সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি দেওয়াই কঠিন হয়ে যাবে

শহিদউল্লাহ আজিম

আমরা একটা হিসাব করে দেখেছি, দুই হাজার শ্রমিক কাজ করেন, এমন কারখানায় মজুরি বৃদ্ধির পর মাসে কমপক্ষে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বাড়তি লাগবে। এ জন্য পোশাকের সিএম (উৎপাদন ব্যয়) বর্তমানের চেয়ে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে হবে। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বিদেশি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান সিএম সহজে বাড়ায় না।

নতুন মজুরিকাঠামো বাস্তবায়ন হলে শুধু সেসব কারখানাই টিকবে, যারা বড় ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের কাজ করে এবং যাদের উৎপাদনশীলতা তুলনামূলক বেশি। তবে আমরা চাই, সব কারখানাই টিকে থাকুক। সে জন্য নতুন মজুরিকাঠামো বাস্তবায়নে ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা বিজিএমইএ থেকে তাদের চিঠি দিয়ে ডিসেম্বর থেকে পোশাকের দাম বাড়াতে অনুরোধ করেছি। এ বিষয়ে সরকারেরও কাজ করা প্রয়োজন।

গত এক–দেড় বছরে গ্যাস-বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। ব্যাংকঋণের সুদের হারও বাড়ানো হয়েছে। এতে করে আমাদের ব্যবসার খরচ বেড়েছে। অথচ আমরা বাড়তি দাম দিয়েও নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস পাচ্ছি না। এভাবে চললে তৈরি পোশাকশিল্প বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা হারাবে। এ জন্য ব্যবসার খরচ বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ প্রয়োজন হবে।

মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণার পর কোনো কোনো শ্রমিক সংগঠন বলছে, তারা খুশি নয়। তবে খুশি হওয়াটা আপেক্ষিক ব্যাপার। মজুরি নির্ধারণে শিল্পের সক্ষমতা বিচার করতে হয়। এই মজুরি দেওয়াই অনেক কারখানার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। মজুরি চূড়ান্ত হওয়ার পর অনেক মালিক আমাদের কাছে ব্যবসা থেকে নিরাপদ প্রস্থানের জন্য নীতিমালা চেয়েছেন। তবে আমরা চাই, পোশাকশ্রমিকদের জন্য যে ন্যূনতম মজুরি চূড়ান্ত হয়েছে, তাকে মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষই স্বাগত জানাবে।

  • শহিদউল্লাহ আজিম, সহসভাপতি, বিজিএমইএ