ডলারের দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত

মার্কিন ডলার
ছবি: রয়টার্স

প্রবাসী আয়ে ডলার কেনার দাম যখন ১২৪ টাকায় উঠেছে, তখন ব্যাংকাররা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডলারের দাম আর বাড়ানো যাবে না। প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কিনতে হবে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ৫০ পয়সা দামে। আর আমদানি দায় মেটাতে ডলারের দাম নেওয়া যাবে আগের মতোই ১১১ টাকা। তবে প্রবাসী আয়ে সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি ব্যাংকও একই পরিমাণ প্রণোদনা দিতে পারবে। ফলে প্রবাসী আয় পাঠালে ডলারপ্রতি সর্বোচ্চ ১১৬ টাকা পাবেন স্বজনেরা।

বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) আজ বুধবারের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সন্ধ্যায় অনলাইন মাধ্যমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ডলারের জোগান ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে সময়ে সময়ে এই সংগঠন দুটি ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করে আসছে। এই দুটি সংগঠন মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংকসংশ্লিষ্ট। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে তারা সময়ে সময়ে ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করছে। আজকের সভায় বাফেদার চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম এবং এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেনসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা যায়, সভায় একজন এমডি জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক এই মুহূর্তে আর ডলারের দাম বাড়তে দিতে চায় না। তাই কেউ বেশি দামে ডলার কেনা ও বিক্রি করতে পারবে না। নিয়ম না মেনে কেউ ডলার কেনাবেচা করলে পড়তে হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাস্তির মুখে।

এর আগে গতকাল সকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নর কয়েকটি ব্যাংকের এমডিকে ফোন জানান, বেশি দামে ডলার কিনলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে।

এদিকে সংকটের মধ্যে এক লাফে ডলারের দাম ১২-১৩ টাকা বেড়ে গেছে। ডলারের এই মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয়েছে প্রবাসী আয় কেনার ক্ষেত্রে। ফলে আমদানি খরচ মেটাতেও ডলারের বাড়তি দাম গুনতে হচ্ছে। বিদেশের রেমিট্যান্স হাউস ও অর্থ স্থানান্তরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি ডলারের জন্য এখন ১২৩-১২৪ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকছে। আর দেশের ব্যাংকগুলো তা প্রতিযোগিতা করে কিনছেও। ফলে চলতি মাসের প্রথম চার কার্যদিবসে প্রবাসী আয়ে প্রায় ৩৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

যদিও ব্যাংকগুলোর ঘোষণা অনুযায়ী, আমদানি দায় পরিশোধে ডলারের দাম এখনো ১১১ টাকা। আর প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনার ক্ষেত্রে ডলারের ঘোষিত দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। ফলে ব্যাংকগুলোকে এখন ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে ডলার কিনতে ও বিক্রি করতে হচ্ছে। বেশির ভাগ ব্যাংক ডলার কেনাবেচায় নথিপত্রে এক দাম ও বাকিটা অন্যভাবে দেখাচ্ছে। এতে ডলারের বাজারে নতুন করে সংকট দেখা দিয়েছে।