ত্রিমুখী করের চাপ থেকে মুক্তি চাই

সৈয়দ নাসির, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এক্সক্লুসিভ ক্যান লিমিটেড

দেশের অর্থনীতি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই এবার নির্বাচনী নয়, সংকট থেকে উত্তরণের বাজেট চাই, যেখানে শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহের দিকনির্দেশনা থাকবে। ইতিমধ্যে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। তারপরও গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটে কারখানায় উৎপাদন করা যাচ্ছে না।

ডলার-সংকটে আমরা কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছি না। ব্যাংকে একটি ঋণপত্র খুলতে গেলে ১৫-২০ দিন সময় লাগে। আশা করছি, বাজেটে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ঋণপত্র খোলার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আমাদের সুখবর দেবেন।

বাংলাদেশ একটি আমদানিনির্ভর দেশ। কিন্তু ডলারের দাম বেড়ে ১১০-১১১ টাকা হয়ে গেছে। এটি যদি নিয়ন্ত্রণে রাখা না যায়, তাহলে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাবে। তাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি সংকটে পড়বে। অন্যদিকে ব্যাংকঋণের সুদহার বর্তমানে এক অঙ্কে রয়েছে। আমরা শুনেছি, শিগগিরই সুদহার বাড়ানো হবে। সেটি হলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

আমরা যাঁরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য পণ্য তৈরি করি, তাঁরা ত্রিমুখী করের চাপে বিপদগ্রস্ত অবস্থায় আছি। আমাদের আমদানিতে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি), সরবরাহ পর্যায়ে ৭ শতাংশ উৎসে কর (টিডিএস) এবং ৩০ শতাংশ করপোরেট কর দিতে হয়। অগ্রিম আয়কর পরে সমন্বয় করা গেলেও টিডিএসকে ন্যূনতম কর হিসেবে কেটে রাখা হয়। এটি সমন্বয় হয় না। তাই আগামী বাজেটে আমাদের মতো ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের টিকিয়ে রাখতে এই ত্রিমুখী করের চাপ থেকে মুক্তি দিতে হবে।

মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া, সরকারের টাকা ছাপানো বৃদ্ধি ও পণ্যের সরবরাহ কমার কারণে মূল্যস্ফীতি অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে আগামী বাজেটে যেকোনো উপায়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সংকটকে আমলে নিয়ে বাজেট করলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে বলেই আমার বিশ্বাস।