আয়কর রিটার্ন জমা দেননি, এখন কী করবেন

আয়কর রিটার্নগ্রাফিকস: প্রথম আলো

ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক রিটার্ন দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে গত ৩১ জানুয়ারি। এবার রিটার্ন জমা দিতে দুই মাসের অতিরিক্ত সময় দেওয়া হলেও অনেকেই রিটার্ন দিতে পারেননি। রিটার্ন জমা না দেওয়ায় বিপাকে পড়বেন তাঁরা। এখন করদাতারা রিটার্ন জমা দিতে পারবেন, তবে তাঁরা কোনো কর রেয়াত পাবেন না এবং তাঁদের জরিমানাও দিতে হবে।

রিটার্ন জমার নির্ধারিত শেষ দিন ছিল গত ৩০ নভেম্বর। কিন্তু পরে তা বাড়িয়ে ৩১ জানুয়ারি করা হয়। গত বুধবার এই সময়ও শেষ হয়ে গেছে।

নতুন আয়কর আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত সময় পেরোনোর পর যাঁরা রিটার্ন জমা দেবেন, তাদের যাতায়াত ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, মোবাইল ও ইন্টারনেট ভাতা—এ ধরনের ভাতার ওপর কর বসবে। এসব আয়ে কোনো কর রেয়াত মিলবে না। বিনিয়োগজনিত কর রেয়াতসহ সব ধরনের কর–সুবিধা বাতিল হয়ে যাবে। এতে তুলনামূলকভাবে বেসরকারি চাকরিজীবী করদাতারা বেশি বিপাকে পড়বেন।

একজন চাকরিজীবী করদাতা মূল বেতন ছাড়াও যাতায়াত, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ধরনের ভাতা পান। নতুন আইনে এসব ভাতা থেকে প্রাপ্ত অর্থের মধ্যে সাড়ে চার লাখ টাকা পর্যন্ত কিংবা বার্ষিক মোট আয়ের দুই-তৃতীয়াংশের মধ্য যেটি কম, তা করমুক্ত থাকবে। কিন্তু এখন ওই করদাতা রিটার্ন দিতে গেলে এই সুবিধা বাদ যাবে।

কর কমানোর উপায় হচ্ছে নির্দিষ্ট কিছু খাতে বিনিয়োগ করা। যেমন সঞ্চয়পত্র, শেয়ারবাজার, বন্ড ইত্যাদি। এসব খাতে বিনিয়োগ করলে কর রেয়াত পাওয়া যায়। কিন্তু এখন রিটার্ন দিলে বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত নেওয়া যাবে না। এ ছাড়া কোনো করদাতা প্রবাসী আয় পেলে কিংবা বিদেশ থেকে কোনো আয় এলে তা করমুক্ত হয়। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে রিটার্ন জমা না দেওয়ার কারণে এখন সেই সুবিধাও মিলবে না।

নতুন আয়কর আইন অনুযায়ী, কর দিবস–পরবর্তী যেকোনো সময় করদাতা রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। ওই করদাতার মোট করের ওপর জরিমানা আরোপের সুযোগও আছে। আইনে উপ–কর কমিশনারকে প্রদেয় করের ওপর ১০ শতাংশ হারে জরিমানা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই জরিমানা পরিমাণ হবে সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা। প্রয়োজনে প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা করে জরিমানা আরোপ করা যাবে। রিটার্ন জমা দিচ্ছেন কিন্তু আরোপযোগ্য কর হয়নি, এমন করদাতাদের সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা যাবে।

দেশে বর্তমানে প্রায় ৯৯ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। এ বছর তাঁদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩৫ লাখ ৪০ হাজার ৪০৬ জন করদাতা রিটার্ন জমা দিয়েছেন। এ সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় পাঁচ লাখের কিছু বেশি। এ বছর রিটার্ন বাবদ কর পাওয়া গেছে ৫ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা।