অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অনিশ্চিত

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন। অর্থনীতি, বাজেট, নতুন অর্থবছর, করোনা সংকট, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত—এসব নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

প্রশ্ন :

করোনার কারণে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ চলছে। এ সময় ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দাভাব, অর্থনীতির গতিও কমেছে। কবে নাগাদ অর্থনীতি স্বাভাবিক হতে পারে?

জাহিদ হোসেন: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আবার অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার পুরোদমেই চলছিল। রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আমদানি বিশেষ করে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি আগের চেয়ে বেড়েছিল। কিন্তু গত এপ্রিল মাস থেকে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার যাত্রাকে অনিশ্চিত করে ফেলেছে। অর্থনীতি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। দ্বিতীয় ধাক্কায় অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া টিকবে নাকি আবার খাদের মধ্যে পড়বে, তা নির্ভর করবে আমরা করোনা সংকটকে কতটা বৈজ্ঞানিকভাবে মোকাবিলা করছি।

যত দিন করোনার টিকা পুরোপুরি দেওয়া না হবে, তত দিন অর্থনীতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা কম। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে প্রাণ নেই। সরকার নিজেই বলছে, ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে আরও এক বছর লাগবে। এর মানে, এক বছরের আগে অর্থনীতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা কম। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর অর্থনীতি চাঙা হওয়ার সঙ্গেও সম্পৃক্ত। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বেশ চাঙা এবং ইউরোপের অর্থনীতি সচল হতে শুরু করেছে। তবে বিশ্ব এখন দুই ভাবে বিভক্ত। এক পাশে আছে টিকা কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন এমন দেশগুলো। অন্য পাশে টিকা দেওয়া হয়নি বা কম দেওয়া হয়েছে এমন দেশগুলো। বাংলাদেশ এখনো দ্বিতীয় কাতারের দেশ। স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে টিকা দেওয়া হয়েছে এমন দেশগুলো নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়তে পারে। তাই বাংলাদেশের অর্থনীতি আবার আগের জায়গায় ফিরবে, তা বলা কঠিন।

প্রশ্ন :

করোনায় বহু লোক গরিব হয়েছে, কিন্তু সরকারিভাবে নতুন গরিবদের কোনো স্বীকৃতি নেই। সরকারের অগ্রাধিকার ঠিক আছে?

জাহিদ হোসেন: গত এক বছরে এ নিয়ে অনেক জরিপ হয়েছে। সব কটি জরিপেই দেখা গেছে, গরিব মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। আড়াই কোটি, দুই কোটি কিংবা দেড় কোটি হোক—নতুন গরিবের সংখ্যা যে বেড়েছে, তা চারপাশে তাকালেই বুঝতে পারি। বহু লোক বেকার হয়েছে, অনেকের আয় কমেছে। কিন্তু এই নতুন গরিব মানুষেরা সরকারের স্বীকৃতি পায়নি। সমস্যার স্বীকৃতি না থাকলে সমাধানে যাব কীভাবে? এর প্রতিফলন দেখা গেছে সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা ও নগদ সহায়তা কর্মসূচিতে। নতুন বাজেটেও নতুন গরিবের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ ছিল না।

  • বাজেট সাহিত্যের সঙ্গে বরাদ্দের অগ্রাধিকার মিলছে না।

  • স্বাস্থ্য খাত যতটা খারাপ মনে করেছিলাম, পরিস্থিতি এর চেয়েও বেশি খারাপ।

  • শিক্ষার সংকট উত্তরণের কৌশল নিয়ে জাতীয় আলোচনা দরকার।

  • বাজেটে নতুন গরিবেরা সরকারের স্বীকৃতি পায়নি।

  • অর্থনীতি যত দিন অস্বাভাবিক থাকবে, তত দিন থাকবে কর্মসংস্থানে অনিশ্চয়তা।

প্রশ্ন :

প্রণোদনার টাকা বড়রা পেয়েছেন, ছোটরা তেমন একটা পাননি। আবার প্রকৃত গরিব মানুষের কাছেও প্রণোদনার নগদ টাকাও খুব বেশি যায়নি। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

জাহিদ হোসেন: করোনা সংকট মোকাবিলায় সরকারের প্রণোদনার টাকা বড় উদ্যোক্তারা পেয়েছেন। কিন্তু যেসব ছোট উদ্যোক্তার করোনার আঘাতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা আছে, তাঁদের এই টাকা বেশি প্রয়োজন ছিল। এই তালিকায় কুটিরশিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আছেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের প্রায় ৮০-৮৫ শতাংশ ছাড় হয়েছে। এই অর্থের প্রায় সিংহভাগই পেয়েছে মাঝারি শিল্প খাত। এর কারণ, করোনায় বিলীন হওয়ার শঙ্কা যেসব উদ্যোক্তার আছে, তাঁদের কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) নেই, ট্রেড লাইসেন্স নেই। তাঁরা অনানুষ্ঠানিক খাতের উদ্যোক্তা। ব্যাংক তাঁদের ঋণ দিয়ে ঝুঁকি নিতে চায়নি।

যেহেতু ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতির উন্নতি খুব বেশি হচ্ছে না। তাই অস্তিত্বের সংকটে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানকে এখন আর ঋণ নিয়ে ফাঁদে পড়তে চায় না ব্যাংক। ফলে সরকার বিকল্প চিন্তা করতে পারে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো সম্পৃক্ত করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিপদগ্রস্ত ছোট প্রতিষ্ঠান এককালীন চলতি মূলধন অনুদান হিসেবে দেওয়া যেতে পারে।

প্রশ্ন :

করোনার কারণে কর্মসংস্থানে বড় প্রভাব পড়েছে। কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে?

জাহিদ হোসেন: অর্থনীতি যত দিন অস্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে, তত দিন কর্মসংস্থানের অনিশ্চয়তা থাকবে। অনেকেই পেশা পরিবর্তন করেছেন। যেমন, শিক্ষক এখন সবজি বিক্রি করে জীবন ধারণ করছেন। বেকার হয়ে অনেকে শহরে–গ্রামে চলে গেছে। এক জরিপে দেখা গেছে, ১০ শতাংশ মানুষ গ্রামে ফিরে গেছে। গত এক বছর কৃষি খাত প্রত্যাশার চেয়ে ভালো করেছে। এখন যারা গ্রামে গেছে, তারা কৃষি খাতে কর্মসংস্থানের চাপ সৃষ্টি করবে। আবার এখন গ্রাম এলাকায় করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। তাই কৃষি খাতের কর্মসংস্থান টিকিয়ে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ। যেকোনো উপায়ে গ্রামের অর্থনীতিকে চাঙা রাখতে হবে।

করোনা নিয়ন্ত্রণে কিছুদিন পরপর সরকার নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করে। ফলে শহরের পরিবহনশ্রমিক, হকার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েন। তবে করোনার সময়ে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে। ই-কমার্সের প্ল্যাটফর্ম বড় হয়েছে। ডেলিভারিম্যান হিসেবে হাজার হাজার তরুণ কাজ করছেন। কিন্তু প্রতারক প্রতিষ্ঠানও আছে। এমন প্রতিষ্ঠানকে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের কারণে ই-কমার্সের প্রতি গ্রাহকের আস্থা নষ্ট হচ্ছে। তাই ই-কমার্সের মতো খাতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও নষ্ট হতে পারে।

প্রশ্ন :

করোনার সময়ে বিভিন্ন কেনাকাটা প্রকল্পে বড় ধরনের দুর্নীতির খবর এসেছে। সরকারি কেনাকাটায় সুশাসন নিশ্চিত করতে কি করা দরকার?

জাহিদ হোসেন: সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতি নতুন কিছু নয়। তবে করোনার মতো স্বাস্থ্য দুর্যোগে সবাই আশা করেছিল, সরঞ্জাম সময়মতো সঠিক দামে কেনা হবে। কিন্তু তা দেখিনি। বিশ্বব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পেও বাজারমূল্যের চেয়ে ২-৩ গুণ দামে সরঞ্জাম কেনা হয়েছে। এমন দুর্যোগেও প্রকল্প কর্মকর্তাদের আচরণ বদলায়নি। গত কয়েক বছরে সরকারি কেনাকাটায় কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। যেমন, দরপত্র নিয়ে রংবাজি বন্ধ হয়েছে। কিন্তু বড় বড় ঠিকাদার অনৈতিকভাবে অতিরিক্ত দামে সরবরাহের ব্যবস্থা করে নেন। ১০ টাকার জিনিস ১০০ টাকায় কেনা হয়।

প্রশ্ন :

এবার নতুন অর্থবছর ও বাজেটের বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে যাই। করোনার প্রেক্ষাপটে এবারের বাজেট কেমন ছিল?

জাহিদ হোসেন: ইদানীং বাজেট নিয়ে একটি শব্দ বেশ বলা হচ্ছে। তা হলো—বাজেট সাহিত্য। অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় কী ধরনের নীতি ও প্রতিশ্রুতি করছেন, তা হলো বাজেট সাহিত্য। এর পাশাপাশি কোন খাতে কত বরাদ্দ দেওয়া হলো তা–ও বাজেটের আরেকটি দিক। জীবন-জীবিকার প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামী পথে বাংলাদেশ—এটি বাজেটের শিরোনাম। বাজেট সাহিত্য হিসেবে একদম ঠিক আছে। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় অগ্রাধিকারগুলো সঠিকভাবেই বলেছেন। বাজেটজুড়ে কোভিড সংকট, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষি খাতের অগ্রাধিকারের কথা বলা হয়েছে।

কিন্তু বাজেট সাহিত্যের সঙ্গে বরাদ্দের অগ্রাধিকারগুলো মেলেনি। এবারের বাজেটে খাতওয়ারি বরাদ্দ গতানুগতিক কাঠামোর মধ্যেই ছিল। বেতন–ভাতা, সুদ, পরিবহন, অবকাঠামো—এসব খাত বরাদ্দের দিক থেকে শীর্ষ তালিকায় আছে। কিন্তু করোনার সময়ে যেসব খাত অগ্রাধিকার পাওয়া কথা ছিল যেমন স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, কৃষি, শিক্ষা—এসব বরাদ্দের দিক থেকে প্রথম চার-পাঁচ নম্বরে নেই। এই করোনার সময়ে স্বাস্থ্য খাতে বাড়তি বরাদ্দ দরকার ছিল। শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তায় আগের চেয়ে বেশি খরচ করার প্রয়োজন ছিল।

প্রশ্ন :

বলা হয়েছে, বাজেট থেকে ব্যবসায়ীরা বেশি পেলেন, সাধারণ করদাতারা কম পেলেন। আপনি কী মনে করেন?

জাহিদ হোসেন: এবারের বাজেট থেকে বড় ব্যবসায়ীরা বেশি কর ছাড় পেয়েছেন। যেমন, করপোরেট কর কমেছে, ভ্যাটে নানামুখী ছাড় দেওয়া হয়েছে। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ নামে দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করা হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য পণ্য উৎপাদন করলে কর ছাড় মিলবে। এটা হলো—মেড ফর বাংলাদেশ। আর এ ধরনের বিনিয়োগ শুধু আনুষ্ঠানিক খাতের বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোই করতে পারবে। অনানুষ্ঠানিক খাতের ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য তেমন কোনো কর ছাড় নেই। ভোক্তাদের ভ্যাটে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আদৌ ভোক্তারা কর ছাড় পাচ্ছে কি?

প্রশ্ন :

কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা হলো। করোনার সময়ে বিদেশে টাকা পাচারের সুযোগ কমে যাওয়ায় কি বিশেষ শ্রেণিকে সুবিধা দেওয়া হলো?

জাহিদ হোসেন: কালোটাকা সাদা করার সুযোগের ক্ষেত্রে গতবারের মতো এবার উদার হননি অর্থমন্ত্রী। সর্বোচ্চ করহার এবং জরিমানা দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রেখেছেন তিনি। এটি মন্দের ভালো। এবার শিল্প খাতে ১০ শতাংশ কর দিয়ে ঢালাও বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শিল্প খাত কোনটি, এর কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। শিল্প খাত নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিসিএস) ও অন্য সংস্থার সংজ্ঞার মধ্যে তফাত আছে। তাই কেউ কালোটাকা সাদা করতে গেলে শিল্প খাত কোনটি, তা নির্ধারণ করবেন কর কর্মকর্তারা। ফলে কালোটাকার মালিক ও কর কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরনের ‘দর-কষাকষি’র সুযোগ তৈরি হলো। বর্তমানে একটি ছোটখাটো উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান করতে এক কোটি টাকা লাগে। এর মানে, কোটিপতি কালোটাকার মালিকেরাই সুযোগ পেলেন। যাঁরা বিদেশে টাকা পাচার করতে পারছেন না, তাঁদের জন্য নতুন এই সুযোগ উন্মুক্ত করা হলো।

কালোটাকার সুযোগে খুব একটা রাজস্ব আদায় হয় না। তবু বিশেষ শ্রেণিগোষ্ঠীর জন্য সব সরকারই এই সুযোগ দিয়েছে, যা সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করেছে।

প্রশ্ন :

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?

জাহিদ হোসেন: স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কম দেওয়ার কারণ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, এ খাতটি বরাদ্দের টাকা খরচ করতে পারে না, তাই বরাদ্দ দেওয়া হয় না। কিন্তু স্বাস্থ্য খাত ছাড়া অন্য খাতগুলোও উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা খরচ করতে পারে না। দুর্যোগের সময় খরচ করতে না পারলে আর কবে খরচ করার সক্ষমতা তৈরি হবে স্বাস্থ্য খাতের? করোনায় স্বাস্থ্য খাতের প্রকৃত চিত্র পাওয়া গেল। যতটা খারাপ মনে করেছিলাম, পরিস্থিতি এর চেয়েও বেশি খারাপ। স্বাস্থ্য খাতের এই দুর্যোগ পুরো অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিচ্ছে। তাই স্বাস্থ্য খাতের জন্য একটি পূর্ণ পরিকল্পনা করে বরাদ্দ দিতে হবে।

করোনার মধ্যে শিক্ষা খাতের বিপর্যয় নিয়ে আমরা তেমন ভাবছি না। অথচ শিক্ষা খাত নিয়ে আমরা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় পড়তে যাচ্ছি। দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় আমরা কয়েক বছর পর একটি স্বল্পশিক্ষিত তরুণ সমাজ পাব। অনেক শিশু স্কুল থেকে ঝরে পড়ে কাজে নেমেছে। যে ছোট শিক্ষার্থী গুনতে শিখেছে, সে তা ভুলে গেছে। যে অক্ষর চিনত, সে এখন আর তা চিনবে না। গ্রামের শিক্ষার্থী ডিজিটাল ক্লাসরুমে যেতে পারছে না। শিক্ষা খাতের বর্তমান সংকট উত্তরণের কৌশল নিয়ে একটি জাতীয় আলোচনা প্রয়োজন।

প্রশ্ন :

সামগ্রিকভাবে করোনা প্রেক্ষাপটে অর্থনীতির ব্যবস্থাপনায় সরকারকে কত নম্বর দেবেন?

জাহিদ হোসেন: নম্বর দেওয়ার বিষয়টি তিন ভাগে ভাগ করব। প্রথমত, দুর্যোগ মোকাবিলায় দশে ছয় দেব। দ্বিতীয়ত, নীতিগত সহায়তায় দশে চার নম্বর দেব। তৃতীয়ত, সমস্যা সম্পর্কে সংবেদনশীলতায় দশে তিন নম্বর পাবে।