৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত মন্দা কাটানো গেলেও বৈষম্য বাড়বে

গত ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত মন্দাভাব কাটিয়ে ওঠার পথে রয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। তবে শঙ্কা হলো কোভিড-১৯ টিকা সরবরাহের ধীর অগ্রগতির কারণে দরিদ্র দেশগুলো ধনী দেশগুলোর চেয়ে আরও পিছিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

অর্ধ বছরের আউটলুক প্রতিবেদনে ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থাটি জানায়, এ বছরে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, যা জানুয়ারিতে করা পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি। জানুয়ারিতে এ পূর্বাভাস ছিল ৪ দশমিক ১ শতাংশ।

সংস্থাটি বলছে, গত ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত মন্দাপরবর্তী পুনরুদ্ধার হবে। কারণ, প্রধান অর্থনীতিগুলো ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে কোভিড-১৯ টিকার দ্রুত অগ্রগতি বিশ্বকে আপেক্ষিক স্বাভাবিকতার দিকে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দীর্ঘ সময় এই ভাইরাস ও ভাইরাসের প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করে যেতে হবে, যা ধনী দরিদ্র রাষ্ট্রের মধ্যে ব্যবধান বাড়াবে।

বিশ্বব্যাংক মনে করছে, করোনা ছাড়া ২০২২ সালে বিশ্ব অর্থনীতি যে অবস্থায় যেত, করোনার কারণে এখন তার চেয়ে ২ শতাংশ পিছিয়ে থাকবে। অসম পুনরুদ্ধারের বিষয়ে সতর্ক করে বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০২২ সালের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ ধনী দেশ তাদের প্রাক্‌-মহামারি স্তরের জিডিপির পুনরুদ্ধার করবে। অন্যদিকে, মাত্র এক-তৃতীয়াংশ দরিদ্র দেশের পক্ষে তা সম্ভব হবে।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেন, যদিও বিশ্বব্যাপী পুনরুদ্ধারের ভালো লক্ষণ রয়েছে, তবে মহামারিটি বিশ্বব্যাপী উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষের ওপর দারিদ্র্য ও বৈষম্য সৃষ্টি করে চলেছে। টিকা বিতরণ এবং ঋণসহায়তা ত্বরান্বিত করার জন্য বিশ্বব্যাপী সমন্বিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য, বিশেষত নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য। স্বাস্থ্য সংকট হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নীতিনির্ধারকদের মহামারির স্থায়ী প্রভাব মোকাবিলা করতে হবে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করার জন্য সবুজ, স্থিতিস্থাপক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট প্রতিবেদন তৈরি করে বিশ্বব্যাংক বলছে, কোভিডের কারণে দারিদ্র্যের ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি বিশ্ব দেখেছিল, তা উল্টে গেছে। কোভিড দরিদ্র দেশগুলোয় অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলেছে এবং অন্য দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জগুলো আরও খারাপ করেছে। বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছে, এ বছরের শেষ নাগাদ স্বল্প আয়ের দেশগুলোর প্রায় ১০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে ফিরে আসবে।

বিশ্বব্যাংক মনে করছে, এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। চীনের প্রবৃদ্ধি হবে সাড়ে ৮ শতাংশ।