নার্সদের কাছে সেবা পেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন রোগীরা

নার্স বলতেই আমরা চিনি সাদা পোশাকের একজন মানুষকে।
ছবি: সংগৃহীত

সমাজে এমন পেশাজীবী রয়েছেন, যাঁরা মানুষের কল্যাণে, সেবায় নিজেদের মেধা, জ্ঞান আর সময় উৎসর্গ করেন। পেশা হিসেবে গতানুগতিক পরিচয়ের বাইরে এসে মানবিকতা আর সহমর্মিতার পরশে তাঁরা হয়ে ওঠেন মহান। তেমনই একজন মিনতি হাজরা। তিনি কাজ করছেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স (নার্সিং ইনচার্জ) হিসেবে।

নার্সদের কাছে অনেক রোগী আসেন মুমূর্ষু অবস্থায়। এ রকমই এক অভিজ্ঞতা সম্পর্কে মিনতি বলেন, ‘একদিন আমাদের হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় এক রোগী এল। কর্তব্যরত চিকিৎসক দেখার পর রোগীর আত্মীয়রা তার বেঁচে থাকার আশা মোটামুটি ছেড়েই দিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে চিকিৎসক ও আমরা মিলে একটা গাইডলাইন তৈরি করি। সে গাইডলাইন অনুযায়ী আমরা কাজ করতে থাকি এবং রোগীকে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিতে থাকি।

রোগী আস্তে আস্তে সুস্থ হতে থাকেন। কয়েক দিন পর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যান। আর মৃত্যুপথযাত্রী রোগীটি সুস্থ হয়ে হাসিমুখে বাসায় ফিরে যাওয়ার সময় আমাদের জন্য রেখে গিয়েছিলেন আশীর্বাদ, দোয়া ও ভালোবাসা।’

হাসপাতালে কোনো রোগী ভর্তি হওয়ার পর থেকে মিনতি হাজরার মতো নার্সরাই সার্বক্ষণিক তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখেন। তাই তাঁরা হয়ে ওঠেন রোগীদের কাছে প্রিয়জনের চেয়ে অতি প্রিয়, যাঁদের নিরন্তর চেষ্টা থাকে রোগীর সুস্থতা নিশ্চিত করা। সেবার মহান ব্রত নিয়েই কাটে তাঁদের সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত।

আর নার্স বলতেই আমরা চিনি সাদা পোশাকের একজন মানুষকে। সাদা পোশাক পরার কারণ জানাতে গিয়ে মিনতি হাজরা বলেন, ‘সাদা পোশাকে ময়লা লাগলে আমরা অতি সহজেই বুঝতে পারি। আর এতে রোগী কোনো জীবাণু থেকে আক্রান্ত হবেন না এবং আমার পেশার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন অবস্থায় রোগীর কাছে গেলে তাঁরাও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ফলে, আমার কাছ থেকে সেবা নিতে তাঁরা আগ্রহবোধ করবেন।’

সাদা পোশাক কীভাবে পরিষ্কার করেন? উত্তরে মিনতি হাজরা বলেন, ‘সারা দিনের কাজ শেষ করে বাসায় গিয়ে সবার আগে ইউনিফর্মটা ডিটারজেন্টে ভিজিয়ে রাখি এবং ওয়াশ করে পরদিন ওই ইউনিফর্ম পরে কর্মস্থলে আসি। সাদা পোশাক পরে রোগীর পাশে দাঁড়াই সেবাদানের জন্য।’

সাদা কাপড় যাঁদের অনুপ্রেরণা জোগায়, ক্লান্তিহীন সেবাদানের জন্য জোগায় শক্তি আর সাহস, সেসব নার্সকে জানাই সশ্রদ্ধ স্যালুট।