ফ্যান বিক্রি বেড়েছে, দাম চড়া

সরকার এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের ঘোষণা দিতেই বেড়ে গেছে চার্জার ফ্যানের চাহিদা। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

ছবি: দীপু মালাকার

সারা দেশে প্রচণ্ড দাবদাহ পরিস্থিতিতে সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সূচি জানাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ইলেকট্রনিক পণ্যের বাজারে। ফ্যান, চার্জার ফ্যান, এয়ারকুলার ইত্যাদির বিক্রি বেড়েছে।

বাজারে বিশেষ করে চার্জার ফ্যানের কাটতি সবচেয়ে বেশি। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও বেড়েছে। রাজধানীর গুলিস্তানের স্টেডিয়াম মার্কেট, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পাশের ফুটপাত, মগবাজার ও কারওয়ান বাজারের ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক পণ্যের বিভিন্ন মার্কেট ও দোকান ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এখন ক্রেতারা চার্জার ফ্যানের পাশাপাশি চার্জার লাইট এবং আইপিএসও কিনছেন।

এ বছর বাজারে সিলিং, টেবিল ও চার্জার ফ্যানের চাহিদা বিবেচনায় উৎপাদন সক্ষমতা দ্বিগুণ করা হচ্ছে। আশা করছি, আগামী বছর ১৫০ শতাংশের মতো উৎপাদন প্রবৃদ্ধি হবে।
ফিরোজ আলম, প্রধান বিপণন কর্মকর্তা, ওয়ালটন

গুলিস্তানের স্টেডিয়াম মার্কেটের শরিফ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শরিফুল মুসলেমিন বলেন, ‘তিন মাস ধরে প্রতি মাসে সব মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক ফ্যান বিক্রি করে আসছি। এর মধ্যে গত এক মাসে শুধু চার্জার ফ্যান বিক্রি করেছি ৪০০টি। বাজারে সব ধরনের ফ্যানের সরবরাহ কম। আমদানি কম তাই পণ্য মিলছে না। তাতে দাম বেড়েছে। এক মাস আগে যে ফ্যান ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করেছি, এখন তা ৩ হাজার।’

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে বাজারে দেশি–বিদেশি সব ব্র্যান্ডের প্রতিটি চার্জার ফ্যান বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। গত এক মাসে প্রতিটি চার্জার ফ্যানের দাম বেড়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। সাধারণ টেবিল ফ্যানের দাম রাখা হচ্ছে এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। দেশি ব্র্যান্ডের সিলিং ফ্যান কিনতে গেলে দাম রাখা হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া বিদেশি ব্র্যান্ডের একটি সিলিং ফ্যান কিনতে হলে গুনতে হবে চার হাজার থেকে আট হাজার টাকা।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ফয়েজ ইলেকট্রিক স্টোরের মালিক ফয়েজ আহমেদ বলেন, গরমের সময় ফ্যানের চাহিদা বেশি থাকে। এর সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে বিদ্যুতের সমস্যা। ফলে চার্জার ফ্যানের বিক্রি বেশি বেড়েছে।

বাজারে ফ্যান-এসির চাহিদা বাড়ায় এসব পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানিও ভালো ব্যবসা করছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন বলছে, বর্তমানে তাদের ১০ প্রকারের ফ্যান বাজারে রয়েছে। এর মধ্যে সিলিং, টেবিল, চার্জার, টর্নেডো, নেট, বিএলডিসি, এগজস্ট, ওয়াল, স্ট্যান্ড ও সোলার ফ্যান অন্যতম। গত তিন বছরে প্রতিষ্ঠানটি ৫০ লাখ ফ্যান বিক্রি করেছে। চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রা ২০ লাখ।

এ বিষয়ে ওয়ালটনের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ফিরোজ আলম বলেন, ‘এ বছর বাজারে সিলিং, টেবিল ও চার্জার ফ্যানের চাহিদা বিবেচনায় উৎপাদন সক্ষমতা দ্বিগুণ করা হচ্ছে। আশা করছি, আগামী বছর ১৫০ শতাংশের মতো উৎপাদন প্রবৃদ্ধি হবে।’

ফ্যান-এসির বেচাকেনা বেশ ভালো উল্লেখ করে যমুনা ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড অটোমোবাইলসের বিপণন পরিচালক সেলিম উল্লাহ বলেন, ‘গত দুই বছরের তুলনায় এবার তিন গুণ বেশি বেচাকেনা হচ্ছে।’