আমরা বিজ্ঞাপনের বাজার উন্নত করার চেষ্টা করছি

বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মিডিয়া এজেন্সি গ্রুপএমের যৌথ উদ্যোগে ২০০০ সালে যাত্রা শুরু করে এশিয়াটিক মাইন্ডশেয়ার লিমিটেড। দেশের সবচেয়ে বড় এই মিডিয়া ও বিজ্ঞাপনী সংস্থা পা দিয়েছে দুই যুগে। এই পথচলার শুরু, বর্তমান বিজ্ঞাপনের বাজার এবং মিডিয়া ও প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছেন গ্রুপএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোরশেদ আলম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাহফুজ রহমান

প্রথম আলো:

বাংলাদেশে গ্রুপএমের শুরু থেকেই আপনি আছেন; শুরুটা কীভাবে হয়েছিল?

মোরশেদ আলম: গ্রুপএম মূলত আন্তর্জাতিক চারটি মিডিয়া এজেন্সির (মাইন্ডশেয়ার, ওয়েভমেকার, এসেন্স মিডিয়াকম ও এমসিক্স অ্যান্ড পার্টনার্স) মূল মালিকানা কোম্পানি। মাইন্ডশেয়ারের যাত্রা শুরু হয় মূলত ১৯৯৭ সালে। সে সময় ইউনিলিভারের পক্ষে সব মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থাপনার বা মিডিয়া বায়িংয়ের কাজটা করত অ্যাডকম লিমিটেড। তখন ইউনিলিভারের ব্র্যান্ডগুলোর জন্য ছিল ভিন্ন ভিন্ন ক্রিয়েটিভ এজেন্সি, যারা বিজ্ঞাপন তৈরি করত। ২০০০ সালে আমি যখন মিডিয়ায় যুক্ত হলাম, তখন আমাদের হাতে ইউনিলিভারের ব্র্যান্ড ছিল পাঁচটি। আমরা পরিকল্পনা করতাম আর মিডিয়া বায়িং সংস্থা পরিকল্পনাগুলো মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা করত। কাজটি করতে গিয়ে একসময় উপলব্ধি করলাম যে এতে একটু ঝামেলাই হচ্ছে। কারণ, পরিকল্পনা করছে একটা কোম্পানি আর বাস্তবায়ন করছে আরেক কোম্পানি। তখন থেকেই বৈশ্বিকভাবে ইউনিলিভারের ক্ষেত্রে শুধু পরিকল্পনা নয়, পুরো কাজটাই চলে গেল মিডিয়া এজেন্সির কাছে। তাতে ২০০০ সালে বাংলাদেশে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির সঙ্গে যুক্ত হলো গ্রুপএমের এজেন্সি মাইন্ডশেয়ার।

প্রথম আলো:

এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির কর্ণধার ছিলেন আলী যাকের; তার অভাব কীভাবে পূরণ করছেন?

মোরশেদ আলম: যাকের ভাই কখনো সততার সঙ্গে আপস করেননি। উনি সব সময় একটা কথা বলতেন, ‘লাভের জন্য কাজ কোরো না, কাজ করো গৌরবের জন্য।’ একটা উদাহরণ দিই, তখন ভারতীয় চ্যানেলে বাংলাদেশ থেকে বিজ্ঞাপনের প্রচার একটু একটু শুরু হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই আমরা যেহেতু সবচেয়ে বড় মিডিয়া বায়ার, ওরা শুরুতে আমাদের সঙ্গেই যোগাযোগ করে। আমরা গ্রুপের দু-তিনজন তরুণ পরিচালক ভাবলাম, এই প্রস্তাব তো লাভজনক। তবে যাকের ভাই বললেন, ‘দেখো মোরশেদ, লাভ করাই যদি আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হতো, তাহলে আমিই হতাম দেশের সেরা শিল্পপতিদের একজন। এ রকম ব্যবসার অনেক সুযোগ আমার জীবনে এসেছে। কিন্তু অর্থ উপার্জন আমার জীবনের মূল লক্ষ্য নয়। তাই আমাদের নীতি অনুযায়ী, ভারতীয় চ্যানেলের বিজ্ঞাপনের এজেন্ট আমরা হব না।’ যাকের ভাইয়ের এই শিক্ষা আমরা এখনো ধরে রেখেছি। আমরা যখন কোনো ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নিই, তখন চিন্তা করি, যাকের ভাই থাকলে তিনি কী করতেন? এভাবেই আমরা তাঁর অভাব পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছি।

মোরশেদ আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, গ্রুপএম
খালেদ সরকার
প্রথম আলো:

বাংলাদেশে এশিয়াটিকের সঙ্গে গ্রুপএমের মাইন্ডশেয়ার, ওয়েভমেকার ও এমবিএর মতো মিডিয়া এজেন্সি সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। দেশের সব বড় প্রতিষ্ঠানের, বিশেষ করে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই মিডিয়া বায়িংয়ের ক্ষেত্রে আপনাদের এসব এজেন্সির সঙ্গে আছে। আমরা কি বলতে পারি যে গ্রুপএম এখন বাংলাদেশের মিডিয়া বায়িং নিয়ন্ত্রণ করছে?

মোরশেদ আলম: নিয়ন্ত্রণ আসলে নেতিবাচক শব্দ। হ্যাঁ, আমরা অনেক বড় প্রতিষ্ঠান; এখন প্রায় ৭০ শতাংশ বাজার হিস্যা আমাদের। তাই বলে আমরা যে এ বাজার নিয়ন্ত্রণ করছি, সেটা বলব না। কারণ, আমাদের মূল কাজ গ্রাহক আর মিডিয়ার মধ্যে এজেন্ট হিসেবে কাজ করা। আমরা একদিকে গ্রাহকের জন্য মিডিয়া প্ল্যান করছি; কোথায়, কোন মিডিয়ায়, কী পরিমাণ বিনিয়োগ করা দরকার, কোথায় বিনিয়োগ করলে সবচেয়ে বেশি ভোক্তার কাছে পৌঁছানো যাবে, সে সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছি। একই সঙ্গে মিডিয়াকেও বলছি, কোন কোন জায়গায় তাদের গুরুত্ব দেওয়া দরকার, কীভাবে দর্শক বা পাঠক বাড়ানো যাবে এবং কোথায় গুরুত্ব দিলে তারা সেরা বা জুতসই গ্রাহকের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন পাবে। এ কারণেই বললাম, আমরা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছি না। বরং আমরা ব্যবসাটাকে উন্নত করার চেষ্টা করছি।

নিয়ন্ত্রণ আসলে নেতিবাচক শব্দ। হ্যাঁ, আমরা অনেক বড় প্রতিষ্ঠান; এখন প্রায় ৭০ শতাংশ বাজার হিস্যা আমাদের। তাই বলে আমরা যে এ বাজার নিয়ন্ত্রণ করছি, সেটা বলব না।
মোরশেদ আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, গ্রুপএম
প্রথম আলো:

এই মুহূর্তে কোন কোন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছেন?

মোরশেদ আলম: বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর অধিকাংশের সঙ্গেই আমরা কাজ করছি। এর মধ্যে ইউনিলিভার, গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক, কোকাকোলা, ম্যারিকো, নেসলে, ডাবর, প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল, দারাজ, বিকাশ, কোলগেট, রেকিট বেনকিজার, হোন্ডা, বাজাজ, নিউজিল্যান্ড ডেইরি অন্যতম। দেশি ব্র্যান্ডের মধ্যে মেঘনা গ্রুপ, বিএসআরএম, এসিআই, ওয়ালটন, ইফাদ উল্লেখযোগ্য। মোটা দাগে বর্তমান বাজারের প্রায় ৭০ শতাংশ কোম্পানির সঙ্গে আমরা যুক্ত।

প্রথম আলো:

বড় বড় প্রতিযোগী গ্রাহকের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব তৈরি হয় না?

মোরশেদ আলম: এ ধরনের পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সে জন্যই আমরা একাধিক এজেন্সি বা সংস্থা সৃষ্টি করেছি। এমন নিয়ম, ব্যবস্থা বা পরিবেশ তৈরি করেছি, যাতে একটি এজেন্সির কর্মী অন্যটিতে ঢুকতে না পারেন। নিয়মতান্ত্রিকভাবে কর্মীর প্রবেশাধিকার থেকে শুরু করে সার্ভার, মেইল সার্ভার, সফটওয়্যার সার্ভার—সবই আলাদা। আমি একমাত্র ব্যক্তি, যার সব অফিসে প্রবেশাধিকার আছে। এর বাইরে প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগের কিছু কর্মী, যাঁরা পুরো গ্রুপএমের জন্য কাজ করেন, তাঁদের প্রবেশাধিকার আছে। অর্থাৎ একটা এজেন্সির মূল দলে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা কেউ অন্য এজেন্সির সঙ্গে যুক্ত নন।

একটা সময় ছিল, যখন পণ্যের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে থাকতেন বিভিন্ন অঙ্গনের তারকারা। মানুষ তখন ভাবত, ঐশ্বরিয়া রাই লাক্স সাবান ব্যবহার করেন, আমিও ব্যবহার করব। কিন্তু এই প্রজন্মের মধ্যে এই প্রবণতা কম।
মোরশেদ আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, গ্রুপএম
প্রথম আলো:

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একেকজন ইনফ্লুয়েন্সার যেন নিজেরাই একেকটি এজেন্সি হয়ে উঠছেন। এটাকে কীভাবে মোকাবিলা করছেন?

মোরশেদ আলম: একটা সময় ছিল, যখন পণ্যের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে থাকতেন বিভিন্ন অঙ্গনের তারকারা। মানুষ তখন ভাবত, ঐশ্বরিয়া রাই লাক্স সাবান ব্যবহার করেন, আমিও ব্যবহার করব। কিন্তু এই প্রজন্মের মধ্যে এই প্রবণতা কম। অন্যদিকে একজন ইনফ্লুয়েন্সার কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্য থেকে উঠে আসা একজন। ভোক্তার সঙ্গে তাঁদের নিয়মিত যোগাযোগ আছে। ফলে তরুণ প্রজন্মের কাছে দূরের তারকার চেয়ে ইনফ্লুয়েন্সারদের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। এ কারণে ইনফ্লুয়েন্সাররা ধীরে ধীরে পণ্যের শুভেচ্ছাদূত হচ্ছেন। আর এখানেই ক্লায়েন্ট ও ইনফ্লুয়েন্সারদের অনেক তথ্য, বিশ্লেষণ ও দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।

ধরুন, একজন ইনফ্লুয়েন্সারের অনুসারী ১০০ জন। আরেকজন ইনফ্লুয়েন্সারের অনুসারী ৭০ জন। দুজনের সম্মানীও হয়তো সমান। আপনি তাহলে কার কাছে যাবেন? নিশ্চয়ই যাঁর ১০০ জন অনুসারী, তাঁর কাছেই যাবেন? আসলে তা ভুল। আপনাকে দেখতে হবে যে ওই ইনফ্লুয়েন্সারের ১০০ জন অনুসারী আপনার পণ্যের ভোক্তা কি না। তাঁর অনুসারীদের মধ্যে মাত্র ৩০ জন হয়তো আপনার পণ্যের ভোক্তা। অথচ দেখা গেল, অন্য ইনফ্লুয়েন্সারের ৭০ জন অনুসারীর মধ্যে হয়তো ৫০ জনই আপনার পণ্যের ভোক্তা। এখন আপনি নিশ্চয়ই এই ৭০ জন অনুসারীর ইনফ্লুয়েন্সারের কাছেই যাবেন। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে যথাযথ তথ্য-উপাত্ত, বিশ্লেষণ এবং তার ভিত্তিতে কৌশল প্রয়োগের প্রয়োজন। তাই সম্প্রতি গ্রুপএম থেকে আমরা একটি ইনফ্লুয়েন্সার ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি খুলেছি, শিগগিরই কোম্পানিটি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে।

ভোক্তা যেদিকে যাচ্ছেন, বিজ্ঞাপনদাতারা সেদিকে যাবেনই। বিশ্বায়নের যুগে তাদের আটকে রাখা যাবে না। এখন ভোক্তা যদি গুগল, ফেসবুকে থাকেন, আমাকে তাহলে সেখানে বিজ্ঞাপন দেখাতেই হবে। ভোক্তা যদি দেশি প্রচারমাধ্যমে থাকেন, আমাদের সেখানেই যেতে হবে।
মোরশেদ আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, গ্রুপএম
প্রথম আলো:

চিরাচরিত বিজ্ঞাপনের বেলায় টিভি বা পত্রিকায় যা খরচ হতো, পুরোটাই থাকত দেশে। কিন্তু ডিজিটাল মাধ্যমের বিজ্ঞাপনের টাকা তো দুই বিগ ফিশ গুগল ও ফেসবুকের কাছে চলে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেশি প্রকাশক বা গণমাধ্যমের ভবিষ্যৎ আপনি কেমন দেখছেন?

মোরশেদ আলম: ভোক্তা যেদিকে যাচ্ছেন, বিজ্ঞাপনদাতারা সেদিকে যাবেনই। বিশ্বায়নের যুগে তাদের আটকে রাখা যাবে না। এখন ভোক্তা যদি গুগল, ফেসবুকে থাকেন, আমাকে তাহলে সেখানে বিজ্ঞাপন দেখাতেই হবে। ভোক্তা যদি দেশি প্রচারমাধ্যমে থাকেন, আমাদের সেখানেই যেতে হবে। এখন একটা ‘হেলদি কমপিটিশন বা স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা’ তৈরি করতে হবে। এই প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়েই আমাদের কাঙ্ক্ষিত ভোক্তাশ্রেণির কাছে যেতে হবে। তবে আমি যদি পত্রিকা, টেলিভিশন বা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালাই, তাহলে আমাকেই আসলে চিন্তা করতে হবে যে কীভাবে পাঠক-দর্শক ধরে রাখব। পাঠক-দর্শক থাকলে বিজ্ঞাপনদাতা সেই মাধ্যমের কাছে যাবেন।

মোরশেদ আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, গ্রুপএম
খালেদ সরকার
প্রথম আলো:

ডিজিটালের অগ্রগতির পর বিজ্ঞাপনদাতারা এখন ডিজিটালে বিজ্ঞাপন দিতে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছে...

মোরশেদ আলম: এ প্রবণতা সারা বিশ্বেই। যে কারণে প্রতিটি পত্রিকা তো বটেই, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোরও একটি করে অনলাইন সংস্করণ থাকতে হবে। প্রশ্ন হলো, ছাপা পত্রিকা কি বন্ধ হয়ে যাবে? নিউইয়র্ক টাইমস কি বন্ধ হয়ে গেছে? যুক্তরাষ্ট্র তো শতভাগ ডিজিটাল। আমাদের দেশে ডিজিটাল মাধ্যমে আছেন ৫৬ শতাংশ মানুষ। বাকি ৪৪ শতাংশ মানুষের কাছে তো এখনো বিজ্ঞাপন পৌঁছাতে হবে। এ ছাড়া কিছু তথ্য বা বিজ্ঞাপন আছে, যা ছাপা পত্রিকায়ই জুতসই। মোট কথা, ছাপা পত্রিকার আয় হয়তো আগের মতো থাকবে না, কিন্তু পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ এই অভাব পূরণ করবে। প্রথম আলো এ ক্ষেত্রে ভালো উদাহরণ। প্রথম আলোর ছাপা পত্রিকা ও অনলাইন সংস্করণ মিলিয়ে কি আয় কমেছে? হয়তো না। তার মানে প্রথম আলো আগে একটা মাধ্যমে পাঠকের কাছে যেত, এখন দুটি বা তার বেশি মাধ্যমে পাঠকের কাছে হাজির হচ্ছে। অর্থাৎ সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রথম আলোর এই কৌশলের কারণে তাদের আয় কমেনি, চাহিদাও কমেনি, বরং বেড়েছে।

প্রথম আলো:

গ্রুপএম নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

মোরশেদ আলম: এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি মূলত যোগাযোগভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। আজ থেকে ২০ বছর আগে এশিয়াটিক এমসিএল ছিল এশিয়াটিকের একমাত্র কোম্পানি। আজ এশিয়াটিকের ২০টি কোম্পানি। কিন্তু এশিয়াটিক এমসিএলের হয়ে যেসব কাজ আমরা করতাম, তার বাইরে কিন্তু অন্য কোনো ব্যবসায় আমরা যুক্ত হইনি। অর্থাৎ ২০ বছর আগে এসব কাজ করতে একটা কোম্পানি যথেষ্ট ছিল, সেই একই কাজ করতে এখন ২০টি কোম্পানি খুলতে হয়েছে। আমার ধারণা, আজ থেকে ২০ বছর পর এই একই কাজ করতে আরও ২০টি কোম্পানি আমাদের খুলতে হবে। কারণ, এই ব্যবসা বা যোগাযোগব্যবস্থাটা ছোট ছোট ভাগে ভাগ হয়ে যাচ্ছে। ভোক্তাও ভাগ হয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল মিডিয়ায়ও অনেক পরিবর্তন হচ্ছে। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের জন্য আলাদা কোম্পানি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা কোম্পানি। আমরা তথ্য ও প্রযুক্তিতে আরও বিনিয়োগ করব। নতুন নতুন অংশীদারত্বে যাব। মানুষ ও সমাজের পরিবর্তন হচ্ছে, আমরাও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাব।