করোনায় জনশুমারি পিছিয়ে অক্টোবরে

দেশে বর্তমান জনসংখ্যা কত, তা জানতে ২ থেকে ৮ জানুয়ারি দেশজুড়ে জনশুমারি ও গৃহগণনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে তা করতে পারেনি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সরকারি সংস্থাটি আগামী ২৫ থেকে ৩১ অক্টোবর দেশজুড়ে এই কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবন মিলনায়তনে সংস্থাটির আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শুমারির নতুন সময়সূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘যেকোনো পরিকল্পনা প্রণয়নের আগে জনসংখ্যার হালনাগাদ তথ্য জানা জরুরি। করোনার কারণে আমাদের শুমারি কার্যক্রম ১০ মাস পেছাতে হয়েছে।’

১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন করা হয়েছিল। করোনার প্রভাবে এত দিন শুমারি শুরুর আগের কাজগুলো স্থগিত ছিল, যার একটি গতকাল উদ্বোধন করা হয়।

বিবিএসের মহাপরিচালক তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের পরিচালক কবির উদ্দিন আহাম্মদ প্রমুখ।
কবির উদ্দিন আহাম্মদ জানান, সারা দেশের ১৪৪ জন জোনাল কর্মকর্তা জোনাল অপারেশন প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছেন।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, জনশুমারি ও গৃহগণনার কাজটি চারটি পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হবে। সেগুলো হলো জোনাল অপারেশন পরিচালনা, শুমারির তথ্য সংগ্রহ, পিইসি জরিপ পরিচালনা ও আর্থসামাজিক এবং জনতাত্ত্বিক জরিপ পরিচালনা। এর মধ্যে জোনাল অপারেশনের প্রথম পর্যায়ে মাঠ থেকে তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম ২৩ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ১০ বছর পরপর জনশুমারি হয়ে থাকে। তাই নির্ভুল তথ্য বের করে আনতে হলে শুমারিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এখানে যে টাকা খরচ হবে, তা যেন সাবধানে খরচ করা হয়। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে দেন তিনি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘না খেয়ে টাকা বাঁচাবেন না। খেতেও হবে, আবার হিসাবও করতে হবে। হিসাব করে কেনাকাটা করবেন। প্রতিটি টাকা খরচ করতে হবে হিসাব করে। কেননা, যাঁরা আমাদের টাকা দিচ্ছেন, তাঁদের গিয়ে দেখে আসেন, তাঁরা আমাদের মতো সুন্দর বসার জায়গা পাচ্ছেন না। তাঁরা হয়তো মাটিতে বসে কাজ করছেন।’

সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, ‘২০১১ সালের শুমারিতে আমার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তবে সামনের শুমারিতে কেউ যাতে বাদ না যায়, সেই বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা হবে।’ তিনি বলেন, এবারের শুমারিতে আইসিআর প্রশ্নপত্রের পাশাপাশি মাল্টি মোড বা ট্যাব, পিক অ্যান্ড ড্রপ টেলিফোন সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। এবারই প্রথমবারের মতো বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশি বা প্রবাসী এবং দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে।