প্রাণের ভাষায় বিশ্বজুড়ে ‘প্রাণ’-এর পণ্য

প্রাণের পণ্য বিশ্বের ১৪৫টি দেশে রপ্তানি করা হয়
ছবি: সংগৃহীত

পণ্যের মাধ্যমে বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ‘প্রাণ-আরএফএল’ গ্রুপ। বিশ্বের ১৪৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে ‘প্রাণ’–এর পণ্য। এর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশের কথা, বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কথা।

‘প্রাণ’–এর পণ্যে ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণের ভাষা, এ অনুভূতি কেমন? উত্তরে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য এবং প্রাণ গ্রুপের জন্য অনেক গৌরবের। এ দেশের মানুষের জন্য গৌরবের। আমাদের পণ্যগুলোর মাধ্যমে বিশ্ববাসী জানতে পারছে, এমন একটা দেশ আছে।

এমন একটা গৌরবের ভাষা আছে। দেশের বাইরে কোনো একটি সুপারশপে প্রাণের পণ্য প্রদর্শিত হলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আনন্দের সঙ্গে নিজেদের পণ্যকে সেখানকার মানুষদের পরিচয় করিয়ে দেয়। বাংলায় “প্রাণ” মানে যে ইংরেজি “হার্ট”, এটাও জানিয়ে দেয়। তাই প্রাণের পণ্যের মাধ্যমে আমরা আসলেই প্রাণের ভাষাকে ছড়িয়ে দিতে পারছি। ভাষার মাসে এটা আমাদের অহংকার।’

যে পণ্য এত গৌরব এনে দিল আমাদের, তার যাত্রা শুরু হয়েছিল কবে? এমন প্রশ্ন মনে উঁকি দিতেই পারে। ১৯৮৫ সালে অ্যাগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কোম্পানি লিমিডেট, প্রাণ-এর যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানটি নরসিংদীতে জমি ইজারা নিয়ে শুরুতে প্রাণ রজনীগন্ধা ফুল, কলা, পেঁপে ও আনারস উৎপাদন করত। ঢাকায় এনে কারওয়ান বাজারে বিক্রি করত।

দেখা গিয়েছিল, মৌসুমের সময় তেমন দাম পাওয়া যেত না। তখন প্রতিষ্ঠাতা আমজাদ খান চৌধুরী আনারস প্রক্রিয়াকরণের কারখানা করার চিন্তা করলেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালে ফ্রান্সে কৌটায় আনারস রপ্তানি করে প্রাণের রপ্তানি শুরু। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

আমজাদ খান চৌধুরীর সুযোগ্য পুত্র আহসান খান চৌধুরী জানান, বর্তমানে ভারত, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, ওমান, মালয়েশিয়া, ভেনেজুয়েলা, বলিভিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, ইথিওপিয়াসহ বিশ্বের ১৪৫টি দেশে পণ্য রপ্তানি করছে গ্রুপটি।

রপ্তানিকৃত পণ্যের মধ্যে আছে জুস ও ফলের জুস, পানীয়, স্ন্যাক্স, ড্রিংকস, বিস্কুট ও বেকারি, সস, কেচাপ, নুডলস, জেলি, মসলা, ফ্রোজেন ফুডস, কনফেকশনারি, তৈরি পোশাক, গৃহস্থালি প্লাস্টিক, শপিং ব্যাগ, হ্যাঙ্গার, ফার্নিচার, বাইসাইকেল ও জুতা।

বাংলাদেশের শীর্ষ ও সম্ভাবনাময় ১০টি রপ্তানি খাতের মধ্যে ৭টি খাতে প্রাণ-আরএফএল পণ্য রপ্তানি করে। এই গ্রুপের পণ্য এখন বিভিন্ন দেশের নামীদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বিখ্যাত সব চেইনশপে স্থান করে নিয়েছে, যা দেশের জন্য গৌরবের। ওয়ালমার্ট, ক্যারিফোর, লবলোজ, আলদি, লিডল, মাইডিন, ডলারামা ও টেসকোর মতো চেইনশপে পাওয়া যায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পণ্য।

এখন সময় দেশের রপ্তানি খাতে বৈচিত্র্য আনার। বাংলাদেশের রপ্তানি-বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনতে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। বিশ্বের প্রতিটি দেশেই প্রাণ-আরএফএলের পণ্য রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের, যার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে যাবে বাংলাদেশের নাম। ভবিষ্যতে সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে বিশ্বের কমপক্ষে ৪-৫ জায়গায় পণ্য উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে গ্রুপটির।