ইইউতে গমসহ ফসলের ফলন কম হবে

গম
ছবি: সংগৃহীত

শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে চলতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) গমসহ অন্যান্য শস্যের উৎপাদন কমবে বলে সতর্ক করেছে কৃষি পরামর্শক সংস্থা স্ট্র্যাটেজি গ্রেইন। সংস্থাটির গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সর্বশেষ সমীক্ষা প্রতিবেদনে ইইউতে ফসলের ফলন কমার কথা বলা হয়েছে। খবর আরটির

স্ট্র্যাটেজি গ্রেইন গত জুন মাসে দেওয়া পূর্বাভাসে বলেছিল, এ বছরে ইইউতে ১২ কোটি ৪৪ লাখ টন গম উৎপাদন হবে। কিন্তু এখন ধারণা করছে, শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন কমবে। এ জন্য চলতি মাসে তাদের পূর্বাভাস কমিয়ে নতুন লক্ষ্যমাত্রার কথা জানিয়েছে।

সংস্থাটি এবার বলছে, ইইউতে এবার ১২ কোটি ৩৩ লাখ টন গম উৎপাদন হবে, যা তাদের আগের পূর্বাভাসের চেয়ে ১১ লাখ টন কম। গত বছর ইইউতে ১২ কোটি ৯৯ লাখ টন গম উৎপাদন হয়েছিল।

গমের পাশাপাশি বার্লির উৎপাদনও কমবে বলে নতুন পূর্বাভাস দিয়েছে স্ট্র্যাটেজি গ্রেইন। চলতি বছর ইউরোপের দেশগুলোতে বার্লি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫০৩ লাখ টন। কিন্তু জুলাই মাসের সমীক্ষায় সংস্থাটি বলছে, বার্লি উৎপাদনের এই লক্ষ্যমাত্রা কমে দাঁড়াবে ৪৯৬ লাখ টনে। ২০২১ সালে ইইউতে বার্লি উৎপাদন হয়েছিল ৫১৯ লাখ টন।

এ ছাড়া ভুট্টার ফলন এবার ৬৬৮ লাখ টনের লক্ষ্যমাত্রা থেকে কমে ৬৫৪ লাখ টন হতে পারে। গত বছর ৬৯৭ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদন হয়েছিল ইইউভুক্ত দেশগুলোতে।

চলতি মৌসুমের শুরুতে ইউরোপের অনেক দেশে অতিরিক্ত শুষ্ক আবহাওয়ার কথা উল্লেখ করে গম ও বার্লি ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার পূর্বাভাস কমিয়েছে গবেষণা সংস্থা স্ট্র্যাটেজি গ্রেইন। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, অনেক উৎপাদন অঞ্চলে বারবার পানির ঘাটতি ও গরম আবহাওয়া শস্য ফলনের সম্ভাবনাকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করছে।

ফসলের উৎপাদন কমার এই পূর্বাভাস এমন একসময়ে এল, যখন বিশ্বজুড়ে তীব্রভাবে শস্যসংকট অনুভূত হচ্ছে। কারণ, গত দুই মাসে বিশ্ববাজারে গমের দাম রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে।

বিরূপ আবহাওয়া ও করোনা মহামারির কারণে এমনিতে বিশ্বে খাদ্য সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। এর সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈশ্বিক খাদ্য বাজার আরেকটি বড় ধাক্কা খেয়েছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেন যৌথভাবে বিশ্বের এক-চতুর্থাংশের বেশি গম রপ্তানি করে। এ ছাড়া রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম সার রপ্তানিকারক দেশ। ফলে যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে সারা বিশ্বেই সরবরাহ ও দামে প্রভাব পড়েছে।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও ক্ষুধার আশঙ্কা বাড়ছে। জাতিসংঘ সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে বলেছেন, ৪৩টি দেশের ৪ কোটি ৯০ লাখ মানুষ ইতিমধ্যেই দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। খারাপ পরিস্থিতি এড়াতে বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপিত বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও), আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), ডব্লিউএফপি ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।