চ্যাটজিপিটির পাল্টা বট বার্ড নিয়ে আসছে গুগল

গুগল
ফাইল ছবি: রয়টার্স

চ্যাটজিপিটির বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে গুগল সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে—এমনটাই ধারণা করা হচ্ছিল। কারণ, গুগলের সার্চ ইঞ্জিন যেখানে মানুষকে নানা ধরনের সূত্র ধরিয়ে দিয়েই ক্ষান্ত হয়, সেখানে চ্যাটজিপিটি রীতিমতো লিটরেচার রিভিউ করে দেয়। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই জগতে গুগলও পিছিয়ে থাকতে চাইবে না, এটাই স্বাভাবিক।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগতে গুগলও তার সার্চ ইঞ্জিনে চ্যাটবট যুক্ত করতে যাচ্ছে। কোম্পানির প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাই জানিয়েছেন, পরীক্ষামূলকভাবে বার্ড (বিএআরডি) নামের এক এআই সেবা নিয়ে আসছে গুগল। আপাতত ব্যবহারকারীদের মতামত নেওয়ার জন্য তা বাজারে ছাড়া হবে। খবর রয়টার্সের।

আরও পড়ুন

সুন্দর পিচাই বলেছেন, গুগল তার সার্চ ইঞ্জিনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত করবে, যা অনেক জটিল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে। যেমন গিটার নাকি পিয়ানো বাজানো সহজ—এমন প্রশ্নের উত্তরও দেবে গুগলের নতুন এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বার্ড। যদিও বর্তমানে গুগল সার্চ ইঞ্জিন শুধু সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিরাজমান নানা টেক্সট বিভিন্ন উৎস থেকে খুঁজে বের করে হাজির করে।

গুগল শিগগিরই সার্চ ইঞ্জিনের হালনাগাদ প্রকাশ করবে, তবে কবে প্রকাশ করবে, তার দিনক্ষণ এখনো জানায়নি।

তবে গুগল কীভাবে চ্যাটজিপিটি থেকে বার্ডকে আলাদা করবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। পিচাই বলেছেন, গুগলের নতুন সেবা অন্তর্জাল থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে, যেখানে চ্যাটজিপিটির জ্ঞান ২০২১ সাল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ।

গুগল ইতিমধ্যে বার্ডের ডেমো শুরু করেছে। দেখা গেছে, বার্ড ব্যবহারকারীদের প্রশ্ন করতে বা কিছু বলতে উৎসাহিত করে। তাকে মহাশূন্য গবেষণায় ব্যবহৃত টেলিস্কোপ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সে বুলেট আকারে উত্তর দেয়। তবে চ্যাটজিপিটির মতো সে–ও ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে, তার উত্তর যথার্থ নাও হতে পারে।

কোম্পানি হিসেবে গুগলের বাজারমূল্য ১ লাখ ১০ হাজার কোটি ডলার। মার্কিন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ডিএ ডেভিডসনের হিসাব, কোম্পানি হিসেবে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে গুগল সার্চ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সার্চ থেকে বার্ষিক ১২০ বিলিয়ন বা ১২ হাজার কোটি মার্কিন ডলার আয় করে গুগল। অন্যদিকে, বিং থেকে মাইক্রোসফটের আয় মাত্র ১১ বিলিয়ন বা ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার। দীর্ঘ মেয়াদে চ্যাটজিপিটি যুক্ত করলে গুগলকে টক্কর দিতে পারবে বিং।

আরও পড়ুন

গত নভেম্বর মাসে চ্যাটজিপিটির পরীক্ষামূলক ভার্সন চালু হয়। এরপর সারা পৃথিবীতে তা আলোড়ন সৃষ্টি করে। তথ্য বিশ্লেষণকারী সংস্থা ইউবিএস জানিয়েছে, ডিসেম্বর মাসে ৫ কোটি ৭০ লাখ ইউনিক ভিজিটর চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেছেন।

২০১৯ সালে মাইক্রোসফট ওপেনএআইয়ে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে। এর মাত্র সাত বছর আগে স্যাম অ্যাল্টম্যান, ইলন মাস্কসহ কয়েকজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এই ওপেনএআই গড়ে তোলেন। তবে মাইক্রোসফট প্রথমে জানায়নি, ঠিক কত অর্থ তারা সেখানে বিনিয়োগ করেছিল। পরবর্তী সময় এমআইটি টেক রিভিউ নামের একটি অনলাইন সাইটে ২০২০ সালে বলা হয়, মাইক্রোসফট ওপেনএআইয়ে নগদ অর্থ ও তাদের ক্লাউড ব্যবসা অ্যাজিউরের সুবিধা মিলিয়ে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।

এরপর গত জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে ওপেনএআইয়ে ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেয় মাইক্রোসফট।