শ্রমিকেরা অবহেলিত হবেন কেন

কল্পনা আক্তার

শ্রমিকেরা বেশ কয়েক মাস ধরে মালিকদের কাছ থেকে একটি যৌক্তিক মজুরি প্রস্তাবের অপেক্ষায় ছিলেন। তা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত শ্রমিকেরা ২৩ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি প্রস্তাব করেন।

কিন্তু বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বা মূল্যস্ফীতি দেখেও মালিকেরা যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা শ্রমিকদের ক্ষুব্ধ করেছে। এ কারণেই তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন।

মালিকেরা মজুরি বৃদ্ধির নতুন প্রস্তাব দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও শ্রমিকেরা আশ্বস্ত হতে পারছেন না। কারণ, শ্রমিকদের বিশ্বাসের জায়গাটা ভেঙে গেছে।

মজুরি নির্ধারণের সময় শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা এবারই নতুন নয়। ২০২৩ সালের শেষে মজুরি বাড়ানো হবে—এ কথা সবাই জানতেন। চলতি বছরের শেষে একটা রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা সবার মধ্যে ছিল।

তারপরও কেন শেষ সময়ের জন্য অপেক্ষা করা হলো। এপ্রিল মাসে মজুরি বোর্ড গঠিত হলেও ছয় মাসের মধ্যে তা মজুরি ঘোষণার আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে পারেনি।

পোশাক খাতকে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড বলা হয়। তাহলে এ শিল্পের শ্রমিকেরা অবহেলিত হবেন কেন। করোনার সময় থেকে শ্রমিকেরা খাবারের মেন্যু ছোট করে যাচ্ছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। বর্তমান বেতন দিয়ে মাসে ২০ দিন চলা কষ্ট হয়ে যায় তাঁদের জন্য। এরপর ধারদেনা করতে হয়। বাজারে তো শ্রমিক বলে ছাড় পাওয়া যায় না।

শ্রমিকেরা যদি দারিদ্র্যসীমার একটু ওপরে তাঁদের জীবন নির্বাহ করতে চান, তাহলে ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা মজুরি প্রয়োজন। এখন মালিকেরা কত মজুরি দিতে পারবেন, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে আলোচনা ন্যূনতম ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু হওয়া উচিত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অবিলম্বে নতুন মজুরির ঘোষণা দেওয়া প্রয়োজন।

  • কল্পনা আক্তার, সভাপতি, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন