পরিচর্যা খাতে বৈশ্বিক কর্মসংস্থান হবে ৩০ কোটি

আইএলও

মাতৃত্ব ও পিতৃত্বকালীন সুযোগ বৃদ্ধি, শিশুর যত্নসহ পরিচর্যা খাতে বিনিয়োগ বাড়ালে ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩০ কোটি কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে। এই সুযোগ না বাড়লে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে না। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

গবেষণা প্রতিবেদনে ১৮৫টি দেশের মাতৃত্ব ও পিতৃত্বকালীন সুবিধা, বিশেষ পারিবারিক যত্ন, নিরাপদ কর্মক্ষেত্র, স্তন্যদানবান্ধব পরিবেশ,
শিশুর যত্ন, দীর্ঘমেয়াদি পারিবারিক সেবাসহ আটটি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য–উপাত্ত তুলে ধরা হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনের লেখক ছিলেন আইএলওর মাতৃত্ব সুরক্ষা ও পরিবার বিশেষজ্ঞ লরা আদাতি, অর্থনীতিবিদ আম্বার্তো কাতানিও এবং নারী-পুরুষ সমতাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ ইমানুয়েলা পোজান।

বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ কর্মী পর্যাপ্ত সুরক্ষা ও পরিচর্যা পরিষেবা ছাড়াই পারিবারিক ও কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এসব সমস্যা দূর করতে বিদ্যমান নীতিগুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে সদস্যদেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে আইএলও।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাতৃত্বকালীন বিশ্বের প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে ৩ জন, অর্থাৎ প্রায় ৬৫ কোটি নারী পর্যাপ্ত সুরক্ষা পান না। আইএলওর মাতৃত্ব সুরক্ষা কনভেনশন অনুসারে, মাতৃত্বকালীন ন্যূনতম ১৪ সপ্তাহের ছুটি ও দুই–তৃতীয়াংশ বেতন দেওয়ার নিয়ম আছে। কিন্তু ১৮৫টি দেশের মধ্যে ৮২টি দেশে তা মানা হয় না বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে নারীর সম্পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কমপক্ষে আরও ৪৬ বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন আইএলওর বিশেষজ্ঞরা।

পিতৃত্বকালীন ছুটির ক্ষেত্রেও বৈষম্যের কথা এসেছে আইএলওর প্রতিবেদনে। পুরুষেরা গড়ে মাত্র ৯ দিন পিতৃত্বকালীন ছুটি পান। আর বিশ্বের ১২০ কোটির বেশি পুরুষ পিতৃত্বকালীন ছুটিই পান না। ২০টি দেশে সমকামী অভিভাবকদের সন্তান দত্তক গ্রহণের ক্ষেত্রে ছুটি দেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে সমতা আনার পরামর্শ দিয়েছে আইএলও।

কর্মক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বা বা স্তন্যদানকারী নারীদের বিপজ্জনক বা অস্বাস্থ্যকর কাজের বিরুদ্ধে সুরক্ষা নিয়েও তথ্য দিয়েছে আইএলও। বলা হয়েছে, জরিপ করা দেশগুলোর মধ্যে মাত্র ৪০টি দেশের নারীরা এই সুবিধা পান। গবেষকেরা জানান, অনেক দেশেই খণ্ডকালীন ছুটি এবং এই সময়ে আয়ের নিরাপত্তা ও বুকের দুধ খাওয়ানোর উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। অনেকে ছুটি দিলেও এই সময়ের জন্য বেতন কেটে রাখেন।