বিস্কুটের বাজার ১৫ থেকে ২০% হারে বাড়ছে

দেশের বিস্কুটের বাজারে ২০১৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে রিদিশা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড। অল্প সময়েই তারা বাজারে অবস্থান করে নিয়েছে। বিস্কুটের বাজারের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন গ্রুপ রিদিশার পরিচালক (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) এম এ খায়ের। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রদীপ সরকার।    

প্রথম আলো:

বিস্কুটের ব্যবসায় বিনিয়োগের কারণ কী?

এম এ খায়ের: দেশে খাদ্যের ক্ষেত্রে একটা রূপান্তর চলছে। প্রথমত, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি শিঙাড়া, পেঁয়াজু, পুরির মতো খাবার খাওয়া সচেতন মানুষেরা ছেড়ে দিচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, অত্যাধুনিক যন্ত্রে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে তৈরি বিস্কুটের চাহিদা বাড়ছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে। সব মিলিয়ে বিস্কুটের বাজার বড় হচ্ছে। আমরা জরিপ করে দেখতে পাই, দেশে বিস্কুটের বড় বাজার আছে এবং এখানে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিস্কুটের বাজারে বিনিয়োগ করি।

প্রথম আলো:

স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন বিস্কুট কি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে?

এম এ খায়ের: রিদিশাসহ অন্যান্য করপোরেট প্রতিষ্ঠান প্রচলিত উৎপাদন পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে বিস্কুট উৎপাদন করছে। হাতের স্পর্শ ছাড়াই সম্পূর্ণ যান্ত্রিক উপায়ে বিস্কুট উৎপাদন করা হচ্ছে। কারখানার পরিবেশও অনেক উন্নত। ফলে স্বাস্থ্যসম্মত বিস্কুট উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।

প্রথম আলো:

বিস্কুটের বাজার বাড়ছে বলেছেন। বৃদ্ধির হার কেমন?

এম এ খায়ের: দেশে বিস্কুটের বাজারের আকার ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এফএমসিজির (ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস) বাজারের চেয়ে দ্রুত হারে বিস্কুটের বাজার বাড়ছে। এফএমসিজির বাজার এখন যেখানে বছরে ১০ থেকে ১২ শতাংশ হারে বাড়ছে, সেখানে বিস্কুটের বাজার বাড়ছে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে।

প্রথম আলো:

বিদেশের বাজারে বাংলাদেশি বিস্কুট কেমন প্রতিযোগিতা করছে?

এম এ খায়ের: দেশের প্রচুর বিস্কুট এখন রপ্তানি হয়। অন্তত ৭০টি দেশে বাংলাদেশের বিস্কুট যায়। আমরা রপ্তানির জন্য কাজ করছি।

প্রথম আলো:

আমদানি কি হয়?

এম এ খায়ের: বিস্কুটের আমদানি অনেক কমে গেছে। আমদানিনির্ভরতা নেই বললেই চলে। তবে উচ্চবিত্তের জন্য কিছু বিস্কুট আমদানি হয়।  

প্রথম আলো:

বিস্কুটের কাঁচামালের দাম বেড়েছে?

এম এ খায়ের: করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিস্কুট তৈরির প্রধান তিন উপাদানের (ময়দা, চিনি ও তেল) দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এখনো দাম বাড়তি। বিস্কুটশিল্পের জন্য এটি বড় সমস্যা। কিন্তু বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা আছে। এটা সুস্থ প্রতিযোগিতা, যা বাজারের জন্য ভালো। ক্রেতাদের ভালো মানের বিস্কুট দেওয়ার ক্ষেত্রেও এই প্রতিযোগিতা ভূমিকা রাখবে।

প্রথম আলো:

বিস্কুটে তো বৈচিত্র্যও আসছে?

এম এ খায়ের: হ্যাঁ। একসময় বিস্কুটশিল্প ছিল মিষ্টি-বিস্কুটকেন্দ্রিক। বিস্কুট মানেই মিষ্টি হতে হতো। কিন্তু এখন একশ্রেণির মানুষ চিনিবিহীন বা কম চিনিযুক্ত বিস্কুট কেনে। তাই সেই ধরনের বিস্কুট উৎপাদিত হচ্ছে। দেশে এখন ডাইজেস্টিভ (দ্রুত হজম হয়) বিস্কুটও উৎপাদন হচ্ছে। আরও নানা স্বাদের বিস্কুট তৈরি হয়। আমরাই ১৫ ধরনের বিস্কুট তৈরি করি।

প্রথম আলো:

বিস্কুটশিল্পের সম্ভাবনা কী দেখছেন?

এম এ খায়ের: বিস্কুটশিল্পের বাজার অনেক বড় হয়েছে, আরও বড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে বৈচিত্র্যও বাড়বে।