প্রথম আলো: দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে সভা করেছেন? জরুরি এ সভা করার উদ্দেশ্য কী ছিল?
মাহবুবুল আলম: এটি আনুষ্ঠানিক কোনো সভা ছিল না। কিছু ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদের পরামর্শ নিতে আমরা এই বৈঠকে বসেছিলাম। সেখানে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদেরা তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
প্রথম আলো: আমরা শুনলাম, বৈঠকে কোনো কোনো ব্যবসায়ী চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার পরামর্শ দিয়েছেন। আপনারা এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেবেন কি?
মাহবুবুল আলম: আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করা ব্যবসায়ীদের কাজ নয়। এ ধরনের কোনো প্রস্তাব বা দাবি কেউ জানায়ওনি। তাই যেটি আমাদের কাজ নয়, সেটি আমরা করতেও চাই না। আমরা অর্থনৈতিক অবস্থা ও ব্যবসা–বাণিজ্য নিয়ে চিন্তিত। ব্যবসা–বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এ রকম কোনো কর্মসূচি যাতে রাজনৈতিক দল বা রাজনীতিবিদেরা পালন না করেন, আমরা শুধু সেই অনুরোধ বা আহ্বান জানাতে পারি। আমরা সেই আহ্বানই রাজনীতিবিদদের প্রতি রাখতে চাই। অর্থনীতি ও ব্যবসা–বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানে দেশের ক্ষতি। রাজনীতিবিদেরা নিশ্চয় সেটি অনুধাবন করেন। তাই তাঁদের প্রতি আমাদের আহ্বান অর্থনীতির স্বার্থে, দেশের স্বার্থে তাঁরা যেন সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি পরিহার করেন।
প্রথম আলো: হরতাল–অবরোধ চলছে। তাতে নিশ্চয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা আপনাদের কাছে কী চাইছেন বা তাঁরা কী পরামর্শ দিচ্ছেন?
মাহবুবুল আলম: ব্যবসায়ীরা তাঁদের ক্ষতি ও অসুবিধার কথা আমাদের জানিয়েছেন। উৎপাদন ব্যাহত হওয়া, পণ্য সরবরাহের অসুবিধা এসব নিয়ে ব্যবসায়ীরা চিন্তিত। আমাদের এক হিসাবে বর্তমানে এক দিনের হরতাল বা অবরোধে ছয় হাজার কোটি টাকার মতো ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়। এ ক্ষতি শুধু ব্যবসায়ীদের নয়, দেশেরও ক্ষতি। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ক্ষতির ভার বহনের ক্ষমতা দেশের আছে কি? তাই আমরা যাঁরা ব্যবসা–বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত, আমাদের চাওয়া হচ্ছে কারখানা যেন ঠিকমতো চালাতে পারি, পণ্য সরবরাহে যেন কোনো অসুবিধা না হয়, রপ্তানি যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিক্ষত না হয়, কর্মসংস্থানে যাতে কোনো অসুবিধা না হয়। রাজনীতিবিদদের কাছে আমাদের এগুলোই চাওয়া। কিন্তু বর্তমানে এসব কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলন করে এই কথাগুলো আমরা তুলে ধরব। এ ছাড়া সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে আমরা খুব দ্রুত দেশের সব চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলব।
প্রথম আলো: অতীতে আমরা দেখেছি, ব্যবসার ক্ষতির মুখে পড়ে ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন, শান্তি সমাবেশ করেছিলেন। এ ধরনের কোনো কর্মসূচি পালনের কোনো চাপ ব্যবসায়ীদের দিক থেকে আপনার ওপর আছে?
মাহবুবুল আলম: আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, আন্দোলন করা, মিছিল–সমাবেশ করা ব্যবসায়ীদের কাজ নয়। রাস্তায় নামারও কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। আমরা বড়জোর আমাদের কার্যালয় থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশের আশায় সাদা পতাকা প্রদর্শন করতে পারি। তার আগে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সব শ্রেণির ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলোচনা করা হবে।