নারীদের ঘরে থেকে কাজের আগ্রহ বাড়ছে

কোভিডের কারণে ঘরে থেকে কাজের সংস্কৃতি নতুন মাত্রা পেয়েছে। বাস্তব জীবনের নানা জটিলতা এড়াতে অনেকেই ঘরে থেকে কাজের সুযোগ চান। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নারীদের ঘরে থেকে কাজ করার বিস্ময়কর কারণ খুঁজে পেয়েছেন বিশ্লেষকেরা। বলা হয়েছে, দেশে পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতির কারণে বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে ঘরে থেকে কাজের আগ্রহ বাড়ছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘ওয়ার্কিং ফ্রম হোম: ফ্রম ইনভিজিবিলিটি টু ডিসেন্ট ওয়ার্ক’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নারীদের ঘরে থেকে কাজ করার আগ্রহের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট বিবৃত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নারীদের এই প্রবণতার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে এভাবে: বাংলাদেশের সমাজে পরিবারগুলোর আর্থিক অবস্থার উন্নতির কারণে নারীদের পর্দানশিন থাকার রীতি ফিরে এসেছে। এই সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে ধর্ম স্রেফ একটিমাত্র কারণ। যে সময় ও পরিবেশে নারী ও পুরুষ জন্মগ্রহণ করছে, তাদের শিক্ষা–দীক্ষা, বসবাসের স্থান, এমনকি রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা; এগুলোও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এমনও দেখা গেছে, অনেক কারখানায় বিবাহিত নারীদের কাজে নেওয়া হয় না। আবার সাংস্কৃতিক মানদণ্ডের বাইরে গেলেও নানা রকম হেনস্তার শিকার হতে হয় নারীদের, ঘরে থেকে কাজ করার আগ্রহ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সেটিও আরেক কারণ।

এদিকে সামগ্রিকভাবে সারা বিশ্বেই যাঁরা ঘরে থেকে কাজ করেন, তাঁদের আরও সুরক্ষা দরকার বলে মনে করে আইএলও। সরাসরি কর্মস্থলে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের চেয়ে এই নারীরা কম আয় করেন বা তাঁদের সুরক্ষাও কম। এমনকি উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কাজের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে যাঁরা ঘরে থেকে কাজ করেন, তাঁদের আয় ১৩ শতাংশ কম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তা ২২ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকায় ২৫ শতাংশ এবং আর্জেন্টিনা, ভারত ও মেক্সিকোর ক্ষেত্রে তা ৫০ শতাংশ।

পাশাপাশি ঘরে থেকে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের প্রশিক্ষণ ও পেশাগত উন্নয়নের সুযোগও কম। ট্রেড ইউনিয়ন বা সিবিএ গঠনের দিক থেকেও তাঁরা পিছিয়ে আছেন।
কোভিডের আগে বিশ্বে ২৬ কোটি মানুষ ঘরে থেকে কাজ করতেন। তাঁদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী।