রুশ তেলের দাম ব্যারেলে ৩০–৪০ ডলার হোক: জেলেনস্কি

জ্বালানি তেল
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেন ও তার মিত্ররা চায়, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ ডলারে বেঁধে দিক। কিন্তু ইউরোপীয় কূটনীতিকদের এক বৈঠক সূত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, রুশ তেলের দাম ৬৫ থেকে ৭০ ব্যারেল নির্ধারণ করা হতে পারে। তবে এই দর নিয়েও বিতর্ক আছে। কারণ, জ্বালানির এই দর বর্তমানে রুশ অপরিশোধিত তেলের দরের কাছাকাছি।

স্বাভাবিকভাবেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পশ্চিমাদের ভাবনার সঙ্গে একমত নন। তাঁর মত, রুশ তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৬০ ডলার নির্ধারণ করা হলে বিষয়টি কৃত্রিম হয়ে যাবে। ইউক্রেনের পাশাপাশি পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া ও লিথুয়ানিয়াও মনে করে, রুশ তেলের দর ৬০ ডলারের অনেক কম নির্ধারণ করা হোক। তবে গ্রিস, সাইপ্রাস ও মাল্টা মনে করে, রুশ তেলের দাম একটু বেশি নির্ধারণ করা হোক। খবর ইকোনমিক টাইমসের।

বাস্তবতা হচ্ছে, পশ্চিমারা  এখনো ঠিক করতে পারছে না, রাশিয়ার তেলের দাম ঠিক কত নির্ধারণ করা হলে ক্রেমলিন প্রকৃত অর্থে চাপের মুখে পড়বে।

ইউক্রেনের ওপর হামলার পর থেকে রাশিয়ার জ্বালানিতে পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা দিলেও চীন, ভারতসহ অনেক দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে। সে জন্য পশ্চিমা শক্তিগুলো গত সেপ্টেম্বর মাসে সিদ্ধান্ত নেয়, ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে এ বিষয়ে বিস্তারিত হোমওয়ার্ক করে ফেলবে তারা। মূলত তেল বিক্রি করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যেন যুদ্ধের ব্যয় নির্বাহ করতে না পারেন, সে লক্ষ্যেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পশ্চিমারা। ডিসেম্বর চলে এসেছে, কিন্তু রাশিয়ার তেলের দাম ঠিক কত হওয়া উচিত বা দাম কত নির্ধারণ করা হলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিপাকে পড়বেন, সে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি পশ্চিমা শক্তিগুলো। খবর বিবিসির

বিবিসির পণ্য কৌশল বিভাগের প্রধান হেলিমা ক্রফট বলেছেন, ‘দাম নির্ধারণের এই উদ্যোগ কার্যত মূল্যস্ফীতির রাশ টানার উদ্যোগ, রাশিয়ার রাজস্ব আয় বন্ধের উদ্যোগ নয়।’ চলতি মাসের শুরুতে রাশিয়ার উরাল ক্রুড তেলের দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ৭০ ডলারের কিছু বেশি, যেখানে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ছিল তখনর ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলারের ওপর।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েন গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘শিগগিরই আমরা রুশ তেলের দাম নির্ধারণের বিষয়ে একমত হব বলে আশাবাদী, জি-৭-ভুক্ত দেশ ও অন্যান্য সহযোগী দেশ এ বিষয়ে একমত হবে।’ অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তেলের দাম বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য হচ্ছে।

বিষয়টি হচ্ছে, আগামী ৫ ডিসেম্বর থেকে সমুদ্রপথে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল সরবরাহে ইউরোপের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। পশ্চিমা দেশগুলো আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে রুশ তেলের দাম নির্ধারণের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে চায়। কারণ, যেসব জাহাজ রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল পরিবহন করবে, তাদের ক্ষেত্রে বিমা প্রযোজ্য হবে না। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে চীন, ভারতসহ আর যেসব দেশ রাশিয়া থেকে তেল কিনছে, তারা বিপাকে পড়বে। কারণ, জাহাজের অধিকাংশ বিমাকারী ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক।