মানুষের মুক্তির দ্বার খুলতে চেয়েছিলেন আনিসুর রহমান

অধ্যাপক আনিসুর রহমানছবি: সৈয়দ জাকির হোসাইনের সৌজন্যে পাওয়া

বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে যে চারজন অর্থনীতিবিদ জাতি গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন, তাঁদের অন্যতম আনিসুর রহমান গতকাল শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। এর আগে মোশাররফ হোসেন ও নুরুল ইসলাম পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। এখন কেবল জীবিত আছেন রেহমান সোবহান।

জাতিসংঘে কর্মরত বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ নজরুল ইসলাম ‘আওয়ার ডেট টু দ্য ফোর প্রফেসর্স’ শীর্ষক একটি বই লিখেছেন। সেই বইয়ে তিনি দেখিয়েছেন, কেন আমাদের এই চার ব্যক্তির প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।

নজরুল ইসলাম লিখেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতাসংগ্রাম ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রাথমিক পর্যায়ে জাতি গঠন ও দেশ বিনির্মাণের প্রয়াসে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম এই চার অর্থনীতিবিদকে গভীরভাবে আন্দোলিত করেছিল। এই জাতির অভ্যুদয় ও বিনির্মাণের সঙ্গে তাঁরা গভীরভাবে যুক্ত হয়েছিলেন। বিষয়টি তাঁদের বিশিষ্ট করে তুলেছে।

আনিসুর রহমানসহ এই চারজনের কেউই সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না। কিন্তু বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম তাঁদের একাডেমিক জগতের পরিসর অতিক্রম করে রাজনৈতিক আন্দোলনের ঝুঁকি ও স্বপ্নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। তাঁরা বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের স্বার্থে এবং পরবর্তীকালে দেশ গঠনের প্রত্যয়ে নিজেদের জ্ঞান ও মেধা উৎসর্গ করেছিলেন।

আনিসুর রহমানকে আমরা চিনি মূলত স্বাধীন বাংলাদেশের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে। শুরু থেকে অবশ্য এই কমিশনের সফলতা নিয়ে তিনি অতটা আশাবাদী ছিলেন না। নিজের আত্মজীবনী ‘পথে যা পেয়েছি’ গ্রন্থে তিনি বলেছেন: ‘আমেরিকায় উইলিয়ামস্ কলেজে শিক্ষকতায় থাকাকালেই আমাকে না জিজ্ঞেস করেই পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য নিয়োগ করা হয়। দেশে ফিরে জানতে পারি বাহাত্তরের ১৮ই জানুয়ারী এই মর্মে সরকারের গেজেট নোটিফিকেশনও হয়ে গিয়েছে এবং সংবাদপত্র ও অন্যান্য মিডিয়াতেও এই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সদ্য স্বাধীন দেশে দেশের শ্রেষ্ঠ অর্থশাস্ত্রবিদদের নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ওপর অনেক আশা। আমি তবু ঢাকায় ফিরে সোজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রিপোর্ট করি এবং ক্লাস নিতে শুরু করি। আমরা যে তেমন কিছু করতে পারব না, রাজনীতিবিদরাই আসল ক্ষমতা ব্যবহার করবেন এবং তাঁদের ইচ্ছেমতোই দেশ পরিচালনা করবেন, এ সম্বন্ধে আমরা তো দিল্লীতেই আলোচনা করেছিলাম ও একমত হয়েছিলাম। তাই একাত্তরের নির্বাসনের সাথী পরিকল্পনা কমিশনের কোন কলিগের সঙ্গেই দেখা না করে এমন কী টেলিফোনে কুশল জানতে না চেয়ে চুপ করে, বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেন আত্মগোপন করে, কাটাতে থাকলাম।’

অত্যন্ত ছাত্রবান্ধব মানুষ ছিলেন আনিসুর রহমান। সে কারণে শিক্ষকতাকেই বেশি গুরুত্ব দিতেন। তাঁর মৃত্যুর পর ছাত্রদের ভাষ্যেও সেই সাক্ষ্য পাওয়া যায়। লেখক মহিউদ্দিন আহমদ ফেসবকু স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘যখন এমএ ক্লাসে উঠলাম, তখন অধ্যাপক আনিসুর রহমানকে পেলাম শিক্ষক হিসেবে। তাঁর উদ্যোগে চালু হলো নতুন একটি বিষয়—থিয়োরি অ্যান্ড প্র্যাকটিস অব সোশ্যালিজম। তিনি একমাত্র শিক্ষক। আমরা মাত্র সাতজন তাঁর সরাসরি ছাত্র। বলতেন, “তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আমিও শিখছি।” ওই একবছর যা শিখেছি, তা এখনো কাজে লাগাই। রেফারেন্স বই জোগাড় করে দিতেন। তাঁর কামরায় একটা টাইপরাইটার ছিল। তিনি নিজেই সেখানে আমাদের জন্য নোট তৈরি করে স্টেন্সিল পেপারে টাইপ ও কপি করে আমাদের দিতেন।’

ছাত্রবান্ধব শিক্ষক হিসেবে আনিসুর রহমান চাইতেন, ছাত্ররা যেন সরাসরি দেশ গড়ার কাজে যুক্ত হয়। ছাত্রদের কৃষিকাজে যুক্ত করতে এবং তাদের সহায়তায় সরকারি আমলাতন্ত্র ও দুর্নীতি ভেদ করে সার, বীজ ইত্যাদি সংগ্রহ করা সহজতর করতে ‘স্টুডেন্টস পার্টিসিপেশন ইন ইরি-২০ কাল্টিভেশন’ নামের একটি পাইলট প্রকল্প চালু করেছিলেন তিনি। ৯টি কলেজের ছাত্রদের নিয়ে তিনি এ প্রকল্প চালু করেন। মূল লক্ষ্য ছিল আমলাতন্ত্রের বাধা দূর করে দেশের উন্নয়নের প্রকৃত শক্তির অর্গল খুলে দেওয়া। এই মনোভাবের কারণেই তিনি পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হয়েও প্রথাগত আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আস্থা রাখতে পারেননি তিনি।

শেষে তিনি পরিকল্পনা কমিশনে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সব সময়েই তাঁর মনে একটা খুঁতখুঁতে ভাব ছিল। মনে হতো, দেশ লক্ষ্যহীনভাবে ‘গড়িয়ে চলছে’। তাঁর নিজের আত্মজীবনী থেকে উদ্ধৃত করা যাক: ‘চারদিকে হতাশা তীব্রতর হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে উজ্জীবিত সদ্য স্বাধীন এই জাতি দিশা হারিয়ে এ কোথায় চলেছে? গতানুগতিক অঙ্ক-কষা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করে কী হবে? আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নই বা করবে কে? এই আমলাতন্ত্র? এই রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ? একমাত্র হেড্-মাঝি 'জাতির পিতা', 'বঙ্গবন্ধু'কে যদি জাগানো যায় তাহলে নৌকো একটা কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে চলতে পারে। কে জাগাবে তাঁকে?’

নিজের মধ্যে এই ছটফটানি থেকে প্রটোকল লঙ্ঘন করে ‘জাতিকে পুনরুজ্জীবিত করুন’ শিরোনামে বঙ্গবন্ধুকে নোট পাঠাতে শুরু করেন আনিসুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাঁর আহ্বান ছিল, দেশের অরাজকতাপূর্ণ লক্ষ্যহীন যাত্রা থামিয়ে নৌকার হাল ধরে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশ্রুত পথে দেশকে পরিচালিত করা; দেশের নেতৃবৃন্দ ও অভিজাত সম্প্রদায়ের বিলাস ও লুটপাটের রশি টেনে তাঁদের সাধারণ জনগণের সঙ্গে একাত্ম হয়ে দেশগঠনের কাজে ব্যাপৃত করা; ছাত্রদের গ্রামে–গঞ্জে গিয়ে দেশগঠনের কাজে নিয়োজিত হওয়ার আহ্বান ও সুযোগ করে দেওয়া; আসন্ন বাজেটে জাতীয় কৃচ্ছ্রসাধনের কর্মসূচি ঘোষণা করা; পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বায়বীয় কাজ স্থগিত রেখে দুই বছরের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের দৃঢ় লক্ষ্যে জাতিকে সংহত করা।

আনিসুর রহমান নিজেই বলছেন, এতে কোনো লাভ হয়নি নিজের আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো ছাড়া। এমনকি পরিকল্পনা কমিশনের সহকর্মীদের কারও কারও নীরব গম্ভীর চাহনি দেখে তাঁর মনে হয়েছে, তাঁরাও এই প্রটোকলভঙ্গ ভালোভাবে নিতে পারেননি। বরং এটা তাঁদের কাছে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বিরোধী উদ্যোগ হিসেবে মনে হয়েছে।

তারপরও থেমে থাকেননি আনিসুর রহমান। রাজনৈতিক নেতাদের জাগানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে ১৯৭৩ সালের ১৫ জুন ‘দ্য চ্যালেঞ্জ অব নেশন বিল্ডিং’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখে প্রধানমন্ত্রীসহ সব মন্ত্রীর কাছে পাঠান তিনি। এটি সাপ্তাহিক ওয়েভ পত্রিকাতেও ছাপা হয়। এর শেষ অধ্যায়ে বলা হয়: ‘স্বাধীনতার পরে আজ পর্যন্ত এই দেড় বছরে দেশের একটি বৃহদংশ অন্যরকম অনুপ্রেরণাই দেখিয়েছে-কাজে ফাঁকি দেওয়া, চুরি-ডাকাতি-হাইজ্যাক করা, চোরাচালানি, ধর্মঘট, ধ্বংসাত্মক কাজ, ঘেরাও, স্বজনপ্রিয়তা, তহবিল তসরুপ, লুট, অগ্নিসংযোগ, মানুষ হরণ, অত্যাচার করে অর্থ আদায় করা, ভেজাল এবং পুলিশের উপস্থিতিতেই গণপিটুনি দ্বারা মানুষ হত্যা। কাগজে একটি ব্যয়-পরিকল্পনা প্রকাশ করলেই হঠাৎ এই মানুষগুলো সুশৃঙ্খলভাবে কাজে নেমে যেতে অনুপ্রাণিত হবে না। পরিকল্পনার লক্ষ্যগুলো পরিকল্পনাবিদদের একটা স্বপ্নই থেকে যাবে...। এই প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত মোহমুক্ত জনগণ ও ক্ষমতাসীন সরকারের মধ্যে হিংসাত্মক সংঘাত ডেকে আনবে। হয়তো ইতোমধ্যেই অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে; কিন্তু জাতিকে এখনো পুনরুজ্জীবিত করবার একমাত্র আশা যদি জাতীয় নেতৃত্ব সাধারণ জনগণের জীবনে সাথী হয়ে তাদের মাঝে আসেন, দেশ গঠনের জাতীয় প্রচেষ্টার জন্য উদ্দীপক চ্যালেঞ্জ দেন এবং এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করবার জন্য জনগণকে নিজেদের ব্যক্তিগত দৃষ্টান্ত দিয়ে অনুপ্রাণিত করেন।’

আনিসুর রহমান নিজেই বলছেন, এটা অবশ্যই অর্থনীতির কক্ষচ্যুত একজন রোমান্টিক স্বাপ্নিকের অবাস্তব স্বপ্ন। বাস্তবতা হলো, পরিকল্পনা কমিশনের প্রথামাফিক পরিকল্পনা প্রণয়নের বিষয়ে তিনি বিশেষ আগ্রহী ছিলেন না। আবার তিনি যে কায়দায় নেতৃত্বকে জনগণের কাতারে নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন, তা–ও হয়তো বাস্তবসম্মত ছিল না। এ দুয়ের মধ্যে অভিন্ন কোনো জায়গা তিনি খুঁজে পাননি। সে কারণে ১৯৭৩ সালের ৪ অক্টোবর তিনি কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন।

আনিসুর রহমানের বিদায়ী ভাষণ থেকে কিছুটা উদ্ধৃত করা যাক: ‘আমাদের এতো তাক-লাগিয়ে-দেওয়া ট্রেনিং সত্ত্বেও আমরা উন্নয়নের ও উন্নয়ন পরিকল্পনার সত্যিকারের সৃষ্টিশীল কোন সংজ্ঞা পাইনি। অ্যাংলো-স্যাক্সন জগতের পরিকল্পনাহীন অর্থনীতিবিদমহল আমাদের উন্নয়ন চিন্তাকে জাতীয় আয় বৃদ্ধির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে ভীষণ চেষ্টা করেছেন। এটি ডাস্টবিনের আবর্জনা এবং একে এভাবেই দেখা উচিত। উন্নয়নের অর্থ মানুষের সৃষ্টিশক্তির মুক্তি এবং এই মুক্তির পরিকল্পনাই হলো উন্নয়ন পরিকল্পনা। কতগুলো রেলওয়ে ওয়াগন আমদানি করতে হবে, কত মাইল রাস্তা তৈরি করতে হবে এবং কতখানি জমি দেশী ধানের চাষ থেকে উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষে আনতে হবে, এগুলো সব উন্নয়ন-অ্যাকাউন্টিং-এর কাজ, যে কাজ দক্ষ অ্যাকাউন্টেন্টরা করবেন। পরিকল্পনাবিদদের কাজ মানুষের আত্মা যে দরজায় আঘাত করছে, তা কী করে খোলা যায় তার পরিকল্পনা করা। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে সফর করুন, এই করাঘাত শুনতে পাবেন। হয়তো এই আঘাত এখনো সংখ্যায় কম এবং তার দর্শন এতো স্পষ্ট নয়, কিন্তু দরজা খুলে এই আত্মটিকে মুক্ত করুন, তাকে উঁচুতে তুলে ধরুন, যাতে সে তার পারসপেকটিভ্ দেখতে পায়, তারপর তাকে সামনে ধাবিত হতে দিন। কেবল এইভাবেই বাংলাদেশ তার কীর্তির শীর্ষে উঠে সমস্ত বিশ্বকে অবাক করে দিতে পারে।’

কমিশন থেকে পদত্যাগ করলেও তাঁর প্রতি সদস্যদের ভালোবাসার বিষয়টি স্বীকার করেছেন আনিসুর রহমান। এমনকি কমিশনের সদস্যরা যে নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশ্বমানের, সে কথাও অকপটে লিখেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে অনেক কিছু করা সম্ভব হয়নি—এ বিষয়েও তিনি খোলাখুলি বলেছেন। স্বাধিকার প্রশ্নে আপসহীন থেকেও বঙ্গবন্ধুর পক্ষে অনেক ক্ষেত্রেই এই জাতির সংস্কৃতির ঊর্ধ্বে ওঠা সম্ভব হয়নি বলে তাঁর সমালোচনা। বঙ্গবন্ধুর মুখের ওপরও তিনি অনেক কথা বলেছেন। আবার বঙ্গবন্ধুর সৌজন্যের প্রশংসা করেছেন তিনি।

রবীন্দ্রসংগীতের একান্ত অনুরাগী আনিসুর রহমান ছাত্রজীবনে বিভিন্ন রকম পাঠাতিরিক্ত কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। ইচ্ছা ছিল ইংরেজি সাহিত্য পড়ার, কিন্তু পরিবারের চাপে অর্থনীতি পড়েন। এমনকি প্রথম শ্রেণি পাবেন না, এমনটা মনে হওয়ার পর এক বছর পরীক্ষা দেননি। তখন সাংবাদিকতা শুরু করেন। এমনকি বিএ (পাস) ডিগ্রি নিয়ে সাংবাদিকতাই করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জগন্নাথ কলেজ তাঁকে অতি যোগ্য বিবেচনা করে ভর্তি নেয়নি।

প্রকৃত বিচারে আইডিয়ালিস্ট বা আদর্শবাদী ছিলেন আনিসুর রহমান। অনেক সম্ভাবনার বাংলাদেশ কীভাবে দুর্বৃত্তদের হাতে ছিনতাই হয়ে গেল, সে বিষয়ে বই লিখেছেন ‘অপহৃত বাংলাদেশ’ শিরোনামে। এই অনমনীয় মনোভাব মৃত্যুর আগপর্যন্ত বজায় রেখেছিলেন তিনি।