চট্টগ্রাম বন্দরে গাড়ির জট, রপ্তানি প্রক্রিয়া পুরোপুরি শুরু

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে রোববার সন্ধ্যার পর শুরু হয়েছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। ফলে ওই রাতেই সচল হতে শুরু করে বন্দরের কার্যক্রম। গতকাল সকাল থেকে পুরোদমে চলেছে জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ। আজ বেলা একটায় চট্টগ্রাম বন্দরেছবি: সৌরভ দাশ

দুই দিন অচলাবস্থার পর আজ সোমবার থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে। বন্দরে জাহাজে কনটেইনার ওঠানো–নামানো ও খালাস কার্যক্রমেও গতি বেড়েছে। তবে দুই দিন কাজ বন্ধ থাকায় বন্দরের ভেতরে আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রমের চাপ বেড়েছে। বন্দরের ভেতরে–বাইরে গাড়ির জট তৈরি হয়েছে।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে গত শনিবার থেকে গত রোববার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসসহ দেশের সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এতে অচল হয়ে যায় চট্টগ্রাম বন্দর। কারণ, কাস্টমসের অনুমোদন ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রপ্তানিসংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম শুরু করা যায় না। রোববার রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকায় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর রোববার রাতেই কাজ শুরু হয়েছিল। সোমবার থেকে পুরোদমে চলছে।

কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর আজ সোমবার সকালের মধ্যেই চট্টগ্রামের বেসরকারি ডিপোগুলো থেকে রপ্তানি পণ্যবোঝাই প্রায় দুই হাজার কনটেইনার বন্দরে পাঠানো হয়। এসব কনটেইনার জেটিতে অপেক্ষমাণ জাহাজে তুলে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় থাকা ডিপো থেকে রপ্তানি পণ্যবাহী গাড়ি বন্দরে নেওয়ার পথে বন্দর এলাকার আশপাশে গাড়ির জট তৈরি হয়েছে। বন্দর জেটিতে থাকা ১০টি কনটেইনার জাহাজে পুরোদমে কনটেইনার ওঠানো–নামানো হচ্ছে। সোমবার সকাল আটটার মধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার একক কনটেইনার জাহাজে ওঠানো–নামানো হয়েছে।

বন্দর ও শিপিং এজেন্টের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুদিনের কর্মসূচিতে কাজ বন্ধ থাকায় জাহাজের জট শিগগির কমছে না। কারণ, বন্দরে এক দিন কাজ বন্ধ থাকলে চার থেকে পাঁচটি জাহাজ কনটেইনারের জট তৈরি হয়। এই হিসাবে দুই দিনে আট থেকে নয়টি জাহাজের জট তৈরি হয়েছে। যেমন আজ সোমবার সকালের হিসাবে, বন্দরের জেটিতে ভেড়ানোর জন্য জেটিতে অপেক্ষমাণ কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা ছিল ২৪টি। কাস্টমস কর্মকর্তাদের কর্মসূচির আগে এই সংখ্যা ছিল ১৩। অর্থাৎ কর্মসূচি প্রত্যাহার হলেও জাহাজজট শিগগিরই কমছে না।

চট্টগ্রাম বন্দরসচিব মো. ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করার পর বন্দরে জাহাজে কনটেইনার ওঠানো-নামানো, স্থানান্তর, পণ্য খালাসসহ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে। খুব দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে বন্দর।

আমদানি ও রপ্তানিকারকের পক্ষে কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, দুই দিনে কোনো কার্যক্রম না হওয়ায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে জট তৈরি হয়েছিল। কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর গতকাল রাতে প্রথমে রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন শুরু হয়। জাহাজের নিবন্ধনসহ নানা অনুমোদনসংক্রান্ত কাজও শুরু হয়েছে। তবে বন্দর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েক দিন লাগবে।