অভিমত: ভ্যাট বৃদ্ধির প্রভাব
রেস্তোরাঁ ব্যবসায় অসম প্রতিযোগিতা বাড়বে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর রেস্তোরাঁ ও বেকারি পণ্যে ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করেছে। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এতে রেস্তোরাঁয় খাবারের খরচ যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে বিস্কুটসহ বেকারি পণ্যের দাম। এ নিয়ে কথা বলেছেন বেকারি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইফাদ মাল্টি প্রোডাক্টসের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব।
সরকার আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করেই রেস্তোরাঁ ব্যবসাসহ বিভিন্ন পণ্যের ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে রেস্তোরাঁ ব্যবসায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি এই খাতের ব্যবসায় অসম এক প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। সেই সঙ্গে বাড়বে অবৈধ লেনদেন। এ কারণে আমরা রেস্তোরাঁ ব্যবসায় হুট করে ভ্যাট বাড়ানোর বিরোধিতা করে আসছিলাম। কিন্তু সরকার আমাদের যৌক্তিক কারণগুলোকে বিবেচনায় না নিয়ে কোনো আলোচনা ছাড়াই ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। আমরা সারা দেশের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে আগামীকাল রোববার এ বিষয়ে আমাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাব।
আমাদের দেশের বাস্তবতায় মানসম্মত রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে পাড়ার অলিগলিতেও রেস্তোরাঁ ব্যবসা রয়েছে। সবাই ভ্যাটের আওতায় নেই। আবার ফুটপাতে, রাস্তায়ও এই ব্যবসা ছড়িয়ে রয়েছে। এ জন্য আমাদের দাবি ছিল, ভ্যাট না বাড়িয়ে রেস্তোরাঁ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সবাইকে ভ্যাটের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হোক, কিন্তু সেটি করা হয়নি। এর ফলে এখন যেটা হবে, তা হলো যাঁরা সব নিয়মকানুন মেনে এই ব্যবসা করেন, তাঁদের ওপর ভ্যাটের চাপ বাড়বে। তাতে বাড়বে খাবারের দাম। আর যাঁরা ভ্যাটের আওতায় নেই, তাঁরা কম দামে খাবার বিক্রি করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে ভালো প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক হারাবে। তাদের ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর পাড়া–মহল্লার রেস্তোরাঁ যেহেতু ভ্যাটের আওতায় নেই, সেখান থেকে কর কর্মকর্তাদের অবৈধ লেনদেনের একটি সুযোগ তৈরি হবে।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, ধানমন্ডি এলাকার একটি মানসম্মত রেস্তোরাঁর কথা। এমনিতেই এ ধরনের রেস্তোরাঁর পরিচালন খরচ বেশি। এখন ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে সেখানে খাবারের খরচ বেড়ে যাবে। আগে ৪০০ টাকার একটি মাংসের গ্রিল বা কাবাব বিক্রি করলে ২০ টাকা ভ্যাট দিতে হতো, এখন দিতে হবে হবে ৬০ টাকা। কিন্তু পাড়া–মহল্লার দোকানে ঠিকই কিছুটা কম দামে এই গ্রিল বিক্রি হবে। খাবারের মানের হয়তো কিছুটা তারতম্য হবে। কিন্তু দামের কারণে সাধারণ মানুষ ভালো রেস্তোরাঁর বদলে পাড়া–মহল্লার দোকান থেকে গ্রিল কিনতে বেশি আগ্রহী হবেন। এতে ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা কমবে।