ব্যবসা–বাণিজ্যের জন্য অশনিসংকেত

মো. আলমগীর কবির

কিছুদিন আগে আমরা শুনেছিলাম, শীতে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আমরা তাতে আশ্বস্ত হয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি পরিস্থিতির কোনো উন্নতি তো হয়ইনি, উল্টো আরও অবনতি হয়েছে।

বিদ্যুৎ-সংকটের কারণে কয়েক মাস ধরে আমাদের কারখানা শনিবার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। আমরা সেটি মেনে চলছিলাম। কিন্তু চলতি সপ্তাহ থেকে অন্য দিনগুলোতে চার-পাঁচ ঘণ্টা করে বিদ্যুতের লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। এতে আমাদের মতো অনেক শিল্পকারখানার উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

এমনিতেই ডলার-সংকটের কারণে সব ধরনের শিল্পমালিকেরা কম-বেশি ডলার-সংকটে ভুগছেন। ডলার-সংকটের কারণে সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলো এরই মধ্যে ২৫ শতাংশ পুঁজি খুইয়েছে।

একদিকে পুঁজি কমেছে, অন্যদিকে ডলারের বাড়তি দামের কারণে প্রতিনিয়ত পুঁজি ভাঙতে হচ্ছে। এমন এক পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি আমাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো। ব্যবসায়ীরা এমনিতেই নাকাল অবস্থায় রয়েছেন। তার মধ্যে এ ধরনের সিদ্ধান্ত শিল্পমালিক ও ব্যবসায়ীদের আরও বেশি বিপদে ফেলবে।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ব্যবসায়ীদের জন্য কোথাও কেউ কোনো কাজ করছে না। আমরা বিপদে কাউকে পাশে পাচ্ছি না। এনবিআর যেভাবে পারছে আমাদের কাছ থেকে কর আদায় করছে। যারা নিয়মিত কর দিচ্ছে, তাদের ওপরই চাপ বেশি। অথচ নতুন করদাতা বাড়াতে পারছে না সংস্থাটি। করের আওতা বাড়িয়ে কর আদায় বাড়ানো গেলে তাতে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর চাপ কিছুটা হলেও কমত।

সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখনই বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে এ খাতে ভর্তুকি বাড়ানো উচিত ছিল। এতে পণ্যের দাম বাড়বে। এমনিতেই ব্যবসা খারাপ। তার মধ্যে পণ্যের দাম বাড়লে ব্যবসা আরও কমবে। ফলে সামনের দিনে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অশনিসংকেত দেখতে পাচ্ছি।

মো. আলমগীর কবির সভাপতি, বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ)