২০২৬ সালে সকালে উঠে যেন মনে না হয়, অনেক কিছুই করা হয়নি

অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ সংখ্যার বিচারে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ হবে। একই সঙ্গে বাস্তব জীবনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ উত্তরণও লাগবে। যেমন এলডিসি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য যাতে প্রতিযোগিতাসক্ষম হতে পারে। ওষুধ খাতের চ্যালেঞ্জগুলো দূর করা দরকার।

‘২০২৬ সালে সকালে উঠে যেন এমন মনে না হয়, অনেক কিছুই করা হয়নি। তাহলে বিপাকে পড়তে হবে। বাংলাদেশের রপ্তানি, ওষুধ খাতসহ বিভিন্ন খাত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। স্থানীয় বাজারে শুধু ইনুসলিনের দাম আট গুণ বাড়তে পারে’ এভাবেই স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বের হওয়ার পর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতির কথা বললেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।

আজ বৃহস্পতিবার ‘এলডিসি থেকে উত্তরণ: গতিশীল উত্তরণের কৌশল’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এই কথা বলেন।

একই অনুষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালে বাংলাদেশ সংখ্যার বিচারে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ হবে। একই সঙ্গে বাস্তব জীবনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ উত্তরণও লাগবে। যেমন এলডিসি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য যাতে প্রতিযোগিতাসক্ষম হতে পারে। ওষুধ খাতের চ্যালেঞ্জগুলো দূর করা দরকার। তাই এখন থেকে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে হবে।’

প্রস্তুতির অভাব তুলে ধরে একটি উদাহরণ দেন রেহমান সোবহান। তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালে ওষুধশিল্পের এপিআই পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু এখনো তা শেষ হয়নি। অথচ এলডিসি থেকে উত্তরণ হলে স্থানীয় বাজারেও ওষুধের দাম বাড়তে পারে।

একই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তাঁর মতে, এলডিসি থেকে বের হলে একদিকে চ্যালেঞ্জ আছে, অন্যদিকে সুযোগ বাড়বে। তিনি আরও বলেন, এলডিসি উত্তরণকালীন সময়ের মধ্যে পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্পগুলো শেষ হয়ে যাবে, যা ব্যবসায় প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে। তাই এলডিসি উত্তরণের ফলে যে ক্ষতি হবে, তা কাটানো সহজ হবে।
দেশের প্রধান অন্যতম রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হকের মত হলো প্রতিযোগিতা সক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে এখনই কৌশল ঠিক করতে হবে।

এলডিসি থেকে বের হলে অর্থায়নের কী ধরনের সমস্যা হতে পারে, তা তুলে ধরেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয়। তিনি বলেন, জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থ মিলবে না। এ ছাড়া অন্য বিদেশি ঋণ পাওয়ার খরচ বাড়বে। তিনি পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগের অর্থ আনাকে উৎসাহিত করার পরামর্শ দেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সাবেক সভাপতি মতিন চৌধুরী, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর টমো পৌতিয়ানেন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে জাতিসংঘের কমিটি ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশের নাম সুপারিশ করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হয়ে যাবে।