কেনাকাটায় নগদ টাকার ব্যবহার কমে আসছে

ক্রেডিট কার্ড

ঈদের কেনাকাটা করতে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে গত মঙ্গলবার রাজধানীর একটি বিপণিবিতানের একটি ব্র্যান্ডের বিক্রয়কেন্দ্রে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী নেহাল আবেদিন। কেনাকাটা শেষে বিল পরিশোধ করলেন কার্ডে। নেহাল আবেদিন বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে আমি কার্ডেই লেনদেন করছি। এতে নগদ টাকা বহনের ঝামেলা কম। তা ছাড়া যেকোনো উৎসবে কার্ডে লেনদেনে ব্যাংকগুলো নানা মূল্যছাড়ও দেয়। তাতে কেনাকাটা কিছুটা হলেও সাশ্রয়ী হয়।’

নেহাল আবেদিনের মতো অনেকেই এখন ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডে কেনাকাটায় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ফলে কেনাকাটায় কার্ডের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। আবার কয়েক বছর ধরে কেনাকাটায় মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) ব্যবহারও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে কেনাকাটায় ডিজিটাল লেনদেন বাড়লেও জেলা শহরগুলো এখনো এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে।

ঈদ ঘনিয়ে আসছে। তাই নগরীর বিপণিবিতানগুলোতে পোশাক কিনতে ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। ঈদ যত কাছে আসবে, মানুষের ভিড়ও তত বাড়বে। অন্যবারের মতো এবারও পোশাক, জুতাসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী বিক্রেতা ব্র্যান্ডে ডিজিটাল লেনদেনে মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাকের অফার দিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কার্ডধারী বা এমএফএস গ্রাহকেরা বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন।

দেশীয় পোশাকের ব্র্যান্ড রঙ বাংলাদেশের ঢাকাসহ অন্য শহরে ২৩টি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। তাদের যত টাকার পোশাক বিক্রি হয়, তার ৬০ শতাংশের বেশি হয় ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং এমএফএসের মাধ্যমে। বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতিষ্ঠানটি কর্ণধার সৌমিক দাশ প্রথম আলোকে বলেন, কেনাকাটায় ডিজিটাল লেনদেন বাড়ছে। এতে বড় সুবিধা হচ্ছে, উৎসবের সময় নগদ টাকা ব্যবস্থাপনায় সময় ও ঝুঁকি দুটোই কমেছে।

রঙ বাংলাদেশের মতো একই তথ্য দিল সারা লাইফস্টাইল। স্নোটেক্স গ্রুপের সহযোগী এই ব্র্যান্ডের ঢাকাসহ অন্য শহরে আটটি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। গত বছর সারা লাইফস্টাইল যত টাকার পোশাক বিক্রি করেছে, তার মধ্যে ৫১ শতাংশই হয়েছে ডিজিটাল লেনদেনে।

জানতে চাইলে সারা লাইফস্টাইলের হেড অব অপারেশন মতিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, উৎসবের সময় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ধরনের অফার দেওয়ার কারণে ডিজিটাল লেনদেনে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে।

কেনাকাটায় কার্ডের ব্যবহার জনপ্রিয় হওয়া নিয়ে জানতে চাইলে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) হেড অব রিটেইল ব্যাংকিং তৌফিক হাসান প্রথম আলোকে বলেন, করোনার আগে মাসে ইউসিবি কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটার পরিমাণ ছিল ৭০-৮০ কোটি টাকা। বর্তমানে সেটি ১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি।

অন্যদিকে ব্র্যাক ব্যাংকের রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান মাহীয়ুল ইসলাম বলেন, রোজার প্রথম থেকেই এবার ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন বেশ ভালো।’ এবার ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে রেকর্ড লেনদেন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।