ঈদের আগে হঠাৎ দ্বিগুণ শসার দাম, কেজি ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে

কোরবানি ঈদের আগে হঠাৎ বেড়েছে শসার দাম। তিন–চার দিনের ব্যবধানে শসার দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে কাঁচা মরিচ, গাজর, টমেটো ও লেবুর দামও।

মূলত ঈদের সময় সালাদের জন্য শসা, গাজর, টমেটো, কাঁচা মরিচ প্রভৃতি পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু সরবরাহ স্বাভাবিকের তুলনায় বাড়ে না। এ কারণে পণ্যগুলোর দামও বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগেও বাজারে প্রতি কেজি হাইব্রিড জাতের শসা বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। তবে আজ শুক্রবার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি হাইব্রিড শসা বিক্রি হয় ১০০ টাকায়। অন্যদিকে এক সপ্তাহ আগে খুচরায় দেশি জাতের প্রতি কেজি শসার দাম ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। সেই শসা আজ শুক্রবার বিক্রি হয় বাজারভেদে ১২০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকায়; অর্থাৎ কয়েক দিনের ব্যবধানে শসার দাম বেড়ে দ্বিগুণ বা তার বেশি বেড়েছে। আজ শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে বাজারের এই চিত্র পাওয়া গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে শসার সরবরাহ আগের মতোই রয়েছে। তবে ঈদের কারণে হঠাৎ করে শসার চাহিদা বেড়ে গেছে। এ কারণে চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এই সুযোগে কৃষক থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত সরবরাহ শৃঙ্খলের সবাই কিছু কিছু দাম বাড়িয়েছেন। তাতে শেষ পর্যন্ত শসার দাম বেড়ে ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। শসার পাশাপাশি কাঁচা মরিচের দামও বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সপ্তাহখানেক আগে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সেই দাম বেড়ে আজ শুক্রবার প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয় ১২০ থেকে ১৬০ টাকায়।

কোরবানির এই সময়ে সালাদ অন্যতম অনুষঙ্গে পরিণত হয়। আর সালাদ তৈরিতে শসা, কাঁচা মরিচের পাশাপাশি গাজরও ব্যবহার করা হয়। আবার অনেকে ঈদের দিন গাজর দিয়ে নানা স্বাদের খাবার তৈরি করে থাকেন। এ কারণে বাজারে গাজরের চাহিদাও হঠাৎ করে বেড়েছে। বাজারে দেশি ও হাইব্রিড (চায়না)—এই দুই জাতের গাজর পাওয়া যায়। বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়; আর হাইব্রিড গাজরের কেজি আরও বেশি, ১৩০–১৬০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও উভয় ধরনের গাজর বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।

সাধারণ মানের টমেটোর দামও ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৫০ টাকা। বর্তমানে মানভেদে প্রতি কেজি টমেটো ৮০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ৮০ টাকার কম বাজারে কোনো টমেটো পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে দুই মাস ধরে ২০–৩০ টাকায় এক হালি লেবু বিক্রি হচ্ছিল। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে লেবুর দামও হঠাৎ করে হালিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে গেছে।

তবে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি, ফার্মের মুরগির ডিম এবং গরু ও খাসির মাংসের দাম আগের মতোই রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০–১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৬০–২৮০ টাকা এবং এক ডজন ডিম ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আজ রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে শসা, টমোটো কিনতে যান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী রেদোয়ান ইসলাম। তিনি বলেন, গত কয়েক দিন অফিসের কাজের চাপে বাজার করতে পারিনি। আজ বাজারে এসে দেখি, সালাদের জন্য দরকারি প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। চাহিদা বাড়লে দাম কিছুটা বাড়ে, তাই বলে এতটা দাম বাড়বে, প্রশ্ন রাখেন তিনি।