রাত ৯টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে চান ব্যবসায়ীরা

দোকান মালিক সমিতির নেতারা ভ্যাট নিয়ে ব্যবসায়ীদের হয়রানির অভিযোগও করেন সংবাদ সম্মেলনে। তাই ইএফডি মেশিনে ভ্যাট নেওয়ার দাবি।

ফাইল ছবি

নভেম্বর মাসে শীতকালীন ব্যবসার মৌসুম শুরু হবে। আর এই মৌসুমে রাত আটটার বদলে নয়টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে চান ব্যবসায়ীরা। এ জন্য আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি।

রাজধানীর মগবাজার কনভেনশন সেন্টারে গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। বর্তমানে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিপণিবিতান ও দোকানপাট খোলা থাকে। দোকান খোলা রাখার সময়সূচি পরিবর্তনের দাবির পাশাপাশি কর কর্মকর্তাদের হয়রানি বন্ধেরও দাবি জানানো হয়। দোকান মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, ভ্যাট নিয়ে এখন ব্যবসায়ীদের হয়রানির মুখে পড়তে হয়। তাই দেশের সব দোকান থেকে ইলেকট্রনিক ফিসকেল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিনের মাধ্যমে ভ্যাট আদায় নিশ্চিত করা জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘২০২০ সাল থেকে বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আর এ বছর যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। দুইয়ে মিলে ব্যবসায় দুর্দিন চলছে। আগামী মাসে শুরু হবে শীতকালীন মৌসুম। এই মৌসুমে কিছুটা ভালো ব্যবসা করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান ব্যবসায়ীরা। এ জন্য ১৫ নভেম্বর থেকে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখার দাবি জানাচ্ছি। প্রয়োজনে অর্ধেক বাতি জ্বালিয়ে দোকানপাট খোলা রাখা হবে।’

ভ্যাট নিয়ে ব্যবসায়ীদের হয়রানির বিষয়ে হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষ থেকে সারা দেশে দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে ইএফডি মেশিন সরবরাহের কথা ছিল। কিন্তু সেটি করতে এনবিআর ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমরা নিজেরা ইএফডি মেশিন কিনে নিতে সম্মত হই। কিন্তু এতেও এনবিআর ব্যর্থ হয়েছে। অথচ এনবিআরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ভ্যাটের জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতিনিয়ত হয়রানি করে চলেছেন। এসব কর্মকর্তার আচরণে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ।’

এ অবস্থায় দোকান মালিক সমিতি বলছে, ইএফডি মেশিন ছাড়া কোনো ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনা যাবে না। কারণ, নিবন্ধন নেওয়া মানেই মাসে মাসে রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক। এ ক্ষেত্রে অনেক সময় ভ্যাটের আওতায় না এলেও বাড়তি অর্থ খরচ করতে হয় ব্যবসায়ীদের।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সারা দেশে ইএফডি মেশিনের মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় হয়েছে। প্রতি মাসে ৩০–৩৫ কোটি টাকার ভ্যাট পাচ্ছে এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় সব মিলিয়ে ৭ হাজার ৮০০ ইএফডি মেশিন বসানো হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির মহাসচিব জহিরুল হক ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় কমিটির নেতারা।